ক্রাইমবার্তা রির্পোটঃ সাতক্ষীরা:আদালতের নিষেধাজ্ঞার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতিবেশীর সম্পত্তি দখল করার অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা-৩১ আনসার ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক মোরশেদা খানম ও তার সদস্যদের বিরুদ্ধে। এসময় ভাংচুর করা হয়েছে আনসার ব্যাটেলিয়ন সংলগ্ন আনোয়ার হোসেন চান্দুর বসত বাড়ি, গোয়াল ঘরসহ অন্যান্য স্থাপনা। কেটে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন গাছের চারা। গত ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে পুরাতন সাতক্ষীরার আনোয়ার চান্দুর বাড়ি সংলগ্ন জমিতে এসব ঘটনা ঘটে।
ক্ষতিগ্রস্ত আনোয়ার হোসেন চান্দু গনমাধ্যমকে জানান, সাতক্ষীরা মৌজার এসএ ৩৯১ নম্বর খতিয়ানের ৯৭৭ দাগে ১৮ শতক জমি রয়েছে। এর মধ্যে ৪ শতক জমি আনসার ব্যাটালিয়নের অনুকূলে সরকার এলএ ০৪/৭৬-৭৭ নম্বর কেসের মাধ্যমে অধিগ্রহণ করে। তখন থেকে আনসার ব্যাটালিয়ন কর্তৃপক্ষ এই ৪ শতক জমি ভোগ দখল করে আসছেন। বাকি ১৪ শতক জমি বিগত ২৭/১২/৬৭ তারিখে ৬৬৮৫ নম্বর রেজিস্ট্রি কোবলামূলে তার বাবা মৃত আলতাফ হোসেন এবং তার বাবার মৃত্যুর পরে তিনি ছেলে হিসাবে ওই জমি ভোগ দখল করে আসছেন।
ভিন্ন ভিন্ন তারিখ ও সালের বিভিন্ন তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৯৬৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫১ বছর তপশীল জমিতে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে ভোগ দখল ও বসবাস করে আসছেন। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদিয়া আফরিনের ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ তারিখের রির্পোট থেকে জানা যায়, ১৪ শতক জমির মধ্যে ৬ শতক জমিতে আনোয়ার হোসেনের লাগানো গাছপালা, সেপটি ট্যাংক, পানির লাইন এবং একটি আধাপাকা গোয়াল ঘর রয়েছে। এই জমির মালিকানার দাবিতে আনোয়ার হোসেন চান্দু সাতক্ষীরা অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। মামলা নম্বর ১৩৮২/১২। কিন্ত এই জমির কোন কাগজপত্র না থাকা সত্ত্বেও ৩১ আনসার ব্যাটালিয়নের অধিনায়করা ১৯৯০ সাল থেকে আনোয়ার হোসেনের জায়গা দখল করার চেষ্টা করেন। তখন থেকেই তাকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা করে আসছেন।
এসব কারণে তিনি সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ৩১ আনসার ব্যাটালিয়ন অধিনায়ককে বিবাদী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-৪১/১৮। বিজ্ঞ আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে অধিনায়কের বিরুদ্ধে প্রথমে শান্তিপূর্ণ স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন এবং পরে ১৪ আগস্ট ২০১৮ তারিখে বিবাদী আনসার অধিনায়কে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।
আদেশে বিবাদীকে উল্লেখিত তপশীল জমিতে জোরপূর্বক প্রবেশে বারিত করেন এবং বাদীর শান্তিপূর্ণ দখলে বাধা প্রদান না করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। এই আদেশ অমান্য করে আনসার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মোরশেদা খানম তার বাহিনী নিয়ে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখ সকালে নালিশী জমিতে জোর পূর্বক প্রবেশ করে আদালত ও আদালতের আদেশ সম্পর্কে কটুক্তি করেন। ভাংচুর করেন টালির গোয়াল ঘর। মাটি দিয়ে ঢেকে দেন সেপটি ট্যাংক। বন্ধ করে দেন পানি নিস্কাশনের ড্রেন, খাবার পানির পাইপ লাইন ও ভাংচুর করেন রিং-স্লাব। কেটে দেন মেহগনি গাছের চারা। লুট করে নেন জমিতে রক্ষিত ১০ হাজার ইট, দেড় ট্রাক বালি এবং অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী। তবে, জনগণের চাপের মুখে তারা জায়গা দখল প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ হন। বর্তমানে আনোয়ার হোসেন চান্দু তার পরিবার পরিজন নিয়ে শংকিত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। রয়েছেন চরম নিরাপত্তা হিনতায়। তিনি ন্যায় বিচার পাওযার জন্য প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা-৩১ আনসার ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক মোরশেদা খানমের ব্যক্তিগত সেলফোনে যোগাযোগ করা হলে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে অন্যের জমি দখলের বিষযটি অস্বীকার করে বলেন, সেখানে কোন জমি দখল বা ভাংচুরের কোন ঘটনাই ঘটেনি বলে দাবি করেন।
Check Also
আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …