ক্রাইমবার্তা রিপোট: আত্মতুষ্টিতে না ভুগে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আত্মতুষ্টিতে থাকা যাবে না। আমাদের একটা শক্তিশালী প্রতিপক্ষ আছে। তাদের চক্রান্ত অনবরত চলছে। ষড়যন্ত্র এখনও শেষ হয়নি, এটা মাথায় রেখেই চলতে হবে। প্রতিপক্ষকে সব সময় শক্তিশালী মনে করেই চলতে হবে।’
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৩তম অধিবেশনে যোগদান শেষে সোমবার সকালে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর তাকে গণভবনে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ওই অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর প্রধানমন্ত্রীকে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বারবার মৃত্যুকে মুখোমুখি নিয়ে অনেকেই চলতে পারে না। সে সাহসও পায় না। তারপর আবার আন্তর্জাতিক চক্রান্ত মোকাবিলা করতে হয়েছে। ৭১’ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে জড়িত ছিল এমন অনেকের বংশধরদের একটা শ্রেণি দেশে রয়ে গেছে। তাদের চক্রান্ত তো অনবরত চলছে। সেখান থেকে একটা শ্রেণি গড়ে উঠেছে, তারা জানেই যে তারা ভোটের রাজনীতিতে পারবে না। তারা জানে যে তারা দল করতে পারে না। তারা মাঠে যেতে পারে না। কিন্তু ক্ষমতার লোভ তাদের। এই ক্ষমতার লোভে একাত্তরের পরাজিত শক্তির সঙ্গেই তারা হাত মেলায়, খুনিদের সঙ্গে ঘাতকের সঙ্গে হাত মিলায় এবং তারা কিন্তু সারাক্ষণ আমাদের বিরুদ্ধে লেগেই থাকে।’
২০০১ সালে গভীর চক্রান্ত করে আওয়ামী লীগকে আসতে দেয়নি দাবি করে তিনি বলেন, ‘১৯৯১ সালে এই চক্রান্ত আমার দলের ভেতরেও ছিল, বাইরেও ছিল। দলের ভেতর চক্রান্তটা কোথায়? আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসুক, আমি যেন কিছু না হতে পারি। ওটা করতে গিয়ে এমন এমন প্রার্থীদের বেছে নেওয়া হলো, যারা জিতে আসতে পারেনি। ’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কিছু পত্রিকা আছে অনেক তথ্য নিয়ে বসে এটা ভেবে যে তারা একটার পর একটা ছাড়বে। যেখানেই আমাদের কোনও অর্জন, যেখানেই মানুষ একটা বাহবা দিচ্ছে, সেখানেই প্রশ্নবিদ্ধ করতে একটা মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা। আর আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমাদের মন্ত্রণালয় থেকেই হোক বা দুর্নীতি দমন কমিশন থেকেই হোক, সেগুলোকে খুব গুরুত্ব দিয়েই আমাদের লোকগুলোর বিরুদ্ধে লেগে যায়। কাজেই এসব ব্যাপারে আমাদের কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, দলের সাফল্য সব জায়গায় তুলে ধরতে হবে। ভোটের অধিকার কেবল আওয়ামী লীগই প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। অনেক বাধা-ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই ক্ষমতায় আসতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে বলেই দেশ আত্মমর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জনসমর্থন ও একের পর এক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে পারায় টানা দুই মেয়াদে দেশের মর্যাদাপূর্ণ সব অর্জন সম্ভব হয়েছে।
নিউ ইয়র্ক সফরকালে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া এবং রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে শান্তিপূর্ণ কূটনীতিক প্রচেষ্টার জন্য ইন্টার প্রেস সার্ভিস এবং গ্লোবাল হোপ-এর কাছ থেকে দুটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
পুরস্কার দুটি দেশের জনগণকে উৎসর্গ করে তিনি বলেন, ‘এবারের সফরে অনেক সম্মান পেয়েছি। বিশ্বনেতাদের দেওয়া এ সম্মান বাংলাদেশের সম্মান, পুরস্কার দেশের জনগণকে উৎসর্গ করলাম।’
গণভবনে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭২তম জন্মদিন ছিল।