বিবিসি : যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা উপকূল দিয়ে বয়ে যাওয়ার সময় ‘দানবীয়’ ঘূর্ণিঝড় মাইকেল অভাবনীয় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে সমুদ্র তীরবর্তী একটি এলাকাকে ‘মানচিত্র থেকে প্রায় মুছে দিয়েছে’ বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। ফ্লোরিডার উত্তর পশ্চিম উপকূলে মেক্সিকো বিচ শহরের কাছেই গত বুধবার ঘণ্টায় আড়াইশ কিলোমিটার গতির বাতাস নিয়ে আছড়ে পড়েছিল চার মাত্রার হারিকেন মাইকেল। যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখ-ে আঘাত হানা অন্যতম শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ১৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে এখনো পুরো মাত্রায় উদ্ধার তৎপরতা শুরু না হওয়ায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। মাইকেলের এ তা-বলীলাকে সবচেয়ে বড় বোমা ‘মাদার অব অল বোম্বস’ এর ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গেও তুলনা করা হচ্ছে। মেক্সিকো বিচে এখনো কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে জরুরি বিভাগের কর্মীরা এখনো সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে পৌঁছাতে না পারায় সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। শহরটির হাজারখানেক বাসিন্দার সবাইকে ঝড়ের আগেই নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছিলেন কর্মকর্তারা, তারপরও প্রায় ২৮৫ জন ওই নির্দেশ না মানায় উদ্বেগ বাড়ছে। ঝড়ের কারণে ফ্লোরিডা, আলাবামা, জর্জিয়া, ভার্জিনিয়া ও ক্যারোলাইনার ১০ লাখেরও বেশি বাড়িঘর বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। কর্মকর্তারা বলছেন, আঘাত হানার সময় মাইকেলের গতিবেগ ছিল পাঁচ মাত্রার চেয়ে সামান্য কম। তীব্র বাতাস উপকূলীয় শহরগুলোর অসংখ্য বাড়িঘর ও গাছপালা গোড়া থেকে উপড়ে ফেলেছে; ৩০ টন ওজনের মালবাহী রেলের বগিকে উড়িয়ে নিয়েছে খেলনার মতো। মাইকেলের কারণে প্রায় ৮০০ কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা দিয়েছে বীমা কোম্পানি কারেন ক্লার্ক।
ঘূর্ণিঝড় নর্থ ক্যারোলাইনার বড় দুটি শহর ও ভার্জিনিয়ার কিছু অংশেও তাৎক্ষণিক বন্যা নিয়ে আসে। ভার্জিনিয়ায় অন্তত ৫টি টর্নেডো হয়েছে বলেও ধারণা সেখানকার পুলিশের। তবে সবচেয়ে বেশি তা-ব দেখেছে ফ্লোরিডার প্যানহ্যান্ডেল। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও উদ্ধারকারী দলগুলোর কয়েক হাজার সদস্যকে সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্ধারকাজে কুকুরের পাশাপাশি ড্রোন ও জিপিএস সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে বিবিসি। ঝড়ের কারণে হওয়া বন্যায় মেক্সিকো বিচের কাছাকাছি শহর পোর্ট সেইন্ট জো-র প্রায় এক হাজার বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।