ক্রাইমবার্তা রির্পোটঃআগামী মাস অর্থাৎ অক্টোবরের শেষ সপ্তাহেই নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ওই সরকারের আকৃতি হবে খুব ছোট এবং সেই সরকারে পার্লামেটের বাইরের কেউ থাকবে না। নিজের লেখা উপন্যাস ‘গাঙচিল’ অবলম্বনে সিনেমা নির্মাণ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।
বুধবার বেলা ১২টায় ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত ‘গাঙচিল’ ছবির মহরত অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের কোন কথা বলেননি। এই কারণেই সংবাদ সম্মেলনের পর মন্ত্রীকে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে আলাদাভাবে প্রশ্ন করা হয়। এ সময় ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, বিএনপির স্বভাবই হচ্ছে সরকারকে দোষারুপ করা। আমরা তাদের দোষারুপ আর হুমকিতে ভীত নই। বিএনপির মহাসচিবের সাম্প্রতিক নিউ ইয়র্ক সফর নিয়ে তিনি বলেন, তারা দেশের মানুষের আস্তা অর্জন করতে ব্যার্থ হয়ে দেশের বাইরে গিয়ে সরকারের বদনাম ছড়াচ্ছে। আর জাতিসঙ্ঘের আমন্ত্রণের যে ভিত্তিহীন সংবাদ বিএনপির পক্ষ থেকে ছাড়ানো হচ্ছে, সেটাও জনগনের কাছে প্রকাশ হয়ে গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেব যখন নিউ ইয়র্ক সফরে গিয়ে ছিলেন তখন জাতিসংঘের মহাসচিব ঘানায় সাবেক মহাসচিব কফি আনানের অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া ছিলেন। আর ওই সময়টায় ফখরুল সেখানে নিজ উদ্যেগে গিয়ে প্রচার করেছে জাতিসংঘের আমন্ত্রণে তারা সেখানে গিয়েছিলেন।
জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে গেলে নির্বাচনী এলাকার মোট ভোটারের ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর নেয়ার যে রীতি এবং ওই রীতিকে চ্যালেঞ্জ করে করা মামলার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত তফিলে ঘোষণা না করার যে একটা রিট করা হয়েছে সে বিষয়েও মন্ত্রী অবহিত আছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে এমন অনেক ষড়যন্ত্র হয়, এগুলোকে পাত্তা দিলে চলবে না। নির্বাচন সঠিক সময়ে হবে এবং যথা সময়েই তফসিল ঘোষণা করা হবে।
এর আগে‘গাঙচিল’চলচ্চিত্রের মহরতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, তথ্যপ্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এবং সিনেমার পাত্র-পাত্রীরা। নোয়াখালী অঞ্চলের একটি দ্বীপের মানুষের জীবন কাহিনী নিয়ে এই উপণ্যাস। যার প্রধান চরিত্রগুলোতে অভিনয় করবেন ফেরদৌস, ঋতুপর্ণা ও পূর্ণিমা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাসানুল হক ইনু বলেন, জনাব ওবায়দুল কাদের ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতি করতেন, তখন থেকেই তিনি লেখালেখিও করতেন। আর তার লেখাতে সব সময়ই বাংলাদেশের মানুষ ও সংস্কৃতি স্থান পেয়েছে। আশাকরি তার উপন্যাস ‘গাঙচিলে’ও তাই প্রাধান্য পেয়েছে। তবে চিত্রনাট্য এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই ছবির পরিচালক নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল যদি সেই জায়গাটা যথাযতভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে তাহলে এই ছবি বাংলাদেশের বাইরে আন্তর্জাতিক মহলেও প্রসংসিত হবে।
সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘দুজন মন্ত্রীর বিলম্ব দেখে আমাকে বক্তৃতা দীর্ঘায়িত করতে বলা হয়েছে। আমি নিজে অভিনয়ের মানুষ। মঞ্চে কাজ করেছি, নাটকে কাজ করেছি, একবার চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছি। আমি সেই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলাম, সেখানে নায়িকা ছিল চম্পা। একটা নাচের দৃশ্যে চম্পার সাথে আমাকে অনেক বেমানান মনে হয়েছিল। তখন থেকেই আমি আর চলচ্চিত্রে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, বিরোধী দল থেকে আজকাল আমাকে প্রায়ই অপমান করার জন্য অন্য পরিচয় বাদ দিয়ে ‘অভিনেত্রী’ ছিলেন বলেন উপহাস করা হয়। কিন্তু তারা জানে না, এই পরিচয়টি আমার কাছে কত মূল্যবাদ। রাজনীতিবিদ, আইনজীবীর মতোই আমার কাছে ‘অভিনেত্রী’ পরিচয়টাও সমান। আমার মনে হয়, সুস্থ রাজনীতির জন্য সংস্কৃতি অঙ্গনের মানুষের আরো বেশি করে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়া প্রয়োজন।