স্টাফ রিপোর্টার : ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেয়ার নয় দিনেও সন্ধান মেলেনি নিখোঁজ পাঁচ ব্যক্তির। কোথাও সন্ধান মিলছে না এমন অভিযোগে করেছেন তাদের পরিবার। ঢাকার প্রতিটি থানায়, ডিবি অফিসে খোঁজ নিয়েছেন। কিন্তু কেউই নিখোঁজদের বিষয়ে কোন তথ্য দিতে পারছেন না। এ নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলনও করা হয়েছে।
নিখোঁজরা হলেন, ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখার সভাপতি শাফিউল আলম, হাইটেক বাংলার কর্মকর্তা মনিরুল আলম, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী মো. আবুল হায়াত, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী শফিউল্লাহ ও ডগাইর ফাজিল মাদরাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসাইন মায়াজ।
নিখোঁজ শাফিউল আলম ও মনিরুল আলমের মা রমিছা খানম জানান, গত ১২ই সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে প্রথমে আমার দুই সন্তান ও তার বন্ধু মো. আবুল হায়াতকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে গেছে। ওইদিন পবিত্র হজ্ব পালন শেষে ঢাকায় পৌঁছে সন্ধ্যা সাড়ে ৮টায় বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফেরার জন্য আমরা মাইক্রোবাসে উঠি। হঠাৎ একদল অপরিচিত লোক আমার দুই ছেলেকে বহু মানুষের সামনে গাড়ী থেকে নামাতে টানা হেঁচড়া শুরু করে। তাৎক্ষণিক আমাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ওরা পরিচয়পত্র ও অস্ত্র দেখিয়ে নিজেদের সাদা পোশাকদারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী (ডিবি) দাবী করে। চোখের সামনে থেকে আমার সাথে থাকা দুই ছেলে শাফিউল আলম ও মনিরুল আলমকে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় সঙ্গে থাকা আমার ছোট ছেলের বন্ধু আবুল হায়াতকেও তুলে নিয়ে যায়। পরে সে রাতেই আমার ছেলে শাফিউলকে নিয়ে গভীর রাতে তাঁর বাসায় যায় তারা। এসময় বাসায় ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা শাফিউলের অপর দুই রুমমেট সফিউল্লাহ ও মোশারফ হোসাইন মা’য়াজকেও তুলে নিয়ে যায়। যার মধ্যে মোশারফ হোসাইন মা’য়াজ নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
তিনি বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন থানা ও ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে যোগাযোগ করলেও প্রশাসনের কেউ এ বিষয়ে কিছু স্বীকার করছেন না। এমতাবস্থায় আমাদের সন্তানদের নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমি একজন মা! গত কয়েকদিনে আমার দুই সন্তানের খোঁজ না পেয়ে আমার চোখের পানিও শুকিয়ে গেছে। আমার পাশে বসে থাকা মায়েরও একই অবস্থা। সন্তানকে না পেয়ে এই মায়েরাও বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। সন্তানদের খুঁজছেন। ইতিমধ্যে দুজন মা তাদের সন্তানদের শোকে অসুস্থ হয়ে পরেছেন। দয়া করে আমাদের সন্তানদের সন্ধান দিন। দেশের আইনে তারা যদি কোনো অপরাধ করে থাকে তাদের জন্য আইন আছে। তাদেরকে আদালতে হাজির করে আইনের আওতায় আনুন।
অভিভাবকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, আমাদের চোখের সামনে থেকে সন্তানদের তুলে নেয়ার ৯ দিন পরেও এখনো সন্ধান না দেয়ায় আমরা গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। আইন অনুযায়ী আমাদের সন্তানদের সাথে আমাদের দেখা করার সুযোগ থাকলেও তা দেয়া হচ্ছেনা। ৯ দিন পরও তাদেরকে আটক না দেখানো দেশের প্রচলিত আইনে বে আইনি। এমনকি উচ্চ আদালতের নির্দেশেরও সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। যা অস্বাভাবিক বিষয়। আমরা এখন আমাদের সন্তানদেরকে নিয়ে শঙ্কিত।