ক্রাইমবার্তা ডেস্করির্পোটঃ সাতক্ষীরায় ইসলামী ফাউন্ডেশন ও ইমাম পরিষদের মৌখিক বিবৃতিতে জঙ্গিবাদ বিরোধী চলচিচত্র ‘জান্নাত’ এর শো বন্ধ হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান এ খবর জানিয়ে বলেছেন, ইসলামী ফাউন্ডেশন ও ইমাম পরিষদের মৌখিকভাবে পুলিশকে জানায়, সঙ্গিতা সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ যদি সিনেমাটির শো বন্ধ না রাখে তবে তারা সিনেমা হলের বিরুদ্ধে আন্দোলনে মাঠে নামবেন। ইমাম পরিষদ ও ইসলামী ফাউন্ডেশনের আন্দোলনের মধ্যে জামাত-শিবির যাতে সুযোগ নিতে না পারে সেজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সিনেমাটির শো বন্ধ রাখতে অনুরোধ করা হয় বলে জানান ওসি মোস্তাফিজুর রহমান।
সাইমন ও মাহি অভিনীত ‘জান্নাত’ ছবির প্রচারণায় বলা হয়-এটি একটি জঙ্গি বিরোধী ছায়াছবি। সারা দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে ও সাধারণ জনগণকে সচেতন করতে এ ছবির কাহিনী নির্মাণ করা হয়েছে।
এদিকে শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে এই শো শুরু হবার কথা ছিল। কিন্তু শো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সাতক্ষীরার সঙ্গীতা সিনেমা হল কর্তৃপক্ষকে মোটা অংকের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।
সঙ্গীতা হল মালিক আবদুল হক জানান আমাদের সব আয়োজন শেষ। প্রচার প্রচারণাও চলেছে পুরোদমে। এজন্য হলের বিউটিফিকেশনসহ নানা বিষয়ে বেশ টাকাও ব্যয় করেছি আমরা। গত ঈদেই ছবিটি চালানোর কথা ছিল। কিন্তু তা না করে ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে শো চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলাম। হঠাৎ করে সকালে পুলিশের পক্ষ থেকে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাধ্য হয়ে আমরা জান্নাত ছবির প্রদর্শন বন্ধ রেখেছি। এখন ‘জান্নাত’র স্থলে ‘সুলতান’ সিনেমা চালানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর সঙ্গীতা সিনেমা হলে শুরু হবে ভারতীয় সিনেমা ‘নাকাব’। ‘জান্নাত’ আর চালাতে পারবো কিনা জানিনা বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, দেশের অন্যান্য স্থানে ‘জান্নাত’ চলছে। সেন্সর বোর্ড ছবিটি ছাড়পত্র দেয়া সত্ত্বেও ছবিটি বন্ধ হলো শুধু সাতক্ষীরায়।
জানতে চাইলে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, জেলার অনেকে এই ছবির বিষয়ে আপত্তি তুলেছেন। তারা বলেছেন ‘জান্নাত’ একটি পবিত্র ইসলামী নাম। ‘জান্নাত’ নামের আড়ালে কোনো অশোভন অশ্লীল চিত্র দেখানো হলে তাতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে। জেলার বেশ কয়েকটি মসজিদের ইমামও বলেছেন একই কথা’। পুলিশ সুপার বলেন, ‘ছবিটি ছাড়পত্র পেয়েছে সত্য। কিন্তু স্থানীয় কিছু ব্যাপার তো থাকেই। ফলে মুসুল্লিদের কথায় সম্মান দিয়ে আমরা সিনেমা হল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছি ছবিটির শো বন্ধ রাখতে। তারা আমাদের অনুরোধ রেখে ‘জান্নাত’ বন্ধ রেখেছেন’।
এদিকে, ছবির পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিক বলেন, আমার মনে হয় যারা আপত্তি জানিয়েছেন তারা ছবিটি না দেখেই আপত্তি তুলেছেন। ছবির নাম ‘জান্নাত’ হওয়াতেও তারা আপত্তি করেছেন। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে সেন্সরবোর্ড ছবিটি দেখার পর আনকাট ছাড়পত্র দেয় এবং যারা এ পর্যন্ত ছবিটি দেখেছেন তারা কেউই এ বিষয়ে আপত্তিমূলক কথা বলেননি। এমনকি ছবিতে ইসলামের বিষয়টি সুন্দর করে তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে আপত্তির প্রশ্নই আসে না। আমি নিজে অবাক হয়েছি।
‘জান্নাত’ সিনেমার পরিচালক আরো বলেন, মাননীয় রাষ্ট্রপতিকে ছবিটি আমরা দেখাতে চাই। আমি আবারো বলছি, ছবিতে আপত্তিকর বা ইসলামকে আঘাত করে এমন কোনো বিষয় নেই।