নিজস্ব প্রতিনিধি: পাটকেলঘাটার নগরঘাটা গ্রামে মেয়ের শাবলের আঘাতে মা মমতাজ বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় অবশেষে থানায় মামলা হয়েছে। এসআই আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে টুম্পা খাতুনকে (২৫) আসামী করে পাটকেলঘাটা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৫। তারিখ ১২-৯-১৮।
উল্লেখ্য, গত ১০ সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল ৮টার দিকে নগরঘাটা গ্রামের মৃত আব্দুস সবুর সরদারের স্বামী পরিত্যক্তা কন্যা বহু বিবাহের নায়িকা টুম্পা খাতুন পারিবারিক কলহের জেরে তার মা মমতাজ খাতুনকে ঝগড়ার এক পর্যায়ে শাবল দিয়ে সজোরে আঘাত করে। এতে মমতাজ খাতুন মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে এলাকার লোকজন তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য মমতাজকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। খুলনা মেডিকেলে নেয়ার সময় পথে তিনি মারা যান। পরে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, হত্যাকারী টুম্পা একজন প্রতারক। সে ধনী লোকের ছেলেদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে উচ্চ কাবিননামা করে বিয়ে করে। বিয়ের কয়েক মাস বা বছর খানেক পরে নানা ঝামেলা দেখিয়ে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করে। পরে ডির্ভোস চায়। এভাবে ৫/৭ টির মত টুম্পা বিয়ে করেছে।
এছাড়াও সে মাদকের সাথে জড়িত। পাটকেলঘাটা থানা পুলিশ টুম্পার ঘর সার্চ করে ১০০টি কনডম, মাদক গ্রহণের ইনজেকশন, একটি করাতসহ মাদকের আরো সরাঞ্জম পায়। টুম্পা এখন কোটিপতি। সর্বশেষ সাতক্ষীরা সংরক্ষিত মহিলা এমপি রিফাত আমিনের ছেলের বউ ছিলো টুম্পা। তাদের ২ বছরের একটি সন্তানও আছে।
এলাকার লোকের সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, টুম্পার সখ্যতা উচ্চ পর্যায়ের রাজনীতিবিদদের সাথে। সেই সাথে সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাসহ পুলিশের সাথে তার উঠা-বসা। এজন্য এলাকাবাসির ধারণা করছে নিহত মমতাজ বেগমের হত্যার বিচায় হয়তো সুষ্ঠুভাবে হবেনা। মা হত্যা মামলার আসামী টুম্পাকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি দেয়ার দাবি এলাকাবাসির।
পাটকেলঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল ইসলাম জানান, মা হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামী পলাতক রয়েছে। আমরা তৎপর। যেকোন সময় আসামী আটক হবে।
—-০———
সাতক্ষীরায় মাদকাসক্ত মেয়ের আঘাতে মায়ের মৃত্যু
সাতক্ষীরায় মাদক গ্রহণ, বেপরোয়া চলাফেরা ও পারিবারিক কলহের জেরে বিধবা মাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে মেয়ে। সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে পাটকেলঘাটা থানার নগরঘাটা এলাকায়।
পুলিশ এবং স্থানীয়রা জানায়, টুম্পা খাতুন (২৪) ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক সেবন করতেন। বেপরোয়া চলাফেরার কারণে তিন বছর আগে তার স্বামী তাকে তালাক দেয়। মা এগুলোর বিরোধীতা করায় তার মা মমতাজ বেগম (৪৮) কে প্রায়ই মারধর করতেন টুম্পা।
গত সোমবার টুম্পা আবারও মাদক গ্রহণ করলে তার মায়ের সঙ্গে তার বাগবিতন্ডা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে টুম্পা তার মাকে রড দিয়ে মাথা ও ঘাড়ে আঘাত করে। আঘাতে লুটিয়ে পড়েন মা এবং কয়েকবার বমি করেন। এরপর আর জ্ঞান ফেরেনি।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে অবস্থার অবনতি হওয়ায় মমতাজ বেগমকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে নেয়ার পথেই মারা যান মমতাজ বেগম।
স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধারকালে টুম্পা পালিয়ে যায়। সেই থেকে পলাতক রয়েছে টুম্পা। এ ঘটনায় পাটকেলঘাটা থানার এসআই আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে টুম্পা খাতুনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
মমতাজ বেগমের স্বামী আব্দুস সবুর সরদার মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। একমাত্র ছেলে শরীফও মাদকাসক্ত। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পাটকেলঘাটা থানার ওসি রেজাউল ইসলাম জানান, নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। তাই পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। আসামি টুম্পাকে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযানে নেমেছে।