হাফিজুর রহমান শিমুল কালিগঞ্জ ( সাতক্ষীরা) থেকে:সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত চেয়ারম্যানের কবরে আগুন ধরাতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে আবদুল জব্বার নামের এক সন্ত্রাসী। ঘটনাটি শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামে ঘটেছে। চেয়ারম্যান মোশারাফের নিজ চেষ্টায় নির্মিত স্কুল ও মসজিদের সামনে কবর দেওয়া হয় কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির সাতক্ষীরা জেলা শাখার সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম মোশাররফ হোসেনকে। গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে সন্ত্রাসীরা তাঁকে গুলি করে হত্যা করে। প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান হাফিজুর রহমান জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দুজন ব্যক্তি দুটি বোতলে দুই লিটার পেট্রোল নিয়ে চেয়ারম্যান মোশাররফের কবরের ওপর কিছু কাগজপত্র জড়ো করে আগুন ধরানোর প্রস্তুতি নিয়েছিল। এ সময় গ্রামের চৌকিদার শাহিন তা দেখে ফেলেন। তিনি দ্রুত ধাওয়া করে একজনকে ধরে ফেলেন। তাঁর নাম আবদুল জব্বার। অপরজন পালিয়ে যান। নিহত চেয়ারম্যানের প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁকে দিয়ে এই কাজ করিয়েছে পুলিশকে জানিয়েছেন আটক জব্বার। গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে কৃষ্ণনগর বাজারে যুবলীগ কার্যালয়ে বসে থাকাকালে চেয়ারম্যান কেএম মোশাররফ হোসেনকে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় একই ইউপির সদস্য ও ইউনিয়ন জাতীয় শ্রমিকলীগের লীগের সভাপতি আবদুল জলিল গাইন ওরফে ডাকাত জলিল ওরফে খুনে জলিলকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন নিহতের মেয়ে সাফিয়া পারভিন। আসামি আবদুল জলিল গাইনকে ১৪ সেপ্টেম্বর আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ পরদিন জলিলকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারের জন্য কৃষ্ণনগরে যাওয়া মাত্র হাজার হাজার লোক এসে জোর করে তাঁকে ছিনিয়ে নেয়। ক্ষুব্ধ জনতা তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েকটি ফাঁকা গুলি করে। কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান হাফিজুর রহমান জানান, চেয়ারম্যান মোশাররফকে যেখানে হত্যা করা হয়েছিল সেখানেই তাঁর হত্যা মামলার প্রধান আসামি জলিলকে পিটুনি দিয়ে হত্যা করে উত্তেজিত জনতা। গণপিটুনি থেকে রক্ষা করতে গিয়ে পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। এদিকে মৃত্যুর পর জলিল গাইনের লাশ গ্রহণ করেননি তাঁর পরিবারের সদস্যরা। পুলিশী পাহারায় ১৬ সেপ্টেম্বর লাশ গ্রামের বাড়ি কৃষ্ণনগরের শংকরপুরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে গ্রামবাসী বাধা দেয়। এমনকি তাঁর জানাজাও করতে দেয়নি। এ অবস্থায় জলিলকে কালীগঞ্জ উপজেলা সদরে সরকারি কবরস্থানে দাফন করা হয়। পিতারে কবরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরানোর চেষ্টা ও একজন আটকের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানতে বড় মেয়ে সাফিয়া পারভীন বলেন, এটা কেমন শত্রুতা? পিতাকে হত্যা করেও খ্যান্ত হয়নি সন্ত্রাসী চক্রটি। আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে নানান চক্রান্তের এটাও একটি চক্রান্ত। শনিবার সকাল ১০ টায় এর প্রতিবাদে বালিয়াডাঙ্গা বাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল হবে।
Check Also
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের কর্মশালায় সাংবাদিকদের দাওয়াত নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় হাওর না থাকলেও হাওরের ১০০ বছর এবং আমাদের করণীয়” বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত …