জেলা প্রশাসন নাগরিক ঐক্যের সমাবেশ পন্ড করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক শহীদুল্লাহ কায়সার বলেছেন, ‘বর্তমান সরকারের পুলিশ রাজনৈতিক হয়রানি করছে। দেশে এখন পুলিশের শাসন চলছে। আমরা পুলিশের শাসন চাই না। আমরা চাই গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার। আমরা কোনো স্বেরাচারী সরকার চাই না।’
রোববার বিকেলে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। প্রশাসনের ভূমিকার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রশাসন ক্ষতাসীনদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়েছে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে দেশ আজ ঐক্যবদ্ধ। ৫ জানুয়ারীর মতো আগামী নির্বাচন জনগণ হতে দিবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
৩০ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের রেলওয়ে কৃষ্ণচূড়া চত্বরে নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নাগরিক সমাবেশকে কেন্দ্র করে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। নাগরিক ঐক্যের ময়মনসিংহ শাখার আহবায়ক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, সাম্প্রতিক সরকার বিরোধী বৃহত্তম রাজনৈতিক জোট গঠনের অংশ হিসেবে যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া জোটবদ্ধ হয়েছে।
এই জোট দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সমাবেশ করার কর্মসুচীর অংশ হিসেবে ময়মনসিংহে সমাবেশটি ৩০ সেপ্টেম্বর করার ঘোষণা দেয়। সে লক্ষ্যে গত ২৫ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়। এরপর পুলিশ তাদের সকল নেতার তালিকা নিয়ে মোবাইল ফোনে সকলের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে। ২৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বর সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে বলা হয়, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া সমাবেশের অনুমতি দেয়া যাবে না। ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরের পর মৌখিকভাবে অনুমতি দেয়া যেতে পারে বলে জানায় কিন্তু লিখিতভাবে অনুমতি দেয়নি। এমন সময় অনুমতি দেয়ার আভাস দেয়, যখন সমাবেশ আয়োজনের নূন্যতম সময় হাতে ছিল না। অর্থাৎ খুব ধুর্ততার সাথে সমাবেশটি পন্ড করে দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় সদস্য ডা. জাহিদুর রহমান, সোনারবাংলা পার্টির সভাপতি শেখ আব্দুন নুর, গণফোরাম জেলা শাখার সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম রায়হান উদ্দিন। এসময় যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম জানান, সমাবেশের পক্ষেই পুলিশের মতামত সকালে জেলা প্রশানকে জানানো হয়েছে। এবং আয়োজকদেরকেও মৌখিকভাবে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়ার বিষয়টি অবহিত করেছেন বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এ কে এম গালিভ খাঁন জানান, শনিবার সকাল দশটার সময় সমাবেশের অনুমতি প্রদানের চিঠিতে তিনি স্বাক্ষর করেছেন। বিষয়টি আয়োজকদেরকে মোবাইলে জানানো হলেও তারা অনুমতি প্রদানের চিঠি নেয়নি।