ক্রাইমবার্তা রির্পোটঃ
রোববার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি জনসভা । এরই মাঝে জনসভা করার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকেও অনুমতি মিলেছে। শনিবার দুপুরে ডিএমপি কমিশনারের সাথে দেখা করে বিএনপির প্রতিনিধি দল জনসভার অনুমতি পান।
এরপর দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জনসভার অনুমতি পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে অনুমতি পাওয়ার পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুরু হয় জনসভার মঞ্চ তৈরির কাজ। আর সেই প্রস্তুতি দেখতে জনসভাস্থল ঘুরে দেখলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
দুপুর দেড়টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভাস্থল দেখতে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান সারোয়ার, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।
এদিকে রোববারের জনসভা সফল করতে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব নেতাকর্মীদের অংশ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ, কেরানীগঞ্জসহ অন্যান্য জেলার নেতাকর্মীদের জনসভায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। এ ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার জন্য প্রশাসন ও সরকারের কাছে সহযোগিতা চান বিএনপি নেতা।
আরো পড়ুন : যে ২২ শর্তে জনসভা করার অনুমতি পেল বিএনপি
রোববার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। আজ সকাল ১১ টার দিকে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপিতে গিয়ে পুলিশ কমিশনারের সাথে বৈঠক করে। এসময় তাদের ২২ শর্তে সমাবেশের অনুমতি দেয়ার কথা জানানো হয়।
প্রতিনিধি দলে থাকা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ জানান, মহানগর পুলিশ কমিশনার আধা ঘন্টা তাদের সাথে বৈঠক করেছেন। আমরা সমাবেশের অনুমতি পেয়েছি। আগামীকাল দুপুর ২ টায় সমাবেশ শুরু হবে।
জানা গেছে, বিএনপি সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্ব শর্ত হিসেবে সমাবেশ থেকে ৭ দফা দাবি তুলে ধরবে। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে, তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙ্গে দেয়া ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি।
যে ২২ শর্তে জনসভার অনুমতি দেয়া হলো :
১. এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
২. আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থি ও জনস্বার্থ নিরাপত্তা বিরোধী কার্যকলাপ করা যাবে না।
৩. উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
৪. ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন কোনো বক্তব্য প্রদান করা যাবে না।
৫. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অভ্যন্তরে জনসভার কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
৬. নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিতকল্পে পর্যাপ্ত নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে।
৭. স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জনসভাস্থলের অভ্যন্তরে ও বাইরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
৮. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি প্রবেশ গেটে আর্চওয়ে স্থাপন করতে হবে এবং জনসভায় আগতদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর এর মাধ্যমে চেকিং এর ব্যবস্থা করতে হবে।
৯. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভিহিকেল স্ক্যানার সার্চ মিরর এর মাধ্যমে জনসভাস্থলে আগত সকল যানবাহন তল্লাসির ব্যবস্থা করতে হবে।
১০. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জনসভাস্থলে অগ্নি নিবার্পন ব্যবস্থা রাখতে হবে।
১১.অনুমোদিত স্থানের বাইরে মাইক/সাউন্ডবক্স ব্যবহার করা যাবে না।
১২. অনুমোদিত স্থানের বাইরে বা রাস্তায় প্রজেকশন স্থাপন করা যাবে না।
১৩. অনুমোদিত স্থানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে লোক সমাগম হওয়া যাবে না।
১৪. আযান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময়ে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
১৫. অনুমোদিত জনসভা ব্যতীত মঞ্চকে অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
১৬. জনসভা শুরুর ০২ (দুই) ঘন্টা পূর্বে লোকজন সভাস্থলে আসতে পারবে।
১৭. ১৭.০০ ঘটিকার মধ্যে জনসভার যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
১৮. অনুমোদিত সময়ের পূর্বে কিংবা পরে রাস্তায় কোন অবস্থাতেই সমবেত হওয়া যাবে না ও যান চলাচলে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
১৯. কোন ধরনের লাঠি-সোটা/ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি রড ব্যবহার করা যাবে না।
২০. মিছিল সহকারে সভাস্থলে আসা যাবে না।
২১. উল্লিখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।
২২. জনস্বার্থে কতৃপক্ষ কোন কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।