ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপিকে দেশে কোনো ধরনের অশান্তি সৃষ্টি করার সুযোগ দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, ‘দেশে কোনো অশান্তি নেই। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি দেশে অশান্তি সৃষ্টি করতে চায়। আমরা দেশে অশান্তি হতে দেব না।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, তারা (বিএনপি) আগামী জাতীয় নির্বাচনকে বানচাল করতে ২০১৪ সালের মত সন্ত্রাস ও নাশকতা করলে জনগণ তার সমুচিত জবাব দেবে।
ওবায়দুল কাদের শনিবার দুপুরে রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার মোড়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দলের সপ্তাহব্যাপী গণসংযোগ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠান পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত ও সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের রাজনীতে কোন সংকট নেই। বিএনপি সংকটে রয়েছে। কারণ বিএনপির এক নেতা অপর নেতাকে সরকারের দালাল হিসেবে গালি দেয়। আর তারা কোন সমাবেশ করলে নিজেরাই মারামারি করে আহত হয়।
তিনি বলেন, বিএনপি গত দশ বছরে কোন আন্দোলন করতে পারেনি। আর আগামী একমাসেও তারা আন্দোলন করতে পারবে না। বিএনপির মরাগাঙ্গে আর কখনো জোয়ার আসবে না। তাই তারা আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আন্দোলন নয়, সন্ত্রাস ও নাশকতা করার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।
তিনি আরো বলেন, তারা (বিএনপি) নির্বাচনকে বানচাল করতে ২০১৪ সালের মত সন্ত্রাস ও নাশকতা করতে চাইলে দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তাদের প্রতিহত করতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার মওদুদ আহমেদের বক্তব্যের জবাবে সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, বহুরুপী ব্যরিস্টার মওদুদ আহমেদ আগস্ট মাস থেকে বলে আসছেন এ মাসেই দেশে বড় ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে। কিন্তু আগস্ট মাস গেল, সেপ্টেম্বর মাসও গেল, দেশে তো কোনো পরিবর্তন হলো না। আবার তিনি এ মাসেও বলেছেন দেশে বড় পরিবর্তন হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘কোন ঐশী বাণী পেয়েছেন তিনি । আগস্ট মাস থেকে তিনি এ কথা বলে আসছেন। তার এক মাস কখনো শেষ হবে না। অক্টোবরে দেশের কোন পরিবর্তন হবে না, বিএনপিতেই বড় পরিবর্তন আসবে।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, বিএনপি তাদের গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি আত্মস্বীকৃত দেউলিয়া ও দুর্নীতিবাজ সংগঠনে পরিনত হয়েছে।
ক্যান্টনমেন্টে বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ি হারানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া তার ক্যান্টনমেন্টের বাড়ী রক্ষা করার জন্য মওদুদ আহমেদের পরামর্শ নিয়ে আদালতে গিয়েছিলেন। আদালতে রায়ে শেষ পর্যন্ত বাড়ি হাত ছাড়া হয়েছে, তেমনি মির্জা ফখরুল তার কথা যতই শুনবেন, ততই তিনি ডুববেন।
সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে, আর দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় আনতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে বাঁচাতে হলে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই।
মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য পুরান ঢাকাবাসীর প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে পুরান ঢাকা ঐতিহ্যকে ধারণ করে নতুন ঢাকায় পরিনত করা হবে।
এ সময় তিনি পানি, বিদুৎ, সন্তানের পরিচয়ে মায়ের নাম, মোবাইল, ইন্টারনেট, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট পাঠানো, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেবা কেন্দ্রসহ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন।
পরে তিনি দলীয় নেতাদের নিয়ে চকবাজার মোড়ের বিভিন্ন মার্কেটে সরকারের উন্নয়ন ও অর্জন এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির জামায়াতের নাশকতার পরিকল্পনা সম্পর্কে সচেতন করতে তৈরি দলীয় লিফলেট বিতরণ করেন।