কওমী মাদরাসা সনদের স্বীকৃতি আর হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফার আন্দোলন এক নয়। হেফাজতে ইসলাম মুসলমানদের ঈমান-আক্বিদা রক্ষার সংগ্রামে একটি বৃহত্তম ধর্মীয় সংগঠন। আমরা এই ঈমানী আন্দোলনের নীতি ও আদর্শ সংরক্ষণে সদা প্রস্তুত রয়েছি। হেফাজত কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয় এবং কোনো রাজনৈতিক লক্ষ্য হেফাজতের নেই। কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না, কাউকে মনোনয়ন বা সমর্থন দেয়নি, দিবেও না। কিন্তু কোনো নাস্তিক বা তাদের দোসররা যেন নির্বাচনে আসতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। ১৩ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত হেফাজতের আন্দোলন চলবে ইনশাআল্লাহ।
শনিবার হাটহাজারী পার্বতী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দারুল উলূম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক, আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান, হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমাদ শফীকে ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি ও সেবামূলক সংগঠন আল আমিন সংস্থার উদ্যোগে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বন ও পরিবেশমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আল্লামা শফী আওয়ামী লীগ হলে সর্বপ্রথম আমি জানতাম। তিনি একজন সাধারণ মনের মানুষ। আমার পিতা-মাতাও হুজুরের ভক্ত। স্বীকৃতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য নেই। তিনি নিজ দায়িত্ব থেকে এই স্বীকৃতি দিয়েছেন। তিনি একজন ধার্মীক ও দ্বীন প্রিয় মানুষ। আমরা সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও বিসমিল্লাহ বদলায়নি।
সংস্থার উপদেষ্টা মুফতী জসীম উদ্দীনের সভাপতিত্ব ও মাওলানা ইবরাহিম খলীলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মাওলানা আবু তাহের নদভী, জসীমুদ্দীন নদভী, মাওলানা কুতুবুদ্দিন নানুপুরি, মাওলানা লোকমান, মাওলানা তাজুল ইসলাম, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা নূরুল ইসলাম, মাওলানা মীর ইদরীস, অধ্যক্ষ মীর কফিল উদ্দিন, অ্যাডভোকেট শামীম, মুফতি আব্দুল আজীজ, মাওলানা শফিউল্লাহ, মুহাম্মাদ আহসান উল্লাহ, মাওলানা ইবরাহিম খলিল সিকদার, মাওলানা সরওয়ার কামাল, রহিম শাহ প্রমুখ।
আরো পড়ুন :
ইসলামী ঐক্যজোট থেকে বাবুনগরীর পদত্যাগ
হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ইসলামী ঐক্যজোট থেকে পদত্যাগ করেছেন। বুধবার রাতে তার পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়েছে তার পরিবার।
গতকাল পদত্যাগের একটি ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তিনি ইসলামী ঐক্যজোট থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিনি শুধু ইসলামী ঐক্যজোট নয়, হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমিরের পদ থেকেও পদত্যাগ করছেন। যদিও হেফাজত থেকে পদত্যাগের ব্যাপারে পরিবার ও সংগঠনের কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সম্প্রতি দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমান দেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা এবং ‘আওয়ামী লীগ হয়ে গেলেও আমার কোনো আপত্তি নেই’ হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মন্তব্যে এবং হেফাজতে আল্লামা শফীর পরিবারের একচেটিয়া দাপটের কারণে টানাপড়েন শুরু হয়।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদরাসার মুহতামিম মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী দীর্ঘ দিন ধরে ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র নায়েবে আমিরের পদে ছিলেন। পদত্যাগপত্রে তিনি বলেছেন, আমি আওয়ামী লীগের এজেন্টদের সাথে নেই।
ইসলামী ঐক্যজোট থেকে মুহ্বিুল্লাহ বাবুনগরীর পদত্যাগের পর
হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির, দেশের প্রবীণ আলেম আল্লামা মুহ্বিুল্লাহ বাবুনগরী ইসলামী ঐক্যজোট থেকে পদত্যাগ করায় তাকে অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৫০১ আলেম। গতকাল যাত্রাবাড়ী আশরাফিয়া মাদরাসার মুহতামীম মাওলানা জাফর আহমদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেন, হক্কানী আলেমরা কখনো ধর্মনিরপেক্ষতাবাদকে সমর্থন করতে পারে না। তারা এ মতবাদকে কুফুরি মতবাদ আখ্যায়িত করে কোনো হক্কানী আলেম নীতি-আদর্শ বিসর্জন দিয়ে বাতিল শক্তির সাথে আঁতাত করতে পারেন না। আল্লামা বাবুনগরী সময়োপযোগী ও সাহসী সিদ্ধান্ত নেয়ায় দেশবাসীর পক্ষ থেকে আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই। তারা বলেন, কওমি সনদের স্বীকৃতি ওলামায়ে কেরামের ন্যায্য অধিকার, এ জন্য ওলামায়ে কেরামের ঐতিহ্য বিলীন করে কারো গোলাম হওয়া যাবে না।
বিবৃতিদাতাদের অন্যতম হলেন : মুফতি হিফজুর রহমান, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা মফিজুর রহমান, মুফতি আব্দুল বারী, মাওলানা আল আমীন, মাওলানা মুজিবুর রহমান, মাওলানা আশরাফুল হক আমিনী, মাওলানা জাফর আহমদ, মাওলানা আমানুল্লাহ, মাওলানা ইসহাক শরিফ, মাওলানা মুফতি সিদ্দিকুর রহমান, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, মুফতি রুহুল আমীন, মাওলানা সুলাইমান, মাওলানা অলিউর রহমান, মাওলানা ফারুক আহমদ, মুফতি জসিম উদ্দিন প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি।