ক্রাইমবার্তা ডেস্ক রির্পোটঃ এশিয়া কাপ যেন ভুলেই গিয়েছিলো টানটান উত্তেজনার ম্যাচ উপহার দিতে, এ পর্যন্ত যা হয়েছে সবাই একপেশে লড়াই। তবে শুক্রবার পাকিস্তান-আফগানিস্তান ম্যাচ সেই ঘাটতি পুষিয়ে দিয়েছে দর্শকদের। শ্বাসরুদ্ধকর না হলেও ম্যাচে উত্তেজনা ছিলো শেষ ওভার পর্যন্ত। পাকিস্তান ম্যাচ জিতেছে ৩ বল বাকি থাকতে, ৩ উইকেটে।
২৫৮ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই সিঙ্গেল, ডাবলের ভিত্তিতে খেলেছে পাকিস্তান। তবে শেষ সময়ে আস্কিং রেট বেড়ে যাওয়ায় ম্যাচটি জমে উঠে। ৪৫ ওভার থেকেই ক্রমশ উত্তেজনা। আস্কিং রেটের সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে উইকেট হারিয়েছে পাকিস্তান, ৪৫তম ওভারে সরফরাজ আহমেদ আউট হয়ে যাওয়ার পর বোলাররটা আসতে থাকে ক্রিজে, তাই এক প্রান্তে পড়তে থাকে উইকেট।
তবে অন্যপ্রান্তে তখনও অবিচল শোয়েব মালিক। ধৈর্য্য আর নিষ্ঠার সাথে ম্যাচটা শেষ করেই ফিরেছেন সাবেক এই অধিনায়ক। একটি বারের জন্যও তাকে দেখা যায়নি রানের জন্য মরিয়া হয়ে ব্যাটিং করতে, শেষ ওভারের আগ পর্যন্ত তার ৪১ রানের মধ্যে ছিলো মাত্র ২টি চার- এথেকেই বোঝা যায় কতটা ধৈর্যের সাথে খেলেছেন মালিক। শেষ ওভারে এসে পরপর দুই বলে ছক্কা আর চারে ম্যাচ শেষ করেছেন। মূলত তার অভিজ্ঞতার কাছেই হেরেছে আফগানিস্তান। তাড়াহুড়ো না করেও কিভাবে ক্লোজ ম্যাচ শেষ করতে হয় সেটাই যেন দেখালেন মালিক।
শেষ ছয় ওভারে পাকিস্তানের দরকার ছিলো ৪৯ রান। ৪৫তম ওভারে আউট হয়ে যান সরফরাজ আহমেদ। শেষ চার ওভারে দরকার ছিলো ৩৯ রান, ৪৭তম ওভারে রশিদ খান এসে আসিফ আলীর উইকেট তুলে নিলেও রান দিয়েছেন ১০টি। পরের ওভারে আফতাব দিয়েছেন ১১ রান। ম্যাচ ঝুলে পড়ে পাকিস্তানের দিকে। ৪৯তম ওভারে আবার নওয়াজের উইকেট তুলে নেন রশিদ, তবে রান খরচ করেন ৮টি। শেষ ওভারে সামনে আসে ১০ রানের সমীকরণ। শোয়েব মালিক স্ট্রাইক নেন। প্রথম বলে সিঙ্গেল নেয়ার সুযোগ থাকলেও নেননি। পরের বলে মিড উইকেটের ওপর দিয়ে গ্যালারিতে আছড়ে ফেলেন আফতাব আলমকে। পরের বলেই স্কয়ার লেগ দিয়ে চার।
এর আগে পাকিস্তানের টপ অর্ডারে ইমাম উল হক ও বাবর আজম ইনিংস গড়ে দিয়েছেন। ওপেনার ফখর জামান শূন্য রানে ফিরে যাওয়ার পর দ্বিতীয় উইকেটে তারা গড়েছেন ১৫৪ রানের জুটি। কিন্তু চার রানের মধ্যে ইমাম(৮০) ও বাবরকে ফিরিয়ে ম্যচ জমিয়ে তোলে আফগানিস্তান। একের পর এক উইকেট গেলেও শেষ পর্যন্ত শোয়েব মালিক ম্যাচ শেষ করেই ফিরেছেন। মালিক অপরাজিত ছিলেন ৪৩ বলে ৫১ রান করে।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৩১ রানের মধ্যে দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা বিপাকে পড়েছিলো আফগানিস্তান। অভিষিক্ত পাকিস্তানি স্পিনার মোহাম্মাদ নওয়াজ(৩) জোড়া আঘাতে তুলে নিয়েছেন দুই ওপেনারকে। কিন্তু মিডল অর্ডারের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ঘুরে দাড়ায় দলটি। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬৩ রানের পার্টনারশিপ গড়েন রহমত শাহ ও হাসমতুল্লাহ শহীদি। দলীয় ৯৪ রানে এই জুটিও ভাঙেন নওয়াজ। ব্যক্তিগত ৩৬ রানে রহমত ফিরে যাওয়ার পর অধিনায়ক আসগর আফগানকে নিয়ে আরেকটি জুটি গড়েন শহীদি। মূলত এই জুটিই আফগানদের ম্যাচে চালকের আসনে বসায়।
বাংলাদেশ ম্যাচের মতোই শেষ দিকে রানের গতি বাড়ায় দলটি। আসগর ফিরে যান অভিষিক্ত পাকিস্তানি পেসার শাহেন শাহ আফ্রিদির বলে। ততক্ষণে দলের স্কোর পৌছে গেছে ১৮৮ রানে। ৬৭ রান করেন আফগান অধিনায়ক। ওই স্পেলের পরের ওভারেই মোহাম্মাদ নবীকেও ফিরিয়েছেন এই তরুণ। মোহাম্মাদ আমিরকে বিশ্রামে রেখে তাকে নামানোর যৌক্তিকতা প্রমাণ কিছুটা হলেও করেছেন নওয়াজ।
তবে এক প্রান্ত আগলে ছিলেন শহীদি। সপ্তম উইকেটে গুলবুদ্দিন নাইবকে নিয়েও ৪৫ রানের আরো একটি জুটি গড়েছেন শহীদি, শেষ পর্যন্ত ৯৬ রানে অপরাজিত ছিলেন এই ব্যাটসম্যান। তার ১১৮ বলে ইনিংসে ছিলো ৭টি চার। মোহাম্মাদ নওয়াজ ৩টি ও শাহেন শাহ আফ্রিদি ২টি উইকেট নিয়েছে।