ক্রাইমর্বাতা রিপোট:জাতীয় সংসদে কওমী শিক্ষার সর্বোচ্চস্তর দাওরায়ে হাদীস (তাকমিল)-এর সনদকে মাষ্টার্স ডিগ্রী (ইলামিক স্টাডিজ ও আরবী)-এর সমমান বিল ২০১৮ পাস করে আইনে পরিণত করায় মহান রব্বুল আ’লামীনের দরবারে শুকরিয়া আদায় এবং প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ (বেফাক)। মঙ্গলবার বিকেলে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও শোকরিয়া মিছিল বের করে।
বেফাকের বিবৃতি : বেফাক সভাপতি ও হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ্ আহমাদ শফীসহ বেফাকের নেতারা এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, আমরা মনে করি এই সনদের মান প্রদানের আইন জাতীয় সংসদে পাস করার বিষয়টি অত্যন্ত আনন্দের ও খুশির। আমরা বিশ্বাস করি কওমী মাদরাসার সনদের মান-এর বিষয়টি চূড়ান্ত ধাপে পৌছানোর ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দায়িত্বপূর্ণ ও দরদপূর্ণ মনোযোগ ছিল সবচেয়ে বেশি। এ জন্য তাকে আবারও বিশেষভাবে আন্তরিক মোবারকবাদ জানাচ্ছি।
শোকরিয়া মিছিল : বিকেলে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও শোকরিয়া মিছিল বের করে বেফাক।
বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি আল্লামা আশরাফ আলীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বেফাকের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মহা-পরিচালক মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মুফতী ফয়জুল্লাহ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, মজলিসে আমেলার সদস্য মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী, মাওলানা নুরুল আমীন, মাওলানা মুসলেহউদ্দিন রাজু, মাওলানা আবুল কাশেম, মাওলানা আলতাফ হোসাইন প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা আশরাফ আলী বলেন, কওমী মাদরাসা দেশ ও জাতির কল্যাণে নিয়োজিত। এই মাদরাসা থেকে চোর, ডাকাত, জঙ্গী ও দূর্নীতিবাজ তৈরি হয়না। আদর্শবান, দেশপ্রেমিক মানুষ তৈরি হয়। তারাই দূর্নীতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। সনদের স্বীকৃতির মাধ্যমে এখন তারা দেশ গঠনে আগের তুলনায় অধিকতর ভূমিকা রাখতে পারবে। সমাবেশ শেষে এক মিছিল উত্তর গেট থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড়, তোপখানা রোড হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে মুনাজাতের মাধ্যমে কর্মসূচী শেষ হয়।
ইসলামী ঐক্যজোট : ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী ও মহাসচিব মুফতী ফয়জুল্লাহ এক বিবৃতিতে বলেন, কওমী মাদরাসার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বজায় ও দারুল উলুম দেওবন্দের মূলনীতিসমূহকে ভিত্তি ধরে উলামায়ে কেরামের দিক-নির্দেশনা ও দাবীকে প্রাধান্য দিয়ে কওমি সনদের স্বীকৃতির বিল জাতীয় সংসদে পাশ করায় সারা দেশের কওমী উলামায়ে কেরাম ও শিক্ষার্থীরা আনন্দিত, উৎফুল্ল। সময়ের এই প্রয়োজনীয়, প্রত্যাশিত ও সাহসী সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে জানাচ্ছি আন্তরিক অভিনন্দন। কৃতজ্ঞতা ও মুবারকবাদ জানাচ্ছি আমিরে হেফাজত, শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী এবং দেশের শীর্ষ উলামা মাশায়েখের প্রতি, যাঁদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও হেকমতপূর্ণ মেহনতের ফলশ্রুতিতেই এই সাফল্য আজ চূড়ান্ত বাস্তবতার আলো দেখল।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস : বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির প্রিন্সিপাল আল্লামা হাবীবুর রহমান ও মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক এক বিবৃতিতে বলেন, কওমী লাখো লাখো ছাত্র ও আলেমদের দ্বীর্ঘ দিনের প্রাণের দাবী ছিলো কওমী সনদের সরকারি স্বীকৃতি। এ দাবী আদায়ে উপমহাদেশের প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ দলের প্রতিষ্ঠাতা আমির শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ. পাঁচ দিন মুক্তাঙ্গনে অবস্থানসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে ছিলেন। বর্তমান সরকার কওমী সনদের স্বীকৃতি জাতীয় সংসদে পাশ করায় শায়খুল হাদীসের কর্মসূচীর দাবী বাস্তবায়ন হলো এবং সরকার নতুন ইতিহাস গড়লো। নেতৃদ্বয় বলেন, কওমী সনদের মান পাশ হওয়ায় কওমী ছাত্র-ছাত্রীদের মেধার মূল্যায়ণ হবে। তারা ইসলাম ও জাতির জন্য বেশি ভূমিকা রাখতে পারবে।
কওমী শিক্ষক কল্যাণ সোসাইটি : কওমী শিক্ষক কল্যাণ সোসাইটির চেয়ারম্যান শায়খুল হাদীস মাওলানা আব্দুস সামাদ বলেন, কওমী সনদের স্বীকৃতি আমাদের জন্য খুশির সংবাদ। আমি আশাবাদী এই স্বীকৃতির ইতিবাচক দিকগুলো আমাদের কওমী শিক্ষার্থীরা ধারণ করবে এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে তাদের মেধা ও শ্রম ব্যয় করবে।
ইসলামী ছাত্র মজলিস : বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতাউল্লাহ হোসাইনী ও সেক্রেটারী জেনারেল মুহাম্মদ উবায়দুর রহমান বলেন, ছাত্র মজলিসের ১৯৯২ সালের দাবী কওমী সনদের মান জাতীয় সংসদে পাশ হওয়ায় মেধাবী ছাত্ররা সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখার সুযোগ পাবে।