ক্রাইমবার্তা রির্পোটঃ
৮৬ বছরের অসহায় বৃদ্ধা মাকে রাস্তার পাশে বাঁশবাগানে ফেলে গেলেন তার ছেলে ও পূত্রবধূ। ঘটনা ঘটেছে, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কুচিয়াবাড়ি গ্রামে। অসহায় এ বৃদ্ধার নাম হুজলা বেগম।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, হুজলা বেগমের তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। প্রায় ৩০ বছর আগে স্বামী সামাদ শেখ মারা যাওয়ার পর ছেলে-মেয়েরা আলাদা সংসার শুরু করেন। আর হুজলা বেগম বিভিন্ন সময়ে ছেলে ও মেয়েদের সংসারে জীবনযাপন করে আসছিলেন। কিন্তু, হঠাৎ করে মায়ের ভরণ-পোষণ কে নেবেন, এ বিষয়ে সন্তানদের মধ্যে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হুজলা বেগমের মেঝো ছেলে বাবু শেখের বাড়িতে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ আত্মীয়-স্বজনেরা বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নেন। একপর্যায়ে বাবুসহ কোনো সন্তানই তার মাকে তাদের সংসারে ঠাঁই দিতে চায়নি।
এরপর বাবু ও তার স্ত্রী বৃদ্ধা হুজলাকে বাড়ি (বাবুর বাড়ি) থেকে টেনে-হিঁচড়ে রাস্তা দিয়ে কুচিয়াবাড়ির পশ্চিমপাড়ায় তাদের পুরাতন বাড়িতে নিয়ে যান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় হুজলাকে তারা রাস্তার পাশে বাঁশবাগানে ফেলে রেখে যান।
পাকা রাস্তা দিয়ে টেনে-হিঁচড়ে নেয়ায় হুজলার শরীরের বিভিন্ন স্থানে থেঁতলে গেছে। এরপর বুুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বৃষ্টি শুরু হলেও তাকে কেউ বাঁশবাগান থেকে ঘরে তুলে নেয়নি।
পরে প্রতিবেশিরা হুজলার পাশে হারিকেন জ্বালিয়ে রেখে চলে যান।
ভোররাতে হুজলা বেগমের নাতবউ প্রতিবেশিদের সহযোগিতায় তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। তবে ক্ষণিকের জন্য বাড়িতে স্থান পেলেও স্থায়ী ভাবে ঠাঁই মেলেনি তার। খোলা আকাশের নিচে হুজলাকে রাতভর ফেলে রাখায় পিঁপড়াসহ বিভিন্ন ধরণের পোঁকার কামড়ে আক্রান্ত হন তিনি।
বর্তমানে নাতবউয়ের বাড়িতে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে আছেন তিনি।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার অমানবিক এ বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। লোহাগড়া থানার ওসি প্রবীর কুমার বিশ্বাস জানান, এ ঘটনায় বাবু ও তার স্ত্রী পলাতক রয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বৃদ্ধাকে আপতত নাতবউয়ের কাছে রাখা হয়েছে।
আরো পড়ুন :
টাকার জন্য মাকে পিটিয়ে আহত
আগৈলঝাড়া (বরিশাল) সংবাদদাতা, ৩১ আগস্ট ২০১৮
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ঋণগ্রস্ত ছেলের সাথে বাকবিতন্ডার এক পর্যায় মাকে পিটিয়ে আহত করেছে ছেলে। গুরুতর আহত অবস্থায় মাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম বাগধা গ্রামের খগেন বল্লভের ছেলে কার্তিক বল্লভ বিভিন্ন এনজিওসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে ঋণগ্রস্থ হয়ে পরে। এ ঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মা প্রভারানী বল্লভের সাথে ঋনগ্রস্ত ছেলে কার্তিক বল্লভের ঝগড়াঝাটি হয়। ঝগড়াঝাটির এক পর্যায় ছেলে কার্তিক মা প্রভারানীকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা প্রভাকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
মাকে খুঁটির সাথে বেঁধে পেটালো পাষণ্ড সন্তান
আগৈলঝাড়া (বরিশাল) সংবাদদাতা, ০৮ মে ২০১৫
তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে জন্মদাত্রী মাকে ঘরের খুটির সাথে বেঁধে মারধর করে গুরুতর আহত করেছে এক পাষণ্ড সন্তান। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের আগৈলঝাড়ার এক প্রামে। ঘটনা নিয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার আন্ধারমানিক গ্রামের অবনী জয়ধরের ছেলে কোদালধোয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অপুর্ব লাল জয়ধর মাঝে মধ্যে তার মা লেবু রানী (৬০)কে মারধর করতো। লেবু রানীর স্বামী অবনী জয়ধর জীবিত থাকলেও তিনি ছেলের কাছে অসহায় হয়ে পড়েন। গত মঙ্গলবার তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ঘরের ভেতরে খুঁটির সাথে বেঁধে মারধর করায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন লেবু রানী।
পরে নাতী দীপ্ত ঘরে গিয়ে রশি কেটে দেয়। চিকিৎসার পরে লেবু রানীর জ্ঞান ফিরে আসে। এ ঘটনা শুনে অবনীর বড় ছেলে বিশ্বজিৎ খুলনা থেকে বাড়িতে আসেন।
টাকা হাতিয়ে নিতে মাকে খুন
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের ধাপহাট এলাকার সরিষার ক্ষেত থেকে রোকেয়া বেওয়া ওরফে দুলো (৬৮) নামের এক মহিলার লাশ উদ্ধার করার ঘটনার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। মাকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে পুত্র।
থানা সূত্রে জানা গেছে, মাতা রোকেয়া বেওয়া দুলো হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে তার বড় ছেলে ইউনুছ আলীকে নিজ বাড়ি থেকে রবিবার পুলিশ আটক করে। পরে তাকে বগুড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুল্লা আল মামুনের আদালতে হাজির করলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয় । সে আদালতে বলে, সে ও তার অন্য ৩ জন সহযোগি নিয়ে তার মায়ের কাছে রক্ষিত ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে লাশ সরিষার ক্ষেতে লাশ ফেলে রাখে। এ ঘটনায় গত ১৮ জানুয়ারি নিহত রোকেয়া বেওয়া দুলোর ছোট ছেলে ইয়াকুব বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
দুপচাঁচিয়া থানার অফিসার ওসি নজরুল ইসলাম আদালতে জবানবন্দির কথা স্বীকার করেন ।
উল্লেখ্য গত ১৮ জানুয়ারি দুপচাঁচিয়া সদরের নিমতলা নামক স্থান থেকে বৃদ্ধ দুলোর লাশ উদ্ধার করে দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ।