ক্রাইমবার্তা রির্পোটঃ
একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় গতকাল প্রকাশিত হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাস গুপ্তের একটি সাক্ষাৎকারে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনার সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জড়িত থাকার যে বক্তব্য দিয়েছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দলটি। দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাস গুপ্ত পত্রিকায় প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে প্রশাসনিক তদন্তের বরাত দিয়ে কক্সবাজারের রামু, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ও রংপুরে সংঘটিত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার সাথে জামায়াতে ইসলামীর জড়িত থাকার যে বক্তব্য প্রদান করেছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন মিথ্যা। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর কখনো কোনো হামলার সাথে জামায়াতে ইসলামীর কারো কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। বরং জামায়াতের নেতাকর্মীরা সব সময়ই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধানে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। তিনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, দেশের কোথাও কোনো সংখ্যালঘুর ওপর হামলার ঘটনার সাথে জামায়াতের কোনো নেতাকর্মীর সংশ্লিষ্টতার কথা আজ পর্যন্ত কেউই প্রমাণ করতে পারেনি।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সব কিছুতেই জামায়াতে ইসলামীকে জড়িয়ে মিথ্যা খবর প্রচার করা হচ্ছে। তাই দুষ্টচক্রের হাত থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে হলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বদ্ধমূল ধারণা বাদ দিয়ে খোলা মন নিয়ে প্রকৃত সত্য উদঘাটনে কেউ সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করলে তা সত্যিকার অর্থে একটি কার্যকর ভূমিকা হিসেবে গণ্য হতে পারে। এ ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত আছে। কাজেই তথ্যপ্রমাণ ছাড়া এ ধরনের ভিত্তিহীন মিথ্যা বক্তব্য প্রদান করা থেকে বিরত থাকা এবং পত্রিকায় দেয়া মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার করার জন্য তিনি রানা দাস গুপ্তের প্রতি আহ্বান জানান। বিজ্ঞপ্তি।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম নগর জামায়াতে ইসলামীর নেতা আনোয়ারুল আলম চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে সাতকানিয়া থানা পুলিশ। গতকাল দুপুরে সাতকানিয়ার চিববাড়িস্থ গ্রামের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে মহানগরীর বিভিন্ন থানায় ১২টি মামলা রয়েছে।
এ দিকে জামায়াতের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলের চট্টগ্রাম মহানগরীর শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য এবং বাকলিয়া থানা জামায়াতের আমির, সাবেক ছাত্রনেতা আনোয়ারুল আলম চৌধুরীকে হয়রানিমূলক গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা, ােভ ও প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমির মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম গতকাল এক যুক্ত বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সরকার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো প্রহসনের নির্বাচন করার জন্য গণগ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে। আমরা এর প্রতিবাদ, তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি এবং জামায়াত নেতা আনোয়ারুল আলম চৌধুরীসহ সব নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
ছাত্রশিবিরের বক্তব্য
দৈনিক যুগান্তর ২৮ সেপ্টেম্বর পত্রিকার শেষের পাতায় ২য় কলামে ‘ভয়ঙ্কর নাশকতার ছক’ উল্লেখ করে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন খবর প্রকাশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত ও সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইন বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে অবৈধ সরকারের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিয়েছে যুগান্তরের মত দলকানা কিছু গণমাধ্যম।
চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে অবৈধ সরকারকে ফায়দা হাসিলের সুযোগ করে দিতেই শিবিরের নামে গায়েবী অভিযোগ রটনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুগান্তর। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে দিতে শিবির টার্গেট করে হামলা ও হত্যা পরিকল্পনা করছে, অর্থ সহায়তা করছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৬ সেপ্টেম্বর ওয়ারী থেকে গ্রেপ্তার হওয়া শিবির নেতা শফিউল আলমসহ ৫জনকে বিষ্ফোরকসহ গ্রেপ্তারের পর তারা এসব তথ্য দিয়েছে। যুগান্তরের এ প্রতিবেদন স্ববিরোধী। কেননা ১৬ তারিখের যুগান্তরের শেষ পৃষ্ঠায় তাদের গ্রেপ্তারের পর গুম হওয়ার নিউজটি বিস্তারিত ভাবে প্রচার হয়েছিল। এর পরও যুগান্তরের মত একটি গণমাধ্যম কিভাবে এমন স্ববিরোধী ও পুলিশের জলজ্যান্ত মিথ্যাচারকে পুঁজি করে একটি নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে জঘন্য মিথ্যাচার করতে পারে তা দেখে আমরা হতবাক।
আসল ঘটনা হলো, গত ১২ই সেপ্টেম্বর কোন কারণ ছাড়াই শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্ধর থেকে হজ ফেরত মা ও বড় ভাইকে নিয়ে ফেরার পথে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখার সভাপতিসহ ৫জনকে গ্রেপ্তারের পর বেআইনি ভাবে আদালতে হাজির না করে গুম করে রাখে পুলিশ। যা যুগান্তরসহ প্রায় সব গণমাধ্যমে গ্রেপ্তারের পর গুমের বিষয়টি ফলাও করে প্রচার হয়েছে। ১৬ দিন গুম করে রাখার পর গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিষ্ফোরকের মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। মামলায় পুলিশ উল্লেখ করেছে ৫জনকে গত ২৬ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অথচ তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল আরো ১৬ দিন আগেই।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি