ক্রাইমবার্তা র্রিপোট:: আজ থেকে শুরু হবে প্রাণহীন সাতক্ষীরার ঐতিহ্যবাহী গুড়পুকুর মেলা। প্রতিবছর মনষা পূজা উপলক্ষে বাংলা মাসের শেষ ভাদ্র থেকে সাতক্ষীরার ঐতিহ্যবাহী গুড় পুকুর মেলা শুরু হতো। প্রায় ৩০০ বছরের এতিহ্য এটি। মূলত তিন দিন এই মেলা জমজমাট থাকতো। মেলা উপলক্ষে জেলা শহরব্যাপী উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যেতো। দেশ-বিদেশ থেকে মেলায় আসতো হাজার হাজার মানুষ। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা নানা ধরনের আকর্ষনীয় জিনিসপত্র নিয়ে হাজির হতো এই মেলায়। কাঠের তৈরি আসবাপত্র ছিল মেলার সবচেয়ে বেশী আকর্ষণ। বেতের তৈরী জিনিসপত্র আর লোহার তৈরী দা-বটি-ছুরি, ইলিশ মাছ, লেবু, হরেক রকমের মিষ্টি-মিঠাই বিক্রি হতো এই মেলায়। নাগরদোলা, সার্কাস, পুতুলনাছসহ নানা বিনোদনের ব্যবস্থা থাকতো মেলায়। বাহারী কসমেটিকস, বিভিন্ন জাতের গাছের চারা আর কাঠের ফার্নিচার ছিল এই মেলার প্রধান আকর্ষন।
কিন্তু ২০০২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মেলা চলাকালীন সময়ে সাতক্ষীরার রক্সি সিনেমা হল, স্টেডিয়ামে সার্কাস প্যান্ডেলে বোমা হামলা হয়। এই হামলায় শতাধিক মানুষ আহত হয়। একাধিক মানুষ বোমা হামলার শিকার হয়ে সারাজীবনের জন্য আজ পঙ্গুত্ববরণ করেছে।
সেই থেকে এই মেলা প্রাণহীন হয়ে গেছে। মেলার এরিয়া সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কের ভিতরে সীমাবন্ধ হয়ে পড়েছে। পৌরসভার অধিনে বেশ কয়েক বছর পরিচালিত হওয়ার পর কোন গতি না হওয়ায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ২০১১ সালে মেলা পুনরায় শুরু হলেও সেভাবে আর জমজমাট হয়না।
বোমা হামলার পর থেকে সাতক্ষীরা জেলা শহরব্যাপী আর মেলা বসে না। প্রতিবছর মেলা হলেও মেলার নির্ধারিত দিন, তারিখ আর ঠিক নেই। মেলার সেই অতিত ঐতিহ্য যেনো বোমা হামলার পর থেকে কোথায় হারিয়ে গেছে।
এতোসবের পরেও সাতক্ষীরাবাসী গুড় পুকুর মেলার সেই অতিত এতিহ্য আবার ফিরে পেতে চায়। আবারও দেখতে চাই ভাদ্র মাসের শেষ দিন থেকে জেলা শহরব্যাপী শুরু হবে এই মেলা। আগের মতো উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়বে চারিদিকে। আগের মতো আবারও জমজমাট হবে সাতক্ষীরার প্রায় ৩০০ বছরের এতিহ্যবাহী এই মেলা। দেশ-বিদেশ থেকে ব্যবসায়ী ও দর্শকেরা আসবে এই মেলায়। সেই আশায় বুক বেঁধে আছে সাতক্ষীরার সাধারণ মানুষ।
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …