জনবল সংকটে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: অপারেশন থিয়েটার বন্ধ ৩ বছর

ক্রাইমবার্তা রিপৌট:কলারোয়া: বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও জনবল সংকটে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবা তলানিতে পৌঁছেছে। উপজেলার পাঁচ লক্ষ মানুষের বিপদের সাথী কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার এবং উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসারের ৩৪টি পদের বিপরীতে চিকিৎসক রয়েছে মাত্র তিনজন। অ্যানেস্থেশিয়া বিশেষজ্ঞ না থাকায় দীর্ঘ তিন বছরযাবত বন্ধ রয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটার। এতে চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হয়ে সাধারণ মানুষকে বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে প্রাইভেট ক্লিনিকে। ফলে খরচের সাথে সাথে বেড়েছে দুর্ভোগ ও হয়রানি।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ রোগীর ভিড় জমে। ৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও ভর্তি থাকে আরও বেশি রোগী। এতে রোগীদের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খায় কর্তৃপক্ষ। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় কোন মতে দেওয়া হয় চিকিৎসা সেবা। তারউপর রয়েছে দালালদের দৌরাত্ম্য। এছাড়া সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে কলারোয়া হাসপাতালের চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভোগান্তি দিন দিন বাড়ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়েও ডাক্তার দেখাতে পারছে না রোগীরা। জনবল সংকটে হাসপাতালের সব বিভাগেই দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। একে তো চিকিৎসক সংকট, তারউপর আবার সময়মতো ডাক্তার না আসায় অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষ।
অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালের গেট থেকে ওয়ার্ডের বেড পর্যন্ত যেতে দফায় দফায় টাকা দিয়েই মেলে কাক্সিক্ষত সেবা। হাসপাতালে রোগী ভর্তি থেকে শুরু করে শয্যা পাওয়া, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো, হাসপাতালের প্রবেশদ্বার, জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগ দালাল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
হাসপাতালে ভর্তি এক রোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রোগীদের বিছানাপত্র, আ্যপ্রোনসহ ব্যবহৃত কাপড়-চোপড় নোংরা ও দূষিত পচা পানিতে ধোয়া হয়। রোগীর মলমূত্র, পুঁজ আর রক্তমাখা এসব কাপড়-চোপড়, চাদর, বালিশের কভার কোনোমতে ধুয়ে শুকানো হয় ময়লা-ধুলাবালির নোংড়া পরিবেশেই। প্রয়োজনের সময় পাওয়া যায় না হাসপাতালের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স, অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারের ফোন সব সময় বন্ধ থাকে।
পৌরসদরের গদখালি গ্রামের খালিদ ইসলাম জানান, হাসপাতাল থেকে সরকারি ওষুধ পাওয়া যায় না। ওষুধ চলে যায় কালোবাজারে, পাওয়া যায় দোকানে। এর আগে কলারোয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালে কলারোয়া বাজারে অবস্থিত মৌসুমী ফার্মেসিতে পাওয়া যায় সরকারি ওষুধ।
কলারোয়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। ডাক্তার ও জনবল সংকটের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অতিদ্রুত সময়ে বন্ধ অপারেশন থিয়েটার চালু করার চেষ্টা চালাচ্ছি।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. তাওহীদুর রহমান জানান, আমি স্বাস্থ্য বিভাগকে ডাক্তার ও জনবল সংকটের বিষয়টি জানিয়েছি। আগামী ২-৩ মাসের ভেতর এই সমস্যা সমাধান হতে পারে। এছাড়া জেলার সব হাসপাতালের ভেতরের ও বাইরের পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত, পরিচ্ছন্ন, দুর্গন্ধ ও ভোগান্তিমুক্ত রাখার ব্যাপারে ইতোমধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Check Also

আশাশুনিতে ফারইস্ট ইসলামী লাইফের ব্যবসা পর্যালোচনা ও কর্মী সভা অনুষ্ঠিত

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান(আশাশুনি)সাতক্ষীরা।।আশাশুনিতে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এর ব্যবসা পর্যালোচনা ও কর্মী সভা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।