ক্রাইমবার্তা ডেস্করির্পোটঃ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র চার মাস। হাতে বেশি সময় না থাকায় এখনই আসন বণ্টনের ফয়সালা চাইছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিকরা। জোটের প্রায় প্রতিটি শরিক দলই আলাদা প্রার্থী তালিকা তৈরি করে ‘দর কষাকষি’র প্রস্তুতিও নিচ্ছে। কেউ কেউ কাঙ্ক্ষিত আসনের সংক্ষিপ্ত তালিকা চূড়ান্ত করে পৌঁছে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের হাতে। সমঝোতার সুস্পষ্ট ঘোষণা ছাড়া অনেক আসনে শরিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনের আগাম কার্যক্রমও শুরু করেছেন।
সংশ্নিষ্টরা জানান, ১৪ দলীয় জোটভুক্ত ১২টি দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা আগামী নির্বাচনে ১৩০টির মতো আসনে জোটের মনোনয়ন চাইছেন। জোটের বাইরে কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের সমমনা আরও কয়েকটি দলও একাধিক আসনে ছাড়প্রত্যাশী। সমমনা দলগুলোর মধ্যে রয়েছে বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট অ্যালায়েন্স (বিএনএ), বর্তমান সংসদের এমপি এস এম আবুল কালাম আজাদের বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) এবং সৈয়দ বাহাদুর শাহর নেতৃত্বাধীন ইসলামিক ফ্রন্ট। বিএনএ, ইসলামিক ফ্রন্টসহ নয়টি দল সম্প্রতি ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে থেকে সমঝোতার মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বর্তমান সংসদে ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল থেকে সরাসরি এমপি নির্বাচিত হয়েছেন ১৫ জন। তাদের মধ্যে ছয়জন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির, তিনজন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) এবং দু’জন করে এমপি রয়েছেন বাংলাদেশ জাসদ, তরীকত ফেডারেশন এবং জাতীয় পার্টির (জেপি)। এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা আসনে একজন করে এমপি নির্বাচন করা হয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ এবং ন্যাপ (মোজাফফর) থেকে। এসব এমপিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে আরও একাধিক আসনে মনোনয়ন চাইছে শরিক দলগুলো। তাদের দাবি, নতুন আসনেও তাদের যোগ্য, জনপ্রিয় এবং ভোটে বিজয়ী হওয়ার যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী রয়েছেন।
১৪ দলের সাম্প্রতিক কয়েকটি বৈঠকে আসন বণ্টনের সিদ্ধান্ত দ্রুত চূড়ান্ত করার ব্যাপারে তাগাদা দিয়েছেন শরিক দলের নেতারা। ১৪ দলের মুখপাত্র এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতারা জানিয়েছেন, শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা করে এ-সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আসন বণ্টন নিয়ে খুব বেশি জটিলতা হবে না বলেও শরিকদের আশ্বস্ত করেছেন আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। তবে কাকে কোন আসনে ছাড় দেওয়া হবে সে সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চূড়ান্ত করবেন বলেও জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের দায়িত্বশীল নেতারা। ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই আসন বণ্টনের প্রক্রিয়া শুরু হবে বলেও জানিয়েছেন তারা। তবে আলোচনার সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ নির্ধারণ না হওয়ায় এ নিয়ে কিছুটা অস্বস্তি রয়েছে শরিকদের মধ্যে। কয়েকটি শরিক দলের নেতারা বলছেন, আগামী নির্বাচনে জিতে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল শক্তির জোট হিসেবে ১৪ দল আবারও ক্ষমতায় না এলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তি এবং স্বাধীনতার চেতনা বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই আগেভাগেই আসন বণ্টন নিশ্চিত করে সকল প্রার্থীকে দ্রুত ব্যাপকভাবে মাঠে নামাতে হবে। হাতে বেশি সময় না থাকায় এখনই এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা জরুরি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা অবশ্য বলছেন, আগামী নির্বাচনে শরিক দলগুলোকে ২৫টির বেশি আসনে ছাড় দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। এক্ষেত্রে শরিক দল থেকে নির্বাচিত এমপিরা অগ্রাধিকার পাবেন। এর সঙ্গে নতুন করে আরও ৫-৭টি আসনে ছাড় দেওয়া হতে পারে। যেসব আসনে শরিক দলের শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছেন শুধু সেসব আসনেই ছাড় দেওয়া হবে। ওইসব আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রার্থিতা করবেন শরিক দলের প্রার্থীরা। সমঝোতার ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের করা জনমত জরিপের প্রতিবেদনকে বিশেষভাবে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। অবশ্য বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে ১৪ দলের শরিকরা আরও বেশ কয়েকটি আসনে ছাড় পাবেন। সে ক্ষেত্রে মহাজোটের গুরুত্বপূর্ণ শরিক জাতীয় পার্টি (জাপা-এরশাদ) এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিলে শরিকদের ছাড় দেওয়া আওয়ামী লীগের জন্য সহজ হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক বক্তব্যে ক্ষমতাসীন দলের মনোভাব স্পষ্ট হয়েছে। সম্প্রতি দলীয় ফোরামের বৈঠকসহ একাধিক প্রেস ব্রিফিংয়ে কাদের বলেছেন, মহাজোটগত নির্বাচন হলে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দল শরিকদের মিলিয়ে ৬৫ থেকে ৭০টি আসনে ছাড় দেওয়া হবে।
আসন বণ্টন নিয়ে শরিকদের সঙ্গে কোনো ঝামেলা হবে না বলে আশা করছেন ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম। সমকালকে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে আসন বণ্টনের বিষয়টি সময়মতো শরিকদের সঙ্গে বসেই ফয়সালা করা হবে। ১৪ দলের ঐক্য অটুট আছে, থাকবে।
কোন দল কয়টি আসন চায় :আগামী নির্বাচনে কমপক্ষে ১৫টি আসনে ছাড় চাইছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। এরই মধ্যে কাঙ্ক্ষিত আসনের ‘সংক্ষিপ্ত তালিকা’ করে ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে তারা। একই সঙ্গে দলীয়ভাবে মনোনয়নের জন্য ৩৫টি আসনের সম্ভাবনাময় দলীয় প্রার্থী তালিকাও তৈরি করেছে ওয়ার্কার্স পার্টি। এ ছাড়াও বর্তমান এমপিদের মধ্যে দলের সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের জন্য ঢাকা-৮, সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার রাজশাহী-২, ঠাকুরগাঁও জেলার সভাপতি ইয়াসিন আলীর ঠাকুরগাঁও-৩, নড়াইল জেলা সভাপতি শেখ হাফিজুর রহমানের নড়াইল-২, কেন্দ্রীয় পলিটব্যুরোর সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহর সাতক্ষীরা-১ এবং বরিশাল জেলা সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতানের বরিশাল-৩ আসনে আগামীবারও অগ্রাধিকার চেয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টি। সংরক্ষিত মহিলা এমপি পলিট ব্যুরোর সদস্য হাজেরা খাতুন শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় তার প্রার্থিতার ব্যাপারে কোনো চাহিদা নেই দলটির। তবে দলের পলিট ব্যুরোর সদস্য নুর আহমেদ বকুলকে মেহেরপুর-২ এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও যুব মৈত্রীর সাবেক সভাপতি মোস্তফা আলমগীর রতনকে ঝিনাইদহ-৪ আসনে জোটের মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে জোরালো দাবি জানিয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টি।
দলটির পলিট ব্যুরোর সদস্য ও সংসদীয় বোর্ডের সদস্য সচিব আনিসুর রহমান মল্লিক সমকালকে বলেন, ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে ৩৫টি আসনের তালিকা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি আসনের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার ও আগামীকাল শনিবার দলের পলিট ব্যুরো এবং পরে সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনার পর এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ওয়ার্কার্স পার্টি।
২৫টি আসনের তালিকা করে ১৪ দলের সঙ্গে আসন সমঝোতার আলোচনা শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে জাসদ (ইনু)। তাদের তালিকায় অগ্রাধিকার হিসেবে রয়েছে বর্তমান সংসদের সরাসরি নির্বাচিত তিন এমপি দলীয় সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর কুষ্টিয়া-২, সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতারের ফেনী-১ এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের বগুড়া-৪ আসন। এ ছাড়া সংরক্ষিত মহিলা এমপি লুৎফা তাহেরের জন্য একটি আসন, কার্যকরী সভাপতি রবিউল আলমের যশোর-৩, স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহ জিকরুল আহমেদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫, স্থায়ী কমিটির সদস্য জায়েদুল কবিরের নরসিংদী-২, কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও ঢাকা মহানগর পূর্ব সভাপতি শহীদুল ইসলামের ঢাকা-৫ এবং ময়মনসিংহ মহানগর সভাপতি ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র সৈয়দ শফিকুল ইসলাম মিন্টুর ময়মনসিংহ-৬ আসনেও অগ্রাধিকার চায় জাসদ। দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেছেন, নির্বাচনের আসন বণ্টনের আলোচনা শুরু হলে ১৪ দলের কাছে তাদের দাবি তুলে ধরবেন তারা।
জাসদ ভেঙে গঠিত বাংলাদেশ জাসদ বর্তমান দুই এমপি দলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানের পঞ্চগড়-১ এবং কার্যকরী সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদলের চট্টগ্রাম-৮ আসনসহ ১০টি আসন চাইছে। দুই এমপির বাইরে তাদের পক্ষে দলীয় সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়ার জন্য নড়াইল-১ ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সাব্বির আহমেদকে রংপুর-৩ আসনে প্রার্থী করার জন্য জোরালো দাবি তুলবে দলটি। দলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেছেন, বেশ কয়েকটি আসনে তাদের দলের যোগ্য প্রার্থী রয়েছেন। এ ধরনের প্রার্থীদের জন্যই দাবি জানাবেন তারা।
১৪ দলের আরেক শরিক জাতীয় পার্টিও (জেপি) ২৫টি আসনে ছাড়প্রত্যাশী। বর্তমান দুই এমপি দলের চেয়ারম্যান ও পানিসম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর পিরোজপুর-২ এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য রুহুল আমিনের কুড়িগ্রাম-৪ আসনে অগ্রাধিকারের পাশাপাশি দলের সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলামের জন্যও আগামীবার একটি আসন চাওয়া হবে। শেখ শহীদুল সমকালকে জানান, ১৫ সেপ্টেম্বর দলের বর্ধিত সভায় প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়ে আলোচনা হবে। এর পরই জোটের সঙ্গে আলাপের পর সিদ্ধান্ত নেবেন তারা।
তরীকত ফেডারেশনের দুই এমপি দলীয় চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর চট্টগ্রাম-২ ও সাবেক মহাসচিব এম এ আউয়ালের লক্ষ্মীপুর-১ আসনসহ ৩০-৩৫টি আসনের একটি তালিকা করে রেখেছে দলটি। তবে কমপক্ষে ১৫টি আসনে জোটের মনোনয়ন চায় তারা। এ ছাড়া দলের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীকে কুমিল্লা-৮ অথবা কুমিল্লা-৯, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ তৈয়বুর বশর মাইজভাণ্ডারীকে চট্টগ্রাম-৪ ও মোহাম্মদ আলী ফারুকীকে চট্টগ্রাম-৯ আসনে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানাবে।
ন্যাপের চাহিদা ১০টি আসনে জোটের মনোনয়ন। দলটির উল্লেখযোগ্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হচ্ছেন দলের কার্যকরী সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা এমপি আমিনা আহমেদ কুমিল্লা-৪, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী লুৎফুর রহমান চৌধুরী দিনাজপুর-৬ আসন এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ আলী ফারুক কুমিল্লা-৬ আসন। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বলেছেন, এর আগে দুবার ১৪ দলীয় জোটগত নির্বাচন করলেও ন্যাপকে কোনো আসনই দেওয়া হয়নি। এবার যৌক্তিক কারণেই ১৪ দলের মনোনয়ন চাইছেন তারা। তাদের এই দাবি পূরণ হবে বলেই প্রত্যাশা করছেন তারা।
দলীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ূয়ার চট্টগ্রাম-১ আসনসহ ছয়টি আসন চায় জোটের আরেক শরিক সাম্যবাদী দল। এই দলের প্রার্থী তালিকায় আরও রয়েছে দলের পলিট ব্যুরোর সদস্য লুৎফুর রহমান রাজশাহী-৬, ধীরেন সিংহ মৌলভীবাজার-২, সাবেক এমপি সাইফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ-৫, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাইনউদ্দিন মাহিন নোয়াখালী-২ ও সুলতান বিশ্বাস চুয়াডাঙ্গা-১-এর নাম। দিলীপ বড়ূয়া বলেন, ১৪ দল গঠন, ঐক্যবদ্ধ নির্বাচন ও ক্ষমতায় আসার পেছনে সাম্যবাদী দলেরও অবদান রয়েছে। অথচ মনোনয়নের বেলায় তারা বঞ্চিত হয়েছেন। এবার তারা কয়েকটি আসনে মনোনয়ন পাবেন বলে আশাবাদী।
গণতন্ত্রী পার্টি চায় দলের সভাপতি ব্যারিস্টার আরশ আলীর আসনসহ ১০-এর অধিক আসনে মনোনয়নের নিশ্চয়তা। দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূরুর রহমান সেলিম বলেন, তারা নিজেদের মতো করে তালিকা তৈরি করছেন। নির্বাচনের আসন বণ্টন প্রশ্নে আলোচনা শুরু হলে সেটি তোলা হবে। এ ক্ষেত্রে যথাযথ মূল্যায়ন পাবেন বলেই প্রত্যাশা তাদের রয়েছে।
কমিউনিস্ট কেন্দ্র চাইছে, দলের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. অসীত বরণ রায়ের জন্য দুটি আসন। দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. অসীত বরণ রায় বলেছেন, জোটের মূল উদ্দেশ্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির বিজয় ও আবারও ক্ষমতায় আসা নিশ্চিত করা। অন্যথায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির অস্তিত্ব থাকবে না। এখানে আসন ভাগাভাগি মুখ্য বিষয় নয়। তবে আলোচনা শুরু হলে এ বিষয়টিতেও কোনো সমস্যা হবে না বলেই তার বিশ্বাস।
এ ছাড়া গণআজাদী লীগ চায় পাঁচটি আসন। গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি ও বাসদসহ (রেজাউর) শরিক অন্য দলগুলো মনোনয়ন দেওয়ার বেলায় ‘যথাযথ মূল্যায়ন’ আশা করছে আওয়ামী লীগের কাছে।
অন্য যারা আসন চাইছে :সমমনা দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) চেয়ারম্যান ও ঢাকা-১৭ আসনের এমপি এস এম আবুল কালাম আজাদ আগামী নির্বাচনেও একই আসনে নির্বাচন করতে চান। এ কারণে গত নির্বাচনের মতো এবারও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ‘সহযোগিতা’ চান তিনি।
১৪ দলের সহযোগী জোট হিসেবে কাজ করতে আগ্রহী বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট অ্যালায়েন্স (বিএনএ) ও তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাও চান ঢাকা-১৭ আসনের মনোনয়ন। এ ছাড়া ইসলামিক ফ্রন্টের চেয়ারম্যান সৈয়দ বাহাদুর শাহ মুজাদ্দেদী একটি আসনে নির্বাচন করতে চান। বিএনএ ও ইসলামিক ফ্রন্টসহ নামসর্বস্ব নয়টি দল কয়েক দফায় ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠক করে জোটের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহও দেখিয়েছে। অবশ্য আদর্শগত অমিল থাকায় এসব দলের ১৪ দলে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে ঘোরতর আপত্তি রয়েছে জোটের বর্তমান শরিকদের। এ অবস্থায় ১৪ দলে সম্ভব না হলে মহাজোটের ব্যানারে হলেও ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে নির্বাচন করতে আগ্রহী এই দলগুলো।