ক্রাইমবার্তা রিপোট: আশা ছাড়েননি ড. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। শর্ত পূরণ করলে তিনি এখনো জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে ফিরতে চান। এজন্য দুটি শর্তের কথা জানিয়েছেন। এর মধ্যে একটি শর্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দলকে ১৫০টি আসন ছেড়ে দিতে হবে।
শনিবার সন্ধ্যায় বারিধারার বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে বি. চৌধুরী এই শর্ত দেন।
তিনি বলেন, ‘দুটি শর্ত পূরণ হলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে ফিরবে বিকল্পধারা। এর একটি হলো, স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষাভাবে কোনো ঐক্য হতে পারবে না। আর দ্বিতীয়টি হলো, সংসদে ভারসাম্য ও স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধে বিকল্পধারাকে ১৫০ আসন দিতে হবে।’
সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আপাতত মনে হয়েছে, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় স্বাধীনতা বিরোধিরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রয়েছে। এমন প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিকল্পধারা থাকতে পারে না।’
তবে শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আত্মপ্রকাশ করা জাতীয় ঐক্যফন্টের প্রধান ড. কামাল হোসেনের আমন্ত্রণে তার বাসায় গিয়ে ফিরে এসে হতাশ হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, যুগ্ম-মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী, মাহবুব আলী, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, হাফিজুর রহমান ঝান্টু, ওবায়েদুর রহমান মৃধা, আসাদুজ্জামান বাচ্চু, বিএম নিজাম প্রমুখ।
এর আগে ড. কামাল হোসেনের বাড়ির সামনে থেকে ফিরে যান অধ্যাপক বি. চৌধুরী। শনিবার বিকেল ৩টায় ড. কামালের বাসভবনে দুই নেতার বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী বি, চৌধুরী এসেছিলেন। কিন্তু এসে বাসার দরজা বন্ধ দেখতে পেয়ে চলে যান।
এদিকে আজ সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছে গণফোরাম, ঐক্য প্রক্রিয়া ও বিএনপি। এতে মাহমুদুর রহমান মান্নাও উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
দেশে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রূপরেখা এবং দাবি-দাওয়া চুড়ান্ত করতে শনিবার ড. কামাল হোসেনের বাসায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। বিকাল ৩ টায় ড.কামাল হোসেন ও বি চৌধুরীর মধ্যে বৈঠকের পরে বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট ও ঐক্য প্রত্রিয়ার মধ্যে আলোচনা হওয়া কথা- এমনটা জানানো হয়েছিল গতকাল।।।
রূপরেখায় বিএনপি, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্টের নেতারা একমত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছিল।। এতে দফা এবং লক্ষ্যও চুড়ান্ত করা হয়েছে। তবে পুরো বিষয়টি নিয়ে শনিবার বৈঠকে বসে চুড়ান্ত করা হবে বলে জানানো হয়।
গতকাল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন নয়া দিগন্ত প্রতিবেদককে জানান, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার রূপরেখা প্রস্তুত হয়েছে। তবে আন্দোলনের অভিন্ন লক্ষ্য ও দাবির খসড়াও চূড়ান্ত করতে আজ আবার বসবেন তারা। তিনি জানান দীর্ঘ আলাপ আলোচনার পর আমরা বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছে। ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্টা এবং ভোটের অধিকার রক্ষায় এক সঙ্গে আমরা আন্দোলন করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। এজন্য অভিন্ন দাবিদাওয়া, লক্ষ্য এবং রূপরেখার খসড়া চুড়ান্ত করেছি। দুই একদিনের মধ্যে আরও একদফা বৈঠকের পর এটি ঘোষণা করা হবে।
গতকাল বিকালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের উত্তরার বাসায় এই বৈঠক শুরু হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক করে তারা ৬টা ২৭ মিনিটে বের হন। বিএনপির পক্ষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার পক্ষে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহম্মেদ, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, দলটির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদুল্লাহ কায়সার, ডা. জাহিদুর রহমান, জেএসডির সহ-সভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী, দলটির কেন্দ্রীয় নেতা ওমর ফারুক প্রমূখ এই বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠক শেষে নেতারা একসঙ্গে বারিধারায় সাবেক রাষ্ট্রপতি ও যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাসভবন মায়াবীতে যন। তারা বি. চৌধুরীর ৮৮ তম জন্মদিন উপলক্ষে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এক সঙ্গে কেক কাটেন।