ক্রাইমবার্তা ডেস্ক রির্পোটঃ টার্গেট ছোট, তাই অনায়াসেই জয় তুলে নিল ভারত। ব্যাটসম্যানদের মতো বাংলাদেশের বোলাররাও কোন প্রতিদ্বন্দ্বীতা ঝাঁঝ তৈরি করতে পারেনি ভারতের জন্য। ফলে রোহিত শর্মার দল ১২ ওভার চার বল হাতে রেখেই তুলে নিয়েছে ৭ উইকেটের জয়। এই জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক রোহিত। রান করেছেন ভারতীয় অধিনায়ক অপরাজিত ৮৩।
১৭৪ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতেই ৬১ রান তোলে ভারতীরা। ১৫তম ওভারে ব্যক্তিগত ৪০ রানে সাকিব আল হাসানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান ওপেনার শেখর ধাওয়ান। দ্বিতীয় উইকেটে রোহিতের সাথে ৪৫ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন অম্বতি রাইডু, তাকে ফিরিয়েছেন রুবেল হোসেন। ভারতীয় দলের রান তখন একশ পার হয়েছে-ম্যাচ ভারতের পকেটে। দুই সঙ্গী বিদায় নিলেও অন্য প্রান্তে সপাটে ব্যাট চালিয়ে চলছেন ভারতীয় অধিনায়ক। সময় যতো গড়িয়েছে রোহিতের ব্যাট ততই চড়াও হয়েছে বাংলাদেশী বোলারদের ওপর। তৃতীয় উইকেটে তর সাথে যোগ দিয়েছেন উইকেট রক্ষক মহেন্দ্র সিং ধোনী। এই জুটি মাত্র ৬৪ রানের পার্টনারশী গড়ে জয় থেমে মাত্র চার রান দূরে থাকতে আউট হন এমএস ধোনী।
রোহিত শর্মা ম্যাচ শেষ করেই ফিরেছেন। অপরাজিত ছিলেন ৮৩ রানে। ১০৪ বলের ইনিংসে ছিলো ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে টানা দ্বিতীয় ম্যাচের মতো ব্যাটিং বিপর্যয় বাংলাদেশ দলের। রীতিমতো অসহায় আত্মসমার্পণ। আগের দিন আফগানিস্তানের বিপক্ষে যা হয়েছিলো শুক্রবার যেন একই স্কিপ্ট মঞ্চায়িত হলো এশিয়া কাপে। ফলে সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে ১৭৩ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা ভারতীয় স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজা একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট।
উইকেট বুঝেই এদিন স্পিন নির্ভর দল গড়েছিলো রোহিত শর্মার দল। ফলটাও পেয়েছে হাতে নাতে। পেসাররা শুরুটা করলেও উইকেটের ধস নামিয়েছে স্পিনাররা। নূন্যতম লড়াই করার মানসিকতা দেখা যায়নি ব্যাটসম্যানদের। ফলে স্কোর বোর্ডে ৬৫ রান তুলতেই একে একে সাজঘরে ফিরে গেছেন টপ অর্ডারের ৫ ব্যাটসম্যান।
আগের ম্যাচের মতোই ব্যর্থ ছিলেন দুই ওপেনার। স্কোর বোর্ডে ১৬ রান তুলতেই ফিরে যান দুই ওপেনার লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত। ভুবনেশ্বরকে পুল করতে গিয়ে লিটন বল তুলে দেন ডিপ স্কয়ার লেগে। আর এক রান পরই শান্ত স্লিপে ক্যাচ দেন বুমরাহর বলে। আগের দিন আফগানিস্তানের বিপক্ষেও হতাশ করেছিলো এই জুটি। শুক্রবারও দুজনেই ফিরেছেন ব্যক্তিগত ৭ রান করেও।
ওপেনারদের বিদায়ের পর জুটি বাঁধেন দলের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসান ও মোহাম্মাদ মিথুন। কিন্তু সাকিবও ক্রিজে স্থায়ী হতে পারেননি। পাল্টা আক্রমণে খেলতে শুরু করেন সাকিব। ১২ বলে ৩ চারে করেছেন ১৭ রান; কিন্তু তার সেই কৌশল সফল হয়নি। রবীন্দ্র জাদেজার বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। সাকিবকে দিয়েই শুরু ম্যাচের জাদেজা অধ্যায়।
তার দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়েছেন মোহাম্মাদ মিথুন, সেটা ইনিংসের ১৬তম ওভারে। আর জাদেজার পরের ওভারে অর্থাৎ ম্যাচের ১৮তম ওভারে নিজের প্রিয় স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে চাহালের হাতে সহজ ক্যাচ তুলে ফিরে যান সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম। ফলে ৬৫ রানের মধ্যেই ৫ উইকেট হারাতে হয় বাংলাদেশকে।
এরপর উইকেকেট থাকা মাহমুদুল্লাহ আর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত রীতিমতো সংগ্রাম করেছেন রান তুলতে। মোসাদ্দেক ৪৩ বলে ১২ রান আর মাহমুদুল্লাহ ৫১ বলে ২৫ রান করে ফিরেছেন। মোসাদ্দেক জাদেজার চতুর্থ শিকার আর মাহমুদুল্লাহ ভুবনেশ্বরে দ্বিতীয়। দুজনেই ফিরেছেন দলীয় ১০১ রানে।
অষ্টম উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজ আর মাশরাফি বিন মুর্তজার ৬৬ রানের জুটিতে দেড়শ চাড়িয়েছে দলের স্কোর; শেষ পর্যন্ত পঞ্চাশ তম ওভারের প্রথম বলে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১৭৩ রানে। মিরাজ সর্বোচ্চ ৪২ রান করেছেন। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে জাদেজা ৪টি, এবং বুমরাহ ও ভুবনেশ্বর ৩টি উইকেট নিয়েছেন।