ক্রাইমবার্তা রির্পোটঃ যশোর: যশোরের ৮টি উপজেলার চলতি আমন চাষ মৌসুমে অধিকাংশ কৃষকের ধান ক্ষেতে মাজরা পোকার ব্যাপক আক্রমন দেখা দিয়েছে। মাজরার আক্রমনের ফলে ধানের গাছ বাদামী রঙ্গের হয়ে পড়েছে। কৃষকরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে হতাশায় ভূগছেন। মাজরা পোকার আক্রম এতটা ভয়াভহ যে বিভিন্ন বালাইনাশক ধান ক্ষেতে ছিটিয়েও পোকা দমন করা যাচ্ছেনা বলে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা জানিয়েছেন। এ সুযোগে উপজেলার বিভিন্ন্ হাট-বাজারের এক শ্রেণীর মুনাফা লোভী ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের সাথে প্রতারনা করে চড়া মূল্যে বিভিন্ন কোম্পানীর নিন্মমানের বালাইনাশক বিক্রি করে ফায়দা লুফে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে কৃষি বিভাগের উপ-সহকারীরা ক্ষতিগ্রস্থ ওই সকল কৃষকদের ধান ক্ষেতের পোকা দমনের পরামর্শ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সূত্র মতে যশোর জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে চলতি এ আমন চাষ মৌসুমে যশোর জেলার ৮ টা উপজেলাতে হাজার হাচার হেক্টর চাষ হয়েছে। জেলার ৮টা উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে খোঁজ খবর নিয়ে দেখা যায় ধান ক্ষেতে মাজরা পোকার আক্রমণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলের। কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, এবার জেলায় প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর আমন ধানের ক্ষেতে মাজরা পোকায় আক্রান্ত হয়েছে। দেখা গেছে ঐ পোকা ধান গাছের গোড়া থেকে কেটে দিচ্ছে। যে কারনে ধান গাছ গুলি বাদামী রং হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। নরেন্দুপন গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মতিন জানান জানান, তার ৩ বিঘা জমির ধান মাজরা পোকায় কেটে দিয়েছে। তিনি আরো জানান, ওই মাঠে অন্যান্য কৃষকরা যে ধান লাগিয়েছিল তাও মাজরা পোকায় কেটে দিয়েছে। ঢাকুরিয়া কৃষক আ: রহিম জানান, সে ১ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করে মাজরা পোকার আক্রমনে সে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন। তাদেরসহ এলাকার অধিকাংশ কৃষকদের ধান ক্ষেত মাজরা পোকায় আক্রান্ত হয়ে ধান গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে আশাতিত আমন ফসল না হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। কিন্তু মাজরা পোকা যেভাবে লেগেছে তা কোন অবস্থাতেই ঠেকানো সম্ভব হয়ে উঠেনি। ফলে সংসারে বছরে যে ধান-চাল লাগবে তাও বাড়ীতে আসবে কিনা তা এমুহুর্তে বলা মুশকিল। একই গ্রামের সরদার জালাল উদ্দীন জানান, ৮ বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করে কীট নাশক কিনতে কিনতে ফতুর হওয়ার পথে। মাজরা পোকা না ছাড় দিলে শেষ পর্যন্ত সে কীট নাশকের পয়সা ঘরে আসবে কি-না তা বলা মুশকিল। এ ব্যাপারে মনিরামপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তা রবি সরকার জানান, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় এবং প্রচ- খরার পর, বৃষ্টিপাত না হওয়ার করনে মাজরা পোকার আক্রম একটু বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে এর প্রতিকার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ধানের চারা রোপনের সাথে সাথে ক্ষেতে ডাল পালা পুতে রাখলে মাজরা পোকা এমনভাবে বৃদ্ধি পেত না। কারন হিসাবে উলে¬খ করেন ওই ডাল পালার পরে পাখি বসে এবং বিভিন্ন প্রজাতির পোকা পাখিতে ধরে খেয়ে ফেলে। আর এতেই পোকার আক্রমন অনেকটা কম হয়। এর পাশাপাশি শক্তিশালী কোন তরল বা দানা জাতীয় বিষ ব্যবহার করলে মাজরা পোকা দমন হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের উপ-সহকারীরা উপজেলা কৃষি অফিসকে জানিয়েছেন এপর্যন্ত মাজরা পোকায় আক্রান্ত জমির পরিমান কয়েকশ’ হেক্টর। তারা ধার দেনা পরিশোধ করা তো দুরের কথা আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতির সম্মূখীন হবেন। এব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার পার্থ প্রতিম সাহা জানান, মাঝখানে অতিমাত্রা এবং টানা বর্ষণের ফলে ধান বেশী পরিমান নরম হয়ে পড়ে। এ সুযোগে মাজরাসহ বিভিন্ন জাতের পোকার আক্রমণ দেখা মিলেছে ধান ক্ষেতে। তবে এক্ষেত্রে কৃষি অফিসার ছাড়াও চাষীদের আরো সচেতন হতে হবে ফসল তৈরীর ক্ষেত্রে।
Check Also
সাতক্ষীরায় পুত্রবধূর হাতে নির্যাতিত সেই স্কুলশিক্ষক মারা গেছেন
ক্রাইমবাতা রিপোট, সাতক্ষীরা: ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা …