ক্রাইমবার্তা রিপোট: নৌমন্ত্রী শাজাহান খান এমপি বলেছেন, যে জাতি স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে আন্দোলন করে, যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে, সেই স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে যারা জাতীয় ঐক্য করেছে তারা জাতীর শত্রু। ন্যাপ নেই, এনপিপি নেই কিছুদিনের মধ্যে দেখবেন আরও অনেক দল এখানে থাকবে না। জাতীয় ঐক্যের কথা বলছেন কার সাথে জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে জাতীয় ঐক্য হতে পারেনা। ওটা জাতীয় ঐক্য নয়; ওটা হচ্ছে জাতীয় শত্রুদের ঐক্য।
ড. কামাল হোসেন ভাওতাবাজি করছেন মন্তব্য করে মন্ত্রী আরও বলেন, ড. কামাল বলেছিলেন তালেবানদের সাথে কোন ঐক্য নয়, অথচ গেলেন তাদের সাথে। ২০ দলে কি জামায়াত নেই?
শুক্রবার সকাল ১০টায় বরিশাল নদী বন্দর টার্মিনালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন করপোরেশন বিআইডব্লিউটিসি’র বরিশাল আঞ্চলিক অফিস কাম বাণিজ্যিক ভবনের উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নে ক্ষিপ্ত হয়ে দেশে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। যাদের রাজনীতিতে কোন খবরই ছিলো না। হঠাৎ করেই তারা শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেছেন। তারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার কথা বলছেন। বিএনপি-জামায়াত যখন গাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে তখন কোথায় ছিলেন ড. কামাল ও তার সাথীরা। যারা মানুষ পুরিয়ে হত্যা করে তাদের জন্য গণতন্ত্র হতে পারেনা।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অপ্রতিরোধ্য শাসন আমলে দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি যখনই ক্ষমতায় এসেছেন তখনি দেশের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে তা বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। সেই নেত্রীকেই ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। বিএনপি ও জামায়াতের উদ্দেশ্য ছিলো বাংলাদেশকে ধ্বংস করে পাকিস্তানী ভাবনায় দেশ পরিচালনা করা। এ ষড়যন্ত্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মফিজুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুস সামাদ, বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস, বরিশাল-৫ আসনের সাংসদ জেবুন্নেছা আফরোজ, বিআইডব্লিউটিএ’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোশারফ হোসেন, নৌ-পুলিশ সুপার কফিল উদ্দিন প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইডব্লিউটিসি’র পরিচালক সাহাদাত হোসেন। এর আগে নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি ফিতা কেটে ভবনটের উদ্বোধন করেন।
বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে নৌমন্ত্রী বলেন, দেশে খাদ্য ঘাটতি নেই। বর্তমানে দেশে ১১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে বলে ঘোষনা দিয়েছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) একশ’ বছরের ডেল্টা প্রকল্প প্রনয়ন করেছেন। বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি সাধারন কৃষকদের সার বিতরন, বয়স্ক ভাতা, বিধাব ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান করছেন। মন্ত্রী আরও বলেন, বরিশালে ইতোমধ্যে পাইলট বিশ্রামাগার নির্মান করা হয়েছে। টার্মিনালের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এবং জমি যাতে বেদখল না হয় সেজন্য বনায়ন করা হয়েছে। বরিশাল নৌ-বন্দরের উত্তর পাশে বহুতল ভবন নির্মান করা হবে। বরিশাল নদী বন্দর থেকে স্টীমার ঘাট এবং পোর্ট রোড মৎস্য বন্দর পর্যন্ত উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। এছাড়াও এখানে বহুতল ভবন ও শপিং মল নির্মান করা হবে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
সূত্রমতে, বরিশাল নদী বন্দর টার্মিনালের সামনের প্রায় ১৪ শতক জমির উপর চার কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ৪৭০টাকা ব্যায়ে ছয়তলা বিশিষ্ট বাণিজ্যিক ভবন নির্মান করা হয়। দ্বিতীয় থেকে ষষ্ঠ তলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক স্পেস রাখা হয়েছে। পাশাপাশি নিচ তলায় ১৩টি বাণিজ্যিক দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও ষষ্ঠ তলার দক্ষিণ অংশে বিআইডব্লিউটিসির রেস্ট হাউজ করা হয়েছে।