নাটোরে বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণে আদিবাসী নেতার ঘুষ নেয়ার অভিযোগ

মোঃ রিয়াজুল ইসলাম:  নাটোর প্রতিনিধি:নাটোরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ ও বাইসাইকেল বিতরণে আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সংস্থার এক নেতার বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ভাবে স্থানীয় সংসদ সদদস্য মোঃ শফিকুল ইসলাম শিমুল ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বানু সব টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। নাটোর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের মোট একশ’ ৫০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে সরকারী অর্থায়নে স্কুল ব্যাগ ও সাইকেল বিতরণের আয়োজন করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, নামের তালিকা তৈরীর পর থেকেই নাটোর আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক নরেশ চন্দ্র ওঁড়াও স্কুল ব্যাগ প্রতি প্রত্যেক ছাত্রের কাছ থেকে নগদ একশ’ টাকা করে ও বাই সাইকেল দেয়ার জন্য ৫০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে দুইশ’ থেকে ছয়শ’ টাকা করে আদায় করেছেন। শিক্ষার্থীরা সোমবার নাটোর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে শিক্ষা উপকরণ নিতে এসে এক শিক্ষার্থী জানতে পারে টাকা না দেয়ায় তালিকায় তার নাম নেই। বিষয়টি সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেও জানানো হলে তারা কোন উত্তর দিতে না পারায় ওই শিক্ষার্থী কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। এসয় উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে সে অভিযোগ করে জানায়, বাই সাইকেলের তালিকাভুক্তি জন্য নরেশ চন্দ্র ওঁড়াওয়ের লোকজন তার কাছে ছয়শ’ টাকা দাবী করলে ওই শিক্ষার্থী সাইকেলটি পাওয়ার পরই টাকা দিতে চেয়েছিল কিন্তু তার পরেও শেষ পর্যন্ত তালিকায় নাম উঠে নাই। অনুষ্ঠান চলাকালীন এই সময় প্রধান অতিথি স্থানীয় সংসদ সদস্য মোঃ শফিকুল ইসলাম শিমুলের কাছে অভিযোগ করে। সংসদ সদস্য তাৎক্ষণিক উপস্থিত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও জানতে পারেন যে, সকলেই স্কুল ব্যাগ ও সাইকেল পেতে আদিবাসী নেতা নরেশ চন্দ্র ওঁড়াওকে নগদ টাকা দিয়েছেন। এতে সংসদ সদস্য ক্ষুদ্ধ হয়ে নরেশ চন্দ্র ওঁরাওকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া সব টাকাই ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, সরকারী উপকরণ সহায়তা টাকার বিনিময়ে বিতরণের চেষ্টা করলে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নরেশ চন্দ্র ওঁরাও বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কোন অর্থ আদায়ের সাথে আমি জড়িত নই। আমার সুনাম ক্ষুন্ন করতে মিথ্যা অভিযোগ তুলে এই অপপ্রচার করা হচ্ছে’। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বানু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে আসা এসব উপকরণ বিনামুল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। উপজেলা পরিষদের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী এই টাকা গ্রহনের সাথে যুক্ত নন। আদিবাসী সম্প্রদায়ের একজন নেতার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন নৃ-গোষ্ঠির শিক্ষার্থীরা। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছে থেকে অভিযোগের সমুদয় অর্থ আদায় করে তা শিক্ষার্থীদের ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে তিনিও নির্দেশ দিয়েছেন।

Check Also

৩০ জুলাই পর্যন্ত অনেক দল সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, সংগ্রামে যুক্ত হবে কি না: সারজিস আলম

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।