ক্রাইসবার্তা ডেস্করির্পোটঃ
সর্বশেষ ৫ বছরে ভারত বিদেশের মাটিতে জিতেছে ১০ টেস্টে। এর মধ্যে ৫টি জয় এসেছে শ্রীলঙ্কার মাটিতে। বাকি ৫ জয়ের দুটি ইংল্যান্ডে, একটি দক্ষিণ আফ্রিকায় এবং দুটি ওয়েস্ট ইন্ডিজে। দেশের বাইরে গত ৫ বছরে ভারত ৯টি টেস্ট সিরিজ খেলে ৬টিতে হেরেছে, জিতেছে ৩টিতে। তিন সিরিজ জয় এসেছিল শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
ঘরে বাঘ, বাইরে বিড়াল, এই তত্ত্ব ভুল প্রমাণ করতে চলেছিল ভারত। কিন্তু গত ৫ বছরে এশিয়ার চেনা কন্ডিশনের বাইরে মাত্র ৫টি টেস্ট জয়; অতি সম্প্রতি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরে যাওয়া সেই পুরোনো প্রশ্নটাই হাজির করে দিল। ভারত কি আবার দেশের বাইরে বিড়াল হয়ে উঠছে?
সর্বশেষ ৫ বছরে ভারত বিদেশের মাটিতে জিতেছে ১০ টেস্টে। এর মধ্যে ৫টি জয় এসেছে শ্রীলঙ্কার মাটিতে। বাকি ৫ জয়ের দুটি ইংল্যান্ডে, একটি দক্ষিণ আফ্রিকায়, দুটি ওয়েস্ট ইন্ডিজে। এশিয়ার বাইরে ভারতকে সবচেয়ে বড় পরীক্ষা দিতে হয় চার জায়গায়। এর মধ্যে ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে চার টেস্টের সিরিজে ভারত হেরে এসেছে ২-০ ব্যবধানে। ২০১৪ সালে ইংল্যান্ডে ৫ টেস্টের সিরিজ হেরেছে ৩-১ ব্যবধানে। এবার হারল ৪-১-এ।
২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ২ টেস্টের সিরিজে ভারত হেরেছিল ২-১-এ। এ বছর তিন টেস্টের সিরিজে হেরেছে ২-১ ব্যবধানে। ২০১৪ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে ২ টেস্টের সিরিজও ভারত হেরেছিল ১-০তে।
এশিয়ার বাইরে এই সময়ে ভারতের একমাত্র সাফল্য ২০১৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে ২-০তে ৪ টেস্টের সিরিজ জিতে আসা। বিদেশে ভারতের বাকি দুটি সিরিজ জয় ভারতীয় উপমহাদেশেই। ২০১৫ সালে শ্রীলঙ্কাকে তাদেরই মাটিতে ৩-০তে হোয়াইটওয়াশ করেছিল ভারত। দুই বছর পর জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০১৫ সালের একমাত্র টেস্টটা ড্র হয়েছিল, তাতে অবশ্য ছিল বৃষ্টির ভূমিকা।
দেশের বাইরে গত ৫ বছরে ভারত ৯টি টেস্ট সিরিজ খেলে ৬টিতে হেরেছে, জিতেছে ৩টিতে। তিন সিরিজ জয় এসেছিল শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ঐতিহাসিকভাবেই ভারত দেশের বাইরে দুর্বল। এই উপমহাদেশের বাইরে ২০৪টি টেস্ট খেলে ভারত জিতেছে মাত্র ৩০টিতে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই সিরিজটা ৪-১-এ হেরে গেলেও অধিনায়ক বিরাট কোহলি মনে করেন, সামগ্রিক ফল ভুল বোঝাচ্ছে। ৪-১ বুঝতে দিচ্ছে না, প্রতি টেস্টে ভারত কেমন লড়াই করেছে। তা সত্যি। এক জয়ের পাশাপাশি অন্তত আরও দুটি টেস্টে ভারত দীর্ঘ সময় চালকের আসনে ছিল। কিন্তু ক্রিকেট বিশ্লেষক সঞ্জয় মাঞ্জরেকার মনে করেন, এতে তৃপ্তি খোঁজার কোনো সুযোগ নেই। ভারতের এই টেস্ট সিরিজ জেতাই উচিত ছিল। এমন সুযোগ ভারত খুব বেশিবার পাবে না। নিজেদের মাটিতেও ইংল্যান্ড খুব শক্তিশালী দল ছিল না। তাদের বেশির ভাগ ব্যাটসম্যানের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে গড় ত্রিশের ঘরে। জেমস অ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রড ছাড়া এই ইংল্যান্ড দলে বিশ্বমানের বোলারও নেই।
সঞ্জয় মনে করেন, ভারতের উচিত হবে, বিদেশে আরও বেশি জিততে, দেশে জেতার ব্যাকুলতায় ছাড় দেওয়া। এ নিয়ে নাতিদীর্ঘ এক কলাম তিনি লিখেছেন। যার শিরোনামে বলে দিয়েছেন, ভারত যদি বিদেশে জিততে চায়, দেশের মাটিতে জয় নিয়ে খুব বেশি উদ্বিগ্ন হওয়া চলবে না। এর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি, ‘ভারত যদি দেশে জেতার জন্য মরিয়া হয়, তখন দলে এমন খেলোয়াড়দের নেওয়া হবে যারা দেশের কন্ডিশনের জন্য আদর্শ। যেমন ধাওয়ান, যে দেশের মাটিতে সিরিজটা দারুণ খেলে বিদেশের মাটিতে পরের সিরিজেই হতাশ করবে। এর বদলে ভারতের এমন ব্যাটসম্যানকে নেওয়া উচিত, যে হয়তো দেশে ধাওয়ানের মতো অতটা কার্যকরী হবে না, কিন্তু বিদেশের কন্ডিশনে খুব ভালো করবে। ব্যাটসম্যান আর বোলার এই দুই বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রেই কথাটা প্রযোজ্য।’
গত ৫ বছরে দেশের বাইরে ভারত | ||||||
ম্যাচ | দেশে জয় | বিদেশে জয় | এশিয়ার বাইরে জয় | বিদেশে হার | বিদেশে ড্র | |
৫৫ | ১৭ | ১০ | ৫ | ১৪ | ৮ | |
এশিয়ার বাইরে ভারতের সামগ্রিক পরিসংখ্যানUpload Files | ||||||
ম্যাচ | জয় | হার | ড্র | দেশের বাইরে এশিয়ায় জয় | ||
২০৪ | ৩০ | ৯৮ | ৭৬ | ৫৮ ম্যাচের ১৭টি |