ক্রাইমবার্তা ডেস্করির্পোটঃ
নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘের সদর দফতরে জাতিসঙ্ঘের রাজনীতি বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মিরোস্লাভ জেনকার সাথে বৈঠক করেছেন বিএনপি মহাসিচব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় এ বৈঠক শুরু হয়। এক ঘণ্টা ১০ মিনিটের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে জাতিসঙ্ঘের উচ্চপদস্থ আরো চার কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছি। একই সাথে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং বিরোধী দলের ওপর সরকারের দমন-নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরেছি। জাতিসঙ্ঘের কর্মকর্তারা আমাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। তারা আমাদের তথ্য-উপাত্ত ও বক্তব্য বিশ্লেষণ করে পরবর্তী কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব বৈঠকে একাদশ জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। বিএনপিসহ বিরোধী দল-মতের ওপর ‘সরকারের দমন-পীড়নের’ চিত্র তুলে ধরা হয়। বিগত তিন সিটি নির্বাচন, গুম, খুনসহ রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের চিত্রসহ সমসাময়িক পরিস্থিতির একটি সচিত্র প্রতিবেদনও জাতিসঙ্ঘের রাজনীতিবিষয়ক উচ্চপদস্থ ওই কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করেছেন মির্জা ফখরুল।
এ বৈঠকে অংশ নিতে স্থানীয় সময় গত বুধবার বিকেলে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়ালকে সাথে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে পৌঁছান মির্জা ফখরুল। বিমানবন্দরে দলের নেতাকর্মীরা না থাকলেও বেশ কয়েকজন নিকটাত্মীয় তাদের স্বাগত জানান। এরপর সেখান থেকে তিনি ম্যানহাটন হোটেলে ওঠেন।
বিমানবন্দরে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের জানান, ‘এখানে তিনি দুই দিন অবস্থান করবেন। তিনি নিজস্ব কাজে এসেছেন।’
জানা গেছে, জাতিসঙ্ঘে এ বৈঠকে অংশ নিতে বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক হুমায়ুন কবিরও লন্ডন থেকে নিউ ইয়র্কে গেছেন। বৈঠকে তারা সবাই উপস্থিত ছিলেন।
জাতিসঙ্ঘের মহাসচিবের আমন্ত্রণেই মূলত মির্জা ফখরুল নিউ ইয়র্কে গেছেন।
গত জুলাই মাসের শুরুতে দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসেছিলেন জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তখন তার আগমনের উদ্দেশ্য ছিল মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিন দেখা। ওই সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথেও যৌথ মিটিং করেন জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব। বিএনপি ওই সময় জাতিসঙ্ঘের মহাসচিবের সাথে একটি বৈঠকের প্রত্যাশা করেছিল। কিন্তু তা অনুষ্ঠিত হয়নি। এরই প্রোপটে জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বিএনপিকে নিউ ইয়র্কে আমন্ত্রণ জানান।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট নিরপে ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের সময়ও একই দাবিতে অনড় ছিল এই জোট। ওই নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠক করে সমঝোতায় আনার চেষ্টা করেছিলেন তৎকালীন জাতিসঙ্ঘের মহাসচিবের পাঠানো বিশেষ দূত তারানকো। যদিও তারানকোর সে সমঝোতার ফর্মুলা পরে মানা হয়নি বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে।
আরো খবর
খালেদা জিয়ার জন্য বিএসএমএমইউর মেডিক্যাল বোর্ড গঠন
নিজস্ব প্রতিবেদক
কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয় একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেছে। কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে চিঠি পাওয়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবার চার সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠিত হয়েছে বলে একটি সূত্র জানায়। এ ব্যাপারে বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা: কনক কান্তি বড়–য়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি। তিনি জানান, সারা দিন তিনি ব্যস্ত ছিলেন বলে এ সম্পর্কে কিছু জানেন না। তিনি হাসপাতালের পরিচালকের সাথে কথা বলতে বলেন। রাতে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুনের মোবাইলে ফোন করা হলে মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।
হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে, ১২ সেপ্টেম্বর কারা কর্তৃপক্ষ থেকে মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের অনুরোধ করে একটি চিঠি বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন পেয়েছে। সে অনুযায়ী প্রশাসন মেডিক্যাল বোর্ডও গঠন করেছে। মেডিক্যাল বোর্ডে অর্থোপেডিক, কার্ডিওলজি, চক্ষু ও মেডিসিনের বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন। মেডিক্যাল বোর্ড আগামীকাল শনিবার অথবা রোববার কারাগারে যাবেন বেগম জিয়াকে দেখতে।