নির্দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে : মওদুদ

ক্রাইমবার্তা রিপোট: ১৯৯১ সালের মতোই সংবিধানের বাইরে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে একাদশ নির্বাচন হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

আজ সোমবার সকালে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি বলেন, সংবিধান কোনোদিন বাধা হতে পারে না মানুষের কল্যাণের জন্য। কারণ সংবিধান মানুষের জন্য, সংবিধানের জন্য মানুষ নয়। ১৯৯১ সালের নির্বাচন আপনাদের মনে আছে। বিচারপতি সাহাবুদ্দিন সাহেব প্রধান বিচারপতি থাকা অবস্থায় তিনি অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান হয়েছিলেন। সেটা কী সংবিধানে ছিলো? ছিলো না। পরে একাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সেটাকে বৈধতা দেয়া হয়েছিলো। এখানেও তাই হবে। আজকে সরকার বলছে যে, নির্বাচনকালীন সরকার হবে। এই ধরনের সরকার বলতে সংবিধানে কিছুই নাই। তার মানে সংবিধানের বাইরে গিয়ে তারা এই সরকার করতে চাচ্ছেন। তাহলে আমরা যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কথা বলছি সেটাও তো সংবিধানের বাইরে থেকেও করা যায়।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে এই প্রতিবাদ সভা হয়। সংগঠনের সভাপতি সাঈদ হাসানের মিন্টুর সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সরকারের উদ্দেশে সাবেক আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের বাইরে গিয়ে যদি আপনারা নির্বাচনকালীন সরকার করতে রাজি হন তাহলে আসুন সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের ব্যবস্থা করি। এতে দেশের মানুষ আশান্বিত হবে, দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে,একটা নির্ভেজাল গণতন্ত্র হবে। সেই নির্বাচনে দেশের মানুষ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে এবং সত্যিকার অর্থে একটা প্রতিনিধিত্বশীল সরকার আমরা সেই নির্বাচনের মাধ্যমে পাবো।

তিনি বলেন, সরকারের সাথে আমাদের তফাতটা হলো তারা সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার করতে চায়। এই নির্বাচন কালীন সরকারের কারা থাকবেন? যিনি প্রধানমন্ত্রী আছেন তিনি থাকবেন, এখন যারা মন্ত্রী আছেন তাদের মধ্যে বেশির ভাগ মন্ত্রীই থাকবেন। তাদের অধীনেই প্রশাসন থাকবে, পুলিশ বাহিনী থাকবে, র‌্যাব থাকবে। নির্বাচন পরিচালনা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আজকে যারা বলছেন যে, নির্দলীয় সরকার অসাংবিধানিক। তারা ১৯৯৫-৯৬ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, নির্দলীয় তত্ত্বাবথায়ক সরকার ব্যবস্থা তার ধারণা, এটা তার ব্রেইন চাইল্ড। তারা ১৭৩ দিন হরতাল করেছিলেন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। আজকে তারাই উল্টো কথা বলেছেন।

জাতিসঙ্ঘে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সফর সম্পর্কে সরকারের বক্তব্যের জবাবে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বড় বড় নেতারা যে ভাষায় কথা বলেছেন তাতে মনে হচ্ছে যে, তারা খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে, তারা খুবই আতঙ্কিত হয়েছেন বলে মনে হয়। কী করে এটা সম্ভবপর হলো জাতিসংঘ থেকে বিএনপিকে দাওয়াত দেবে জাতিসঙ্ঘ যাওয়ার জন্য। এটা তাদের সহ্য হয় নাই। তারা অনেক বিরূপ মন্তব্য করেছেন যার সঙ্গে সত্যের কোনো সম্পর্ক নাই। যেমন একটা উদাহরণ দেই। আমাদের মহাসচিব কখনোই বলেন নাই যে, তিনি জাতিসংঘের মহাসচিবের সাথে সাক্ষাৎ করবেন। সকলেরই জানা এটা কখনো এই পর্যায়ে হয় না। সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল ও তার টিমের সাথে আমাদের মহাসচিবের নেতৃত্বে সাক্ষাৎ করেছেন। সেখানে তারা কোনো নালিশ করতে যান নাই, সরকারের সমালোচনা করতে যান নাই। তারা গেছেন দেশের বর্তমান বাস্তব অবস্থা তুলে ধরার জন্য। এটা আমাদের মহাসচিবের দায়িত্ব ছিলো এটাকে উপস্থাপন করেছেন। দেশে সত্যিকারের অবস্থাটা কী, আইনের শাসনের কী অবস্থা, বিচার বিভাগের কী অবস্থা, মৌলিক অধিকারের কী অবস্থা, বিচারবর্হিভুত হত্যাকাণ্ড হচ্ছে, গুম হয়ে গেছে তিন শত নেতাকর্মী- এগুলো তিনি তুলে ধরেছেন। সরকার এতে বিচলিত হয়েছে।’

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।