মুশফিকুর রহিমের তাণ্ডবে এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচ ২৬১ রান করেছে বাংলাদেশ। সবাইকে চমকে দিয়ে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে তামিম ইকবাল নামার পর মুশফিক একাই তোলেন ৩২ রান। তার ১৪৪ রানের ইনিংসটি এক কথায় অসাধারণ, অনবদ্য।
আকাশের দিকে তাকিয়ে চোখ বুজলেন মুশফিক। ওয়ানডেতে ষষ্ঠ সেঞ্চুরি পূর্ণ করে স্রষ্টাকে হয়তো ধন্যবাদ জানালেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। গত বছর অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সবশেষ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। গত এক বছরে বেশ কয়েকটি ইনিংসে ৬০ পেরোলেও তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেনি ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’।
শনিবার দুবাইয়ে নিজের প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরি করে দলকে বড় বিপর্যয় থেকে বাঁচালেন মুশফিক। দুই রানে দুই উইকেট হারিয়ে দল যখন বিপদে তখনই তিনি ত্রাতার ভূমিকায়। বাঁ হাতের আঙুলে আঘাত পেয়ে তামিম ড্রেসিংরুমে ফিরে গেলে মিঠুনকে সঙ্গে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে ১৩১ রানের জুটি গড়েন মুশফিক। ব্যক্তিগত ১০ রানে ক্যাচ দেওয়া ছাড়া পুরো ইনিংসে দারুণ ব্যাটিং করেছেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত ১৪৪ রানে সাজঘরে ফিরেছেন মুশফিক। মাঠ থেকে ফেরার পর ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন জড়িয়ে ধরেছেন তাকে, বুকে টেনে নিয়েছেন অধিনায়ক মাশরাফিও। ড্রেসিংরুম থেকে সতীর্থরা করতালি দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটিং বীরকে।
মুশফিক রুখে না দাঁড়ালে বাংলাদেশের স্কোর ২৫০ ছাড়াতে পারতো না। মিঠুনের আউটের পর আবার বিপদে পড়ে যায় দল। একে একে আউট হয়ে যান মাহমুদউল্লাহ-মোসাদ্দেক- মাশরাফি। কিন্তু একা লড়াই করে মুশফিক দলকে এনে দেন লড়াই করার পুঁজি।
সুরাঙ্গা লাকমলের বলে আঙুলে ব্যথা পাওয়া তামিমের ব্যাটিংয়ে নামার কথাই ছিল না। কিন্তু দলীয় ২২৯ রানে মোস্তাফিজ আউট হওয়ার পর ক্রিকেট দুনিয়াকে অবাক করে মাঠে নামেন বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররাও তখন বিস্মিত। যার বলে আঘাত পেয়েছিলেন, সেই লাকমলের বিপক্ষে এক হাতে ব্যাট করেন তামিম।
তামিমের বীরত্ব হয়তো ছুঁয়ে গেছে মুশফিককেও। সতীর্থকে আর কষ্ট না দিয়ে বাকি সময়টা একাই খেলেছেন তিনি। প্রতিপক্ষের ওপর তাণ্ডব চালিয়ে চার-ছক্কার ঝড় তুলেছেন মুশফিক। তামিম নামার পর ১৫ বলে মুশফিক তুলে নিয়েছেন ৩২ রান। ১৫০ বলে ১৪৪ রানের চমৎকার ইনিংসটা সাজানো ১১টি চার ও ৪টি ছক্কায়। ওয়ানডেতে এটাই মুশফিকের সেরা ইনিংস। আগের সেরা ইনিংস ছিল ২০১৪ সালে ফতুল্লায় ভারতের বিপক্ষে ১১৭। ৪ হাজার ৯৭২ রান নিয়ে ‘ফাইভ থাউজ্যান্ড’ ক্লাবে ঢোকার অপেক্ষায় তিনি।