সাতক্ষীরায় একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে ১৭ কোটি টাকা লুটপাট

ক্রাইমবার্তা র্রিপোট: সাতক্ষীরা: জেলায় ‘দারিদ্র্য বিমোচনের হাতিয়ার একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের প্রকল্প ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ নিয়ে চলছে লুটপাট। যে স্বপ্ন নিয়ে দারিদ্র্যকে জয় করার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু হয়েছিল ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের, সেই স্বপ্নের ছিটেফোঁটাও বাস্তবায়ন হয়নি গত আট বছরে। এ প্রকল্প থেকে জেলার ৭৮টি ইউনিয়নে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে সাড়ে ১৭ কোটি টাকা। যার সাড়ে পাঁচ কোটি টাকাই খেলাপি পড়ে আছে। পুরনো সমিতির সদস্যরা সেই টাকা ফেরত না দিলেও নতুন সমিতি করে সদস্যদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে সঞ্চয়। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের ঋণ প্রদানের।
তথ্য থেকে জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলায় ৭টি উপজেলার ৭৮টি ইউনিয়নে ৬৫২টি সমিতির আওতায় ৩২ হাজার ৪৩৩ জন সদস্যে রয়েছে। এক থেকে একাধিক বার এসব সদস্যদের মধ্যে ১৭ কোটি ৫৪ লাখ ২ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। বিতরণকৃত এসব টাকার ৫ কোটি ৬০ লাখ ৩৬ হাজার ১৬২ টাকা অনাদায়ী রয়েছে। যা মোট টাকার তিন ভাগের এক ভাগ। এছাড়াও সার্ভিস চার্জ অনাদায়ী রয়েছে ৪৫ লাখ ৮ হাজার ৪৬৯ টাকা। এক বছর অনাদায়ী রয়েছে ১ কোটি ৫৩ লাখ ৫৪ হাজার ১৫৪ টাকা। সরকারিভাবে এসব সমিতির সদস্যদের অনুদান দেওয়া হয়েছে ৭ কোটি ৯৫ লাখ ১৮ হাজার ২৩২ টাকা। একই সাথে সমিতিগুলোকে অনুদান দেওয়া হয়েছে ১৫ কোটি ৩১ লাখ ৫৬ হাজার ৩২৫ টাকা। সমিতির সদস্যরা জমা করেছে ৮ কোটি ৯৬ লাখ ৬৩ হাজার ৪৮১ টাকা। জেলায় সমিতিগুলোর একাউন্টে বর্তমানে ব্যালেন্স রয়েছে ১৭ কোটি ৪০ লাখ ৫৬ হাজার ৩২১ টাকা।
প্রাপ্ত তথ্য থেকে আরও জানা যায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১১১টি সমিতির সদস্য সংখ্যা চার হাজার ৮৬৬ জন। এ উপজেলায় সদস্যের মধ্যে দুই কোটি ৮০লাখ ৭১হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। বিতরণকৃত ঋণের ৮৮লাখ ৮৩ হাজার ৩৬১ টাকা অনাদায়ী রয়েছে। সার্ভিস চার্জ অনাদায়ী রয়েছে সাত লাখ ৩৫ হাজার ৭৪ টাকা। এক বছর আনাদায়ী রয়েছে ২৩লাখ ৮২ হাজার ৪৯৩ টাকা। সরকারিভাবে এ উপজেলার সমিতির সদস্যেদের অনুদান দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ২ লাখ ৮০হাজার ৬০ টাকা এবং সমিতিকে অনুদান দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এ উপজেলায় বর্তমানে ব্যাংক ব্যালেন্স রয়েছে ২ কোটি ৪৪ লাখ ১৯ হাজার ২৩১ টাকা।
তালা উপজেলায় ৮২টি সমিতির সদস্য সংখ্যা চার হাজার ১৪২ জন। এ উপজেলায় ৮৬লাখ ২৬ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। বিতরণকৃত ঋণের ২৪লাখ ২৬ হাজার ৬৪৪ টাকা আনাদায়ী রয়েছে। সার্ভিস চার্জ অনাদায়ী রয়েছে ১লাখ ৫৯হাজার ৭৪৭ টাকা। এক বছর আনাদায়ী রয়েছে ৭লাখ ৬৫ হাজার টাকা। সরকারিভাবে উপজেলার সদস্যেদের অনুদান দেওয়া হয়েছে ৮৪ লাখ ৯৩হাজার ৮১০ টাকা এবং সমিতিকে অনুদান দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৮৯ লাখ ৬ হাজার ৩২৫ টাকা। এ উপজেলায় বর্তমানে ব্যাংক ব্যালেন্স ৩ কোটি ৬ লাখ ১৩ হাজার ১৩৩ টাকা।
কলারোয়া উপজেলায় ১০৫টি সমিতির সদস্য সংখ্যা ৫হাজার ৬৫২ জন। এ উপজেলায় বিতরণকৃত ঋণের ৩ কোটি ২৫ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকার ১ কোটি ৬লাখ ১৭১ টাকা অনাদায়ী রয়েছে। সার্ভিস চার্জ অনাদায়ী রয়েছে ৮লাখ ৪৭হাজার ৯৮৩ টাকা। এক বছর অনাদায়ী রয়েছে ৪৪লাখ ৮৪ হাজার ৮২৭ টাকা। সরকারিভাবে এ উপজলোর সদস্যেদের অনুদান দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ১৮ লাখ ৭৩ হাজার ৮৯১ টাকা এবং সমিতিকে অনুদান দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ৩৪লাখ টাকা। এ উপজেলায় বর্তমানে ব্যাংকে ব্যালেন্স রয়েছে ১কোটি ৯৯ লাখ ৬৮ হাজার ৬৯০ টাকা।
কালিগঞ্জ উপজেলায় ১০৫টি সমিতির সদস্য সংখ্যা ৪হাজার ৭৬৮ জন। এ উপজেলায় সদস্যের ২ কোটি ৫২ লাখ ৭১ হাজার ৫০০ টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। যার ৮৩লাখ ১৯হাজার ৫২৪ টাকাই অনাদায়ী রয়েছে। সার্ভিস চার্জ অনাদায়ী রয়েছে ৭লাখ ৩হাজার ৪০২ টাকা। এক বছর অনাদায়ী রয়েছে ২৩লাখ ১৮ হাজার ৩৪২ টাকা। সরকারিভাবে এ উপজেলার সমিতির সদস্যেদের অনুদান দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭৫৮ টাকা এবং সমিতিকে অনুদান দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ৪৩লাখ টাকা। এ উপজেলায় বর্তমানে বাংকে ব্যালেন্স রয়েছে ২কোটি ৭৫ লাখ ৩৯হাজার ৫৭৬ টাকা।
দেবহাটা উপজেলায় ৪৬টি সমিতির সদস্য সংখ্যা ২ হাজার ৫৪২ জন। এ উপজেলায় ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ১কোটি ৯৭ লাখ ৫৮হাজার টাকা। বিতরণকৃত এ ঋণের অনাদায়ী রয়েছে ৬০লাখ ৫২হাজার ৫২৫টাকা। সার্ভিস চার্জ অনাদায়ী রয়েছে ৪লাখ ৮৪হাজার ৮৭৭টাকা। এক বছর অনাদায়ী রয়েছে ৮লাখ ৪১হাজার ৭৮০ টাকা। সরকারিভাবে এ উপজেলার সমিতির সদস্যদেও অনুদান দেওয়া হয়েছে ৬২ লাখ ৯৭ হাজার ৮২৩ টাকা এবং সমিতিকে অনুদান দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৯লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ উপজেলায় বর্তমানে ব্যাংকে ব্যালেন্স রয়েছে ৯১ লাখ ৮৬হাজার ৬১০ টাকা।
আশাশুনি উপজেলায় ৯৪টি সমিতির সদস্য সংখ্যা ৪হাজার ৫৩৫ জন। এ উপজেলায় সদস্যের মধ্যে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৩কোটি ৮৭ লাখ ১৪হাজার টাকা যার আনাদায়ী রয়েছে ১ কোটি ১৪লাখ ৬৫হাজার ৬৯৮টাকা। সার্ভিস চার্জ অনাদায়ী রয়েছে ৯লাখ ২২হাজার ১০০ টাকা। এক বছর অনাদায়ী রয়েছে ৪৩লাখ ৬৪হাজার ৫৮ টাকা। সরকারিভাবে এ উপজেলার সমিতির সদস্যেদের অনুদান দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৮৮ হাজার ২০০ টাকা এবং সমিতিকে অনুদান দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ৩২লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ উপজেলায় বর্তমানে ব্যাংকে রয়েছে ২ কোটি ১৮ লাখ ৬৯হাজার ২২৮ টাকা।
শ্যামনগর উপজেলায় ১০৯টি সমিতির সদস্য সংখ্যা ৫হাজার ৯২৮ জন। এ উপজেলায় সদস্যের মধ্যে ঋণ দেওয়া হয়েছে ২কোটি ২৪ লাখ টাকা। অনাদায়ী রয়েছে ৮২লাখ ৮৮হাজার ২৩৯টাকা। সার্ভিস চার্জ অনাদায়ী রয়েছে ৬লাখ ৫৫হাজার ৩১৩ টাকা। এক বছর অনাদায়ী রয়েছে ১লাখ ৯৭হাজার ৬৫৪ টাকা। সরকারিভাবে এ উপজেলার সদস্যেদেও অনুদান দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৮৪ হাজার ৬৯০ টাকা এবং সমিতিকে অনুদান দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ উপজেলায় বর্তমানে ব্যাংকে রয়েছে ৪ কোটি ৪৫ লাখ ৯হাজার ৮৫৩ টাকা।
মূলত গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করে তুলতে এবং দারিদ্র্য নির্মূল করতেই এ প্রকল্পের ভাবনা আসে প্রধানমন্ত্রীর মাথায়। এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে- প্রতিটি পরিবারকে একটি অব্যাহত আয় উৎপাদনকারী ইউনিটে (এককে) পরিণত করে ২০১৫ সালের মধ্যে জাতীয় দারিদ্র্য কমিয়ে আনতে ভূমিকা রাখা। এরই অংশ হিসেবে বিগত মহাজোট সরকারের প্রথম দিকেই সরকার এ প্রকল্পটি হাতে নেয়। প্রথম দফায় প্রকল্পের মেয়াদ করা হয়েছিল জুলাই ২০০৯ থেকে জুন ২০১৪ পর্যন্ত। পরবর্তীতে দুই দফায় ডিপিপি সংশোধন করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয় জুন ২০১৬ পর্যন্ত। সর্বশেষ ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ বেড়েছে। গত আট বছরে প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগীদের উৎপাদিত পণ্য বিভাগ, জেলা, উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে অনলাইন বিপণন প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা যেমন হয়নি, তেমনি বাণিজ্যিক এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের সুবিধার্থে উপজেলা পর্যায়ে সমবায়, গুদাম এবং হিমাগার নির্মাণ হয়নি।
জেলার বিভিন্ন উইনিয়নে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় মাঠ সংগঠক, ইউনিয়ন সুপারভাইজার ও উপজেলা পর্যায়ে একজন সমন্বয়কারী রয়েছে। যাদের মাধ্যমে জেলায় প্রায় সাড়ে ৩২ হাজার সদস্যকে ঋণ প্রদান করা হয়েছে। সে হিসাবে জেলার প্রায় ৩২ হাজার বাড়িতে খামার স্থাপন হওয়ার কথা থাকলেও তার কোন ছিটে ফোটাও দেখা যায় না।
প্রথাগত ক্ষুদ্র ঋণ থেকে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের নতুন ধারণাকে কাজে লাগিয়ে উপকারভোগীদের পুঁজি গঠন ও দৃঢ় করার কাজটিও সঠিকভাবে না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন উপকারভোগীরা। খোজ কর্মকর্তারাই স্বীকার করছেন ‘এটি এখন আর প্রকল্প নাই, এটি এখন ক্ষুদ্র ঋণে পরিনত হয়েছে।’ সব মিলিয়ে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় যা যা বাস্তবায়ন করার কথা ছিল তার ছিটেফোঁটাও বাস্তবায়ন না হওয়ায় প্রকল্পের মূল্য উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হওয়ার উপক্রম। বরং কোটি কোটি টাকা ঋণ দিয়ে দিনের পর দিত বাড়ছে ঋণ খেলাপি। এতে উন্নয়ন ঘটেছে এই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা জেলার কর্মকর্তা কর্মচারীদের।
এ বিষয়ে খলিলনগরের মাঠ সংগঠক আনন্দ কুমার রায় বলেন, সব কথা খুলে বলা যায় না। আমার যে ঋণ বিতরণ করি তার শতকরা ৮০ জন সদস্য মাসিক কিস্তি পরিশোধ করতে রাজি না। তারা বছরে কিস্তি দিতে রাজি। বাকিরা মাসে কিস্তি প্রদান করে। অনেকে তো আবার চাপ দিচ্ছে সঞ্চয় ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। আমার আছি মহা চাপে। এক দিকে সদস্য ধরে রাখা যাচ্ছে না অন্য দিকে নতুন সমিতি করার জন্য উপর থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, খোজ নিয়ে জানা যায়, তালা উপজেলার সরুলিয়া ইউনিয়নের তৈলকুপ সমিতিতে ৬০ জন সদস্য রয়েছে। কর্মকর্তা কর্মচারীদের উৎকোচ না দেওয়ায় প্রায় ২ বছর ধরে এ সদস্যরা ঋণ সুবিধা হতে বঞ্চিত। বিষয়ে তারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট প্রতিকার চেয়ে আবেদন করছেন। অভিযোগে তারা উৎকোচ ছাড়া ঋণ না পাওয়া, ফিল্ড সুপারভাইজার রিয়াজ ও মাঠ সংগঠক পলাশ ঋণের ৩ লাখ টাকা উত্তোলণ করে অফিসে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করা, তৈলকুপি পাটকেলঘাটা সমিতির সদস্যদের ২ বছরে অফিসের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী খোঁজ খবর না নেওয়া, লোনের জন্য বার বার অফিসে ধর্ণা দিয়েও ঋণ না পাওয়া, লোনের কথা বলে প্রতিনিয়ত ঘুরানো ও টাকা ছাড়া ফাইন না ছাড়ারও অভিযোগ করেছে।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, প্রকল্পে সমিতির সদস্য করা হয়েছে সচ্ছল ও ধনী ব্যক্তিদের। প্রকৃতপক্ষে যারা গরীব অসহায় এবং বেকার তারা সদস্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ প্রকল্পের সাথে যুক্ত সদস্য ও কর্মকর্তাদের নিজেদের লোকজনের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে ঋণের টাকা। ফলে প্রকল্পের সুফল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন গরীব ও অসহায় ব্যক্তিরা। অনেকের অভিযোগ, প্রকল্পে ঋণ ছাড় করাতে সংশ্লিষ্টদের উৎকোচ দিতে হয়েছে। উৎকোচ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় অনেকের কপালে জোটেনি ঋণের টাকা।
এ বিষয়ে ফিল্ড সুপারভাইজার রিয়াজের সরাসরি বক্তব্য, ভাই কাজ করলে ভুল হয় এতে রিপোর্ট করার কি আছে।
এ বিষয়ে তালা উপজেলা সমন্বয়কারী মৌসুমী সুলতানা বলেন, আমি এসেছি কিছু দিন হলো। আমার অফিসের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর অবহেলার কারণে সমিতির গ্রাহকরা ঋণ সুবিধা হতে বঞ্চিত হয়েছে। আমি যত দ্রুত সম্ভব ঋণ দেওয়ার জন্য চেষ্টা করবো।
অভিযোগের সদস্যতা স্বীকার করে তালা উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার বলেন, সমিতির সদস্যরা আমার কাছে এসেছিলো। তারা ২ বছর ধরে ঋণ সুবিধা পায়নি বলে অভিযোগ করেছে। এ বিষয়ে একটি বাড়ী একটি খাবার প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তাদের ঋণ দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, দারিদ্র্যকে জয় করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার একটি বাড়ী একটি খাবার প্রকল্প চালু করেছে। এ প্রকল্পের কোন বিষয় নিয়ে যদি কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী দুর্নীতি বা অনিয়ম করে তাহলে তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সার্বিক বিষয়ে সাতক্ষীরা বিআরডিবি’র উপ পরিচালাক মো. সৈয়দ আলী বলেন, জেলায় সদস্যরা এখন প্রচুর টাকা সঞ্চয় করছে এবং সরকার থেকে যে অনুদান দেওয়া হচ্ছে সব মিলিয়ে সদস্যদের ঋণ দেওয়া হয়। তবে, সরকার যে অনুদান দেয় সেটি অফেরতযোগ্য। এটি সদস্যদের ফিরিয়ে দিতে হয়না।
তিনি আরও বলেন, যাদের ঋণ নেওয়া হয় তাদের বাড়িকেই আমরা খামার হিসেবে ধরে নেই।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পে থাকে অনেক কিছু কিন্তু সব কিছু বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। প্রকল্পটি যে উদ্দেশ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল এখন আর সে অবস্থা নেই। এটি এখন ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি পল্লী সঞ্চয়ী ব্যাংকে রুপান্তিত হবে। তখন প্রকল্পটি ব্যাংকের নিয়েমেই চলবে।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।