মনিরামপুরে বিএনপি-জামায়াতের ৬৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আবারও মামলা ॥ আটক ১১

মনিরামপুর (যশোর) সংবাদদাতা : মনিরামপুর উপজেলা বিএনপি সভাপতি এ্যাড. শহীদ মো: ইকবাল হোসেন, জামায়াতের আমীর মাওলানা লেয়াকত হোসেন সহ দলের ৬৫ নেতাকর্মীকে আসামী করে আবারও পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। বুধবার মনিরামপুর থানার উপ-পরিদর্শক তপন কুমার ও জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিদর্শক মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন। যার মামলা নং-১৯ ও ২০।

বিস্ফোরক আইনের করা এ মামলায় আরও আসামী করা হয়েছে উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফজলুল হক, মাওলানা মিজানুর রহমান, জামায়াতের বর্তমান উপজেলা সেক্রেটারী মাওলানা মহিউল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সহ: সভাপতি ও ঢাকুরিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, রোহিতা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, থানা বিএনপির সাংগাঠনিক সম্পাদক এ্যাড. মকবুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি খাইরুল ইসলামসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের ৬৫ নেতাকর্মী। এছাড়াও মামলা দুটিতে অজ্ঞাত হিসেবেও প্রায় অর্ধ-শতাধিক ব্যক্তিকে আসামী করা হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে এদের মধ্যে জামায়াতের সাবেক আমীর মিজানুর রহমানসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

থানা সূত্র জানায়, বুধবার সকাল ৬টার দিকে মনিরামপুর ডিগ্রী কলেজের মসজিদের পশ্চিম পাশে নাশকতার পরিকল্পনা করা কালীন সময়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ১০টি তাজা বোমা উদ্ধার করা হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের বিশেষ শাখার উপ-পরিদর্শক মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে বুধবার থানায় মামলাটি করে।

অপর মামলাটির বাদী উপ-পরিদর্শক তপন কুমার রায় দাবী কররেছেন আসামীরা সরকার বিরোধী কর্মককান্ড ঘটাতে বুধবার ভোরে হাকোবা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় জড়ো হয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ২/৩টি বোমার বিস্ফোরন ঘটায়। ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত বোমার আলামত জব্দ করা হয়েছে।

এদিকে মামলা আতংকে ঘরছাড়া বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। তারপরও মামলা থেকে রেহাই মিলছে না বলে দাবী করেছেন ভুক্তোভোগীরা। দাবী করা হয়েছে থানা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. শহীদ মো: ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত মামলা করা হয়েছে ৩৭টি, জামায়াতের আমীর মাওলানা লিয়াকতের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে ১৫টি, বিএনপি নেতা ঢাকুরিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান জি, এম মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ৪১টি, থানা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা মহিউল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৪টি, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফজলুল হকের বিরুদ্ধে ৩৮টি মামলা দেয়া হয়েছে। তবে এ মামলা থেকে অসুস্থ ব্যক্তিদেরকেউ রেহাই মিলছে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জামায়াতের এক শীর্ষ নেতা জানান, খানপুর ইউনিয়ন জামায়াতের নেতা মাওলানা নূর মোহাম্মদ ব্রেনষ্ট্রোক হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অথচ বুধবার থানায় দায়ের করা মামলায় তাকেও আসামী করা হয়েছে। বিএনপি নেতা জি, এম মিজানুর রহমান জানান, হামলা-মামলার ভয়ে উপাজেলা ছেড়েছি অনেক আগে থেকেই। তারপরও ৪১টি মামলা এ পর্যন্ত আমার ঘাড়ে চেপে বসেছে।

এদিকে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, পুলিশি গ্রেফতার এড়াতে বিএনপি জামায়াতের অধিকাংশ নেতাকর্মী বাড়িঘর ছেড়ে বিভিন্ন স্থানে আশ্রায় নিয়েছে। তারপরও বাড়িঘরে পুলিশি অভিযান অব্যহত রয়েছে।

এ ব্যাপারে মনিরামপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সহিদুল ইসলাম জানান, কোন নিরপরাধ ব্যক্তিকে থানা পুলিশ হয়রানী বা গ্রেফতার করবেন না। অপরাধ করলেই সে যেই হোক আইনের আওতায় আনা হবে।

Check Also

সাতক্ষীরায় পুত্রবধূর হাতে নির্যাতিত সেই স্কুলশিক্ষক মারা গেছেন

ক্রাইমবাতা রিপোট, সাতক্ষীরা:   ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।