ক্রাইমবার্তা রির্পোটঃ বিবিসি:বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির সিনিয়র নেতা মওদুদ আহমেদ বলছেন, আসছে সাধারণ নির্বাচনের জন্য একটি নিরপেক্ষ সরকারের রূপরেখা তারা শিগগিরই তুলে ধরবেন।
মওদুদ আহমেদ বলেন, নির্বাচনের সময় তারা কোনো ‘সর্বদলীয় সরকার’ চান না, বরং নির্দলীয় সরকার চান তারা। বিএনপির এ সিনিয়র নেতা বলেন, “আমরা তো সর্বদলীয় একটি সরকারের জন্য আন্দোলন করছি না। আমরা তো কখনো বলি নাই যে আমাদের অন্তর্ভুক্ত করে একটা সরকার গঠন করা হোক। এটা কি আমরা কখনো দাবি করেছি?”
দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ বলেছেন, নিরপেক্ষ সরকার বলতে তারা কী বোঝাচ্ছেন, সেটি শিগগিরই তারা তুলে ধরবেন।
মওদুদ আহমদ বলেন, “যারা নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে থাকবেন, তারা কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারবেন না। এবং তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। নির্বাচনের সময় কী কাজ করবেন না করবেন, সেটা আমরা স্পষ্টভাবে সেখানে উল্লেখ করে দেব।”
সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন নির্দলীয় সরকারের বিষয়টি এখন আর সংবিধানে নেই। এবং সংবিধান সংশোধন করার কোনো ইচ্ছেও তাদের নেই। ক্ষমতাসীনরা বলছে, সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোকে নিয়েই নির্বাচন-কালীন সরকার হবে।
শনিবার ঢাকায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতারাও আবারো বলছেন যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনেই সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গত পাঁচ বছর যাবত যে যে মন্ত্রিসভা আছে সেখানেও সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী বিভিন্ন দলের সদস্যরাই আছেন। এমন অবস্থায় দুটির মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকবে না বলেই মনে করে বিরোধীদলগুলো।
বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী সংসদের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন-কালীন সরকারে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ আছে কি না? এই প্রশ্নে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমেদ জিজ্ঞেস বলেন, ” সেটা আমি বলতে পারবো না। সেটা সরকারের বিষয়। কিন্তু সেটা করে কোন লাভ হবে না। এটা তো নির্দলীয় হতে হবে। ধরেন কথার কথা বলছি যে আপনি যেটা বললেন, যে হ্যাঁ ঠিক আছে, বাইরে থেকেও একজনকে-দুইজনকে নিয়ে নিলেন কোন একটা দলের কাছ থেকে। সে তো দলীয় লোক হবে।”
বিএনপির মতো একই চিন্তা করছে অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া। তারা যে পাঁচ-দফা দাবি তুলে ধরেছে সেখানেও নিরপেক্ষ সরকারের বিষয়টি উল্লেখ করা আছে।
যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার অন্যতম নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলছেন, নিরপেক্ষ ব্যক্তি বলতে তারা কী বোঝাচ্ছেন সেটি পরিষ্কার।
মান্না বলেন, “এ রকম তো না যে এটা আমরা প্রথম বলছি। এ রকম সরকার তো এর আগে ছিল। কিভাবে হয়েছে সবাই দেখেছে।”
কিন্তু নির্দলীয় সরকারের দাবি পূরণ না হলে তারা নির্বাচনে যাবেন কিনা?
এমন প্রশ্নে মান্না বলেন, “সেটা নির্ভর করছে আন্দোলনের অগ্রগতি কী রকম হয় তা উপর। এমনকি নির্বাচনকেও যদি আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিই, তাহলে নিশ্চয়ই সে নির্বাচনও করা যেতে পারে। এগুলো অবস্থার ডেভেলপমেন্টের উপর নির্ভর করে সেভাবে সিদ্ধান্ত নেব আমরা।”