গত মাসে যশোরে আটক করা হয়েছে ৬শ’ নির্বাচনের আগে আটকের টার্গেট ৩ হাজার

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃযশোর:আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই যশোর সদর উপজেলা এলাকা থেকে ৩ হাজার অভিযুক্তকে আটকের টার্গেট হাতে নিয়েছে যশোর কোতোয়ালী পুলিশ। ইতিমধ্যে যশোরে বছরের পর বছর আটক এড়িয়ে চলা ৬শ’ আসামিকে আটক করেছে গত মাসে। তবে পলাতক আসামি আটকে পুলিশ মরিয়াভাবে মাঠে নামলেও আটকের সময় নানামুখি রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট অফিসারকে। এছাড়া অনেক মোস্টওয়ান্টেড অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকায় তাদের আটক নিয়ে শংকায় আছেন স্থানীয়রা।
যশোর কোতোয়ালী থানা সূত্র জানিয়েছে, ২০১২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সদর উপজেলা এলাকায় পলাতক আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় সাত হাজারের উপরে। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে ওই সব আসামি আটকে জিরো টলারেন্স ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়। যশোরের আইন শৃংখলার আশানুরূপ উন্নয়ন ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংঘাত মুক্ত শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত, মামলার সাজাপ্রাপ্ত ও আটকাদেষ প্রাপ্ত আসামি ও পলাতক আসামি দ্রুত আটক করতে বলা হয়। জিআর, সিআর, নাশি, পারিজারিসহ কয়েকডজন ধারার মামলার আসামি আটকে গত মাসেই জোরেসোরে মাঠে নামে পুলিশের কয়েক ডজন টিম। নির্দেশ


নির্বাচনের আগে আটকের টার্গেট ৩ হাজার

না মোতাবেক যশোর সদর উপজেলায় কোতোয়ালী থানা এলাকার আওতাধীন সব স্পটে চোরাগুপ্তাভাবে থাকা, বা ঘাপটি মেরে থাকা কিংবা ঠিকানা পরিবর্তন করে অন্যত্র অবস্থান করা সব আসামিকে খুঁজে খুঁজে আটকে অভিযান চলে। মোস্ট ওয়ান্টেড শতাধিক সন্ত্রাসী, অস্ত্র, হত্যা, ডাকাতি, দস্যুতা, নাশকতা, চুরি, ছিনতাই, নারী নির্যাতন, অপহরণ, গুম, তথ্য প্রযুক্তি আইন, অনধিকার প্রবেশ, হত্যা চেষ্টা, সরকারি সম্পদহানী, মাদক,  চোরাকারবারীসহ আরও নানা অপরাধে যুক্ত আসামি আটক শুরু হয়। গত ১০ সেপ্টেম্বর জেলা পুলিশের উপর মহলের নির্দেশনায় যশোর কোতোয়ালী থানার অফিসাররা হাতে আসামিদের তালিকা নিয়ে কাজ শুরু করেন।  মাত্র ২০ দিনের অভিযানে পুলিশ ৬শ’ জন অভিযুক্ত আটক করতে সক্ষম হয়েছে।
তবে তথ্য মিলেছে, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড ভিত্তিক আসামিদের তালিকা করে মাঠে নামলেও অনেক অস্ত্রধারী মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসীকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, যশোর সদর উপজেলায় কমপক্ষে একশ’ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী জনপ্রতিনিধিদের ছত্রছায়ায় রয়েছে। আবার নির্দিষ্ট অনেক সিন্ডিকেটে ডজন ডজন আসামি রয়েছে, যারা এখনও আটক এড়িয়ে চলছে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলের কোনো একটি অংশে ভিড় করে সভা মিছিলে অংশ নিচ্ছে। আধিপত্য বিস্তার ও স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষমতার ভাগাভাগি বিরোধে নেতা-জনপ্রতিনিধিদের আশ্রিত হয়েও অনেক আসামি রয়েছে। এরা যশোর শহর ও শহরতলীর আইন শৃংখলা ও মানুষের জানমাল নিরাপত্তা হুমকিতে ফেলে চলেছে। তাদের কারণেই ঘটে যাচ্ছে হত্যকান্ড, ছুরিকাঘাতে হত্যার চেষ্টা। আর নিরব চাঁদাবাজিতো হচ্ছেই। এসব ঘটনা রোধ করতে শান্তিপ্রিয় মানুষ পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন শুধু থানার খাতার পলাতক আসামিই নয় রাজনৈতিক লেবাসের দাগি সন্ত্রাসীদের আটকের দাবি জানিয়েছেন।
থানার একটি সিভিল টিমের একজন অফিসার জানিয়েছেন, সাজাপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামি এবং রাজনৈতিক সেল্টারের আসামি আটক বেশ শক্ত কাজ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। ৫০ জন আসামি টার্গেট নিয়ে গেলে আটক সম্ভব হচ্ছে ৩/৪ জন। আর তদবির ও রাজনৈতিক চাপতো আসছেই।
এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ অপূর্ব হাসান গ্রামের কাগজকে জানান, কোনো তদবির চাপ আমলে নেয়া হবে না। আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে কমপক্ষে ৩ হাজার আসামি আটক করার টার্গেট রয়েছে। গত মাসে ৬শ’ জনকে আটক করা হয়েছে। বিগত  মাসে গড়ে আটক হয়েছিল ৭০ জন করে। সে তুলনায় গত মাসে আটক হয়েছে ৬ গুন বেশি। ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড ওয়ারী তালিকা করে আটক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। টার্গেট করা আটকের তালিকায় শতাধিক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রয়েছে।

Check Also

আশাশুনিতে টঙ্গী ইজতেমায় হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।ঢাকার টঙ্গীত ইজতেমা-মাঠে নিরীহ মুসল্লিদের উপর উগ্রবাদী সন্ত্রাসী সাদ পন্থীদের বর্বরোচিত হামলা ও পরিকল্পিত …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।