ক্রাইমবার্তা রিপোট: ২১ গ্রেনেড হামলা মামলায় ন্যায়বিচার নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ আশঙ্কার কথা জানান দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রিজভী বলেন, ২১শে আগস্ট বোমা হামলা মামলায় কয়েক দফা চার্জশিট দেয়া এবং বিচারকার্য অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার পর বিচারিক আদালত থেকে চার্জশিট ফিরিয়ে এনে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হয় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর। যা ছিল বেআইনী ও নজীরবিহীন। মুখ্য উদ্দেশ্য হলো- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উক্ত মামলায় জড়ানো। আসলে মামলায় তারেক রহমানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও সরকারের সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ন্যায়বিচার পাবেন কি না সেটি নিয়ে জনগণের প্রশ্ন এখন দীর্ঘতর হচ্ছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নিজেই বলেছেন, ‘যে দেশে প্রধান বিচারপতিই ন্যায়বিচার পায় না, সেদেশে সাধারণ মানুষ কিভাবে ন্যায়বিচার পাবে?’
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
লিখিত বক্তব্যে রিজভী বলেন, ২০১১ সালের ৭ই এপ্রিল মুফতি হান্নানকে অমানুষিক নির্যাতন করে তাকে দিয়ে আদালতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম বলানো হয়। তারেক রহমানের নাম বলানোর পর সে (মুফতি হান্নান) সুযোগ খুঁজছিলো তা প্রত্যাহারের জন্য। তা না হলে পুনরায় রিমান্ডে নিয়ে ‘ক্রসফায়ারে’ মৃত্যুবরণ করতে হবে এই আশঙ্কায় চার্জশিট দাখিলের জন্য প্রহর গুনতে থাকে। অবশেষে ২০১১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সেই সুযোগ মুফতি হান্নান পেয়ে যায়। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিনের আদালতে মুফতি হান্নান লিখিতভাবে যেটি জানান তার কিছু অংশ ইতোমধ্যে আপনাদের নিকট পেশ করেছি।
লিখিত বিবরণের এই অংশে মুফতি হান্নান বলেন, ২০১১ এর ৪ এপ্রিল কাশিমপুর কারাগার থেকে এনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলগেটে জেল সুপার লিখিত কাগজ স্বাক্ষর করতে বলে, স্বাক্ষর না করলে অশ্লীল গালিগালাজ করে, বিষ প্রয়োগে মেরে ফেলার কথা বলে, জেল সুপার তৌহিদ হত্যার হুমকি দেয়। দুদিন পর সিআইডির এএসপি ফজলুল কবিরসহ অন্যান্য অফিসাররা এবং আগে থেকে ম্যাজিষ্ট্রেটের রুমে বসে থাকা কাহার আকন্দ আমার দিকে একটি কাগজ ধরিয়ে দেয়, সেখানে তারেক রহমান, হারিস চৌধুরী, পিন্টু ও বাবরসহ অনেকের নাম জড়িত করা হয়েছে দেখতে পাই। অতঃপর জবানবন্দীতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানালে আমাকে জেলের ভিতরে হত্যা করাসহ রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করার হুমকি দেয়া হয়। এরপর রাত ১১টার দিকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বললে আমি অস্বীকার করি।
উল্লেখ্য যে, ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে উপস্থিত করার আগে বিভিন্ন সময় আমাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। ফজলুল কবির ও কাহার আকন্দ দুজনই আমার চোখে কালো কাপড় বেঁধে র্যাবের কাছে নিয়ে যেতো। এরপর ভয় দেখানোর জন্য শহরের বাইরে নিয়ে গিয়ে বলতো- তুমি ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তারেক রহমান, হারিস চৌধুরী, আব্দুস সালাম পিন্টু, বাবর প্রমুখের সঙ্গে হাওয়া ভবনে মিটিং করেছো, ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে এই স্বীকারোক্তি দিতে হবে। এভাবে বিবিধ মামলায় গ্রেফতার দেখাতে বিভিন্ন সংস্থার লোকেরা ৪১০ দিন রিমান্ডে এনে পৈশাচিক নির্যাতন করেছে।
রিজভী জানান, মুফতি হান্নান আরো বলেন, মাননীয় আদালত, আমি ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নই। আর তারেক জিয়া, হারিস চৌধুরী ও বাবরের সাথে কোনোদিনই হাওয়া ভবনে দেখা করিনি। পিন্টুর বাসায়ও আমি কোনোদিন যাইনি। নির্যাতনের অভিনব কায়দা প্রয়োগ করে মুফতি হান্নানের নিকট থেকে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা চালানো হয়। সে বলে, ‘একবার টর্চারিং সেলে নেয়ার পর আমাকে ফুলের মালা পরিয়ে দুপাশে দাঁড়িয়ে থাকা র্যাব সদস্যরা আমার উপর ফুলের পাঁপড়ি ছিটিয়ে এক ভয়ার্ত ও আতঙ্কিত পরিবেশের সৃষ্টি করে। এ সময় তারা আমাকে বলতে থাকে, ‘তুমি কি জানো, তোমাকে কি জন্য আবার এখানে আনা হয়েছে? আরো অত্যাচারিত হওয়া থেকে সাময়িক বাঁচার জন্য তাদের কথায় সায় দিলেও বিবেকের তাড়নায় যখন আদালতে তা বলতাম না, তখন আবার আমাকে রিমান্ডে নিয়ে এনে আদালতে না বলার কারণ উল্লেখ করে পুনরায় নির্যাতন করা হতো। আমি বলতাম, আমি কিছু জানি না, মিথ্যা সাক্ষী দেয়া কবিরা গুণাহ। এমন বলার সাথে সাথেই চলতো বর্বর নির্যাতন। তাদের এমন সীমাহীন নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে মাঝে মধ্যে দিশেহারা হয়ে গেলেও যখন কোনোভাবেই আমাকে দিয়ে তারা আদালতে মিথ্যা বলাতে পারছিলো না, তখন আমাকে রাজস্বাক্ষী হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়। কিন্তু আমি কোনো কিছুর বিনিময়েই অন্যায় করতে পারবো না বলে তাদেরকে পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দেই। এতে আমার প্রতি তাদের ক্ষিপ্ততা আরো বেড়ে যায়।
তিনি বলেন, ২০০৭ সালের ১লা নভেম্বর র্যাব-পুলিশের প্রহরায় আমাকে প্রায় অর্ধমৃত অবস্থায় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে উপস্থিত করা হয়। তখন সেখানেও উপস্থিত ছিল র্যাবের অফিসার এবং এই মামলার তদানীন্তন তদন্তকারী কর্মকর্তা ফজলুল কবির। ম্যাজিস্ট্রেট ওই মামলা সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞাসা করা মাত্র যখন মামলা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না বলি, তখন উপস্থিত কর্মকর্তাদ্বয় ম্যাজিস্ট্রেট আগেই লিখিত একটি কাগজ দেখিয়ে বলেন, উনি খুব অসুস্থ, এটা দেখে দেখে আপনি লিখে নিন। ম্যাজিস্ট্রেট তাই করলেন। যা ছিল সম্পূর্ণ প্রস্তুতকৃত ও বেআইনী। তখন সময় ছিল রাত্রি সাড়ে ১২টা। অত:পর ম্যাজিস্ট্রেট যখন তার লিখিত সেই কাগজে আমাকে স্বাক্ষর করতে বলেন, তখন আমি আমার নখ উপড়ানো শাহাদৎ আঙ্গুল দেখিয়ে বলি যে, এই আঙ্গুলের সাহায্যে স্বাক্ষর করার মতো অবস্থায় আমি আজ নেই। এরপর সেই ম্যাজিস্ট্রেট এর পাশে বসে থাকা এক ব্যক্তি তার হাত দিয়ে আমার হাত ধরে সেই কাগজে কোনোরকমে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এসময় নির্যাতিত আমি এতটাই অসুস্থ ছিলাম যে, দাঁড়িয়ে বা বসে থাকার মতো অবস্থা না থাকায় ম্যাজিস্ট্রেটের কামরার খালি মেঝেতে শুয়ে ছিলাম। এই ছিল তারেক রহমানসহ অন্যান্য আসামীদের বিরুদ্ধে আমার পূর্বে প্রদানকৃত জবানবন্দীর প্রকৃত ঘটনা।
আদালতে অপর সাক্ষী মুফতি আবদুর রশিদের প্রদত্ত জবানবন্দী : এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আর এক গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী বেসরকারি সংস্থা আল-মারকাজুল ইসলামীর ভাইস চেয়ারম্যান মুফতি আবদুর রশিদ। তাকে দিয়ে গত ০৯ মে ২০১১ তারিখে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে এই মর্মে জবানবন্দী প্রদান করানো হয় যে, ‘তিনি ওই হামলার আগে মুফতি হান্নানসহ কয়েকজন জঙ্গি নেতা আল-মারকাজুলের অ্যাম্বুলেন্সে করে বনানীর হাওয়া ভবনে গিয়ে তারেক রহমান এবং অন্যান্যদের সাথে এই হামলা সংক্রান্ত বৈঠক করেন। এর পরদিনই, অর্থাৎ ১০ মে ২০১১ তারিখে তিনি তার নিজ দপ্তর আল-মারকাজুল ইসলামী কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান যে, তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আদালতে জবানবন্দী আদায় করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন-সিআইডির লোকজন গত ০৮ মে ২০১১ তারিখ সকালে তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে দেড়দিন সিআইডি অফিসে আটক করে রাখে। এসময়কালে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে পরে আদালতে সাজানো জবানবন্দী আদায় করা হয়। তিনি আরো বলেন- তাকে সিআইডি কার্যালয়ে চোখ বেঁধে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ২১শে আগস্টের ঘটনা সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না বলার পর তাকে আসামি করার হুমকি ও ফাঁসির ভয় দেখিয়ে একটি লিখিত জবানবন্দী পড়ে শোনানো হয়। তারপর বলা হয়, আদালতে বলতে হবে এটাই তার জবানবন্দী।
রিজভী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর সরকারের ক্রোধ, রোষ আর জিঘাংসা কত ভয়ঙ্কর তা উপরোল্লিখিত বর্বর নির্যাতনের বর্ণনায় ফুটে উঠেছে। অর্থাৎ তারেক রহমানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে উক্ত মামলায় জড়ানোর জন্য মুফতি হান্নানের ওপর এই পৈশাচিক অত্যাচার। জনজীবনকে নির্বিঘ্ন করার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর, অথচ তাদেরই কিছু লোক যখন ক্ষমতা, পদ, পদোন্নতি ও অর্থের জন্য বিবেকশূণ্য হয়ে অন্যায় নির্দেশ পালন করে মনুষ্যত্বহীন হয়ে পড়ে তখন সমাজে নৈরাজ্যের ছায়া বিস্তার করে। বেআইনী শাসনের পরিসর বৃদ্ধি পাওয়াতেই ন্যায়-অন্যায়ের বিচারবোধ হারিয়ে গেছে আইন-আদালত-প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকদের কাছ থেকে। ফজলুল কবির, কাহার আকন্দরা এই দেশ এই সমাজেরই লোক, অথচ নিজেদের জাগতিক স্বার্থ পূরণের জন্য নির্দোষ লোকদের ফাঁসাতে জোর করে অন্য একজনের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায়ের নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতার বিবরণ শুনে মানুষ বিমূঢ় হয়ে পড়ে। কিভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে আওয়ামী মহাজোট সরকারের প্রধান তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করতে আইনী মুখোশে সর্বনাশা চক্রান্তের খেলা খেলছেন, তা কারো অগোচরে নেই। সুতরাং এই গণবিরোধী সরকারের সাথে আপস করা মানে মানুষের বিপন্ন-জীবনের সঙ্গে আপস করা।
বিএনপির এই নেতা বলেন, গতকাল বিএনপির উদ্যোগে নিরপেক্ষ সরকারের দাবি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি সম্বলিত ৭ দফা এবং সুশাসনের অঙ্গীকার সম্বলিত ১২ দফা লক্ষ্যসহ একটি স¥রকলিপি জেলা প্রশাসক বরাবরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে হস্তান্তরের কর্মসূচি পালন করা হয়। আর এই কর্মসূচি পালনকালে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জাতীয় কবি নজরুলের সেই পংক্তিটির অর্থাৎ ‘পুলিশ শুধু করছে পরখ কার কতটা চামড়া পুরুর’ নীতি প্রয়োগ করে চলেছে নির্বিচারে। দেশের কয়েকটি জেলায় শান্তিপূর্ণ এই স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচিতে পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জে মিছিল পন্ড করা, পাইকারী হারে গ্রেফতার এবং আক্রমণে অনেক নেতাকর্মীকে আহত হয়।
রিজভী জানান, ঠাকুরগাঁও জেলায় ‘চল যাই যুদ্ধে দেশ মাতার মুক্তির লক্ষ্যে’ এই শ্লোগানে নেতাকর্মীরা কর্মস–চি পালনকালে বিনা উস্কানীতে পুলিশ হামলা চালিয়ে ব্যানার ছিনিয়ে নেয়। পুলিশের বেধড়ক লাঠিপেটায় প্রায় ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়। অনেকেই গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চট্টগ্রামে কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ আকস্মিক আক্রমণ চালিয়ে জেলা বিএনপি নেতা প্রফেসর কুতুবউদ্দিন, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপি নেতা ফজলুল হকসহ ৭ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে।
মুন্সিগঞ্জে বিকেল ৪টায় জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হাই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট স¥ারকলিপি হস্তান্তরের পূর্বে এক সমাবেশে বক্তব্য রাখার পরপরই পুলিশের অতর্কিত লাঠিচার্জে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। এসময় বিএনপি নেতা মো: রানা পুসতি, আলম সিকদার, হাসান মিয়া, আবদুল বাতেনসহ ১০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। এসময় পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের দলীয় কার্যালয়ে ১ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে।
পটুয়াখালী জেলায় স্মারকলিপি প্রদানের জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অভিমূখে বিএনপির একটি মিছিল এগিয়ে গেলে পুলিশ পথিমধ্যেই প্রচন্ড বাধা দেয়। গাজীপুর জেলা বিএনপির কার্যালয় পুলিশ সারাাদিন অবরুদ্ধ করে রাখে। ফেনী জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন সুমনকে গতরাতে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
গতকাল স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচিতে পুলিশের ন্যাক্কারজনক হামলা, নেতাকর্মীদেরকে আহত করা এবং গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। আহত নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।
রিজভী আরো বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা এখন প্রতিনিয়ত হামলা-মামলার শিকার। কোনো কারণ ছাড়াই কাল্পনিক মামলার বন্যায় ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে দেশকে। বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘুম হারাম করে দিয়েছে এই ভোটারবিহীন সরকার। কোনো ওয়ার্ডেই তিনজন নেতাকর্মী একসাথে চলাফেরা করতে পারছে না। এর ওপর ক্রমাগত চলছে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ির সামনে রাতের অন্ধকারে এসে থামে কালো টিনটেড গ্লাস দিয়ে ঢাকা মাইক্রোবাস, কর্কশ কড়া নাড়ার শব্দে ভেঙে চুরে খান খান হয়ে যায় রাতের নিস্তবদ্ধতা। বাসাবাড়ি তছনছ করে চলে চিরুনী তল্লাসী। তুলে নিয়ে যায় কিশোর, তরুণ, ছাত্রদল, যুবদল ও অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের, এমনকি বয়স্ক বিএনপির মানুষদেরও। খাল, বিল, নদীধারে মাইক্রো থেকে নামিয়ে চলে যেতে বলে, তারপর গুলি করা হয় পিছন থেকে, তা না হলে কিছুদিনের জন্য, নয়তো চিরদিনের জন্য গুম করে অদৃশ্য করা হচ্ছে। তা না হলে লকআপে চলানো হয় অকথ্য অত্যাচার নির্যাতন। বিরোধী দলের প্রতি সরকারের নীতি হচ্ছে- বিরোধী নেতাকর্মীদের ধড় থেকে মুন্ডু খসিয়ে ফেলার নীতি।নয়াদিগন্ত।