মানচিত্রে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ দাবি করেছে মিয়ানমার : ঢাকার প্রতিবাদ

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ মানচিত্রে বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে নিজ দেশের অংশ হিসাবে দাবি করেছে মিয়ানমার। উষ্কানিমূলক এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে শনিবার দুপুরে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত লুইন উ’কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব রিয়ার এডমিরাল (অব:) খুরশীদ আলম রাষ্ট্রদূতের হাতে একটি প্রতিবাদপত্র তুলে দেন। ঘটনাটি ‘অনিচ্ছাকৃত’ মন্তব্য করে দু:খ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রদূত।

মিয়ানমারের শ্রম, অভিবাসন ও জনসংখ্যা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া মানচিত্রে বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে প্রতিবেশী দেশটি নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ হিসাবে দেখিয়েছে। অথচ আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমার নিষ্পত্তিতে সেন্ট মার্টিনকে ভিত্তি করে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত উত্থাপন করেছিল। এ সব তথ্য-উপাত্ত আমলে নিয়েই আন্তর্জাতিক আদালত মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা নিষ্পত্তি করেছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করছে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে থেকে দৃষ্টি সরাতে মিয়ানমার ইচ্ছাকৃতভাবে এই কাজটি করেছে। গত বছর ২৫ আগস্ট  থেকে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনী নজীরবিহীন দমন-পীড়ন চালায়। এ সময় দলে দলে রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে। আর বিষয়টি থেকে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি সরাতে বাংলাদেশকে সঙ্ঘাতে জড়াতে উষ্কানি দিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হেলিকাপ্টার ও ড্রেন বারবার সীমানা লঙ্ঘন করেছে। মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে একাধিকাবার তলব করে বাংলাদেশ এর প্রতিবাদ জানিয়েছিল। তবে কোনো ধরনের সামরিক সঙ্ঘতে জড়ায়নি। বরং রোহিঙ্গা ইস্যুটি মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে আন্তর্জাতিক মহলে উত্থাপন করে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ।

সম্প্রতি জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের তথ্যানুসন্ধান দলের প্রতিবেদনে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীকে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ী করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। মিয়ানমারকে দেয়া বাজার সুবিধা পুনর্বিবেচনা করতে মানবাধিকার নিয়ে তদন্ত করতে তথ্যানুসন্ধান দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সুনির্দিষ্ট নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এসব পদক্ষেপে বেকায়দায় থাকা মিয়ানমার মানচিত্র নিয়ে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করে দৃষ্টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে চাইছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।