ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ অবশেষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে ২৪ অক্টোবর সিলেটে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে মহানগর পুলিশ। ২৪ অক্টোবর বিকেলে সিলেট রেজিস্টারি মাঠে সমাবেশের অনুমতির সাথে ১৪টি শর্ত জুড়ে দেয় পুলিশ। সিলেট মহানগর পুলিশের নগর বিশেষ শাখার উপ কমিশনার কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এই অনুমতিপত্রে ১৪টি শর্তের কথা জানানো হয়।
শর্তগুলো হলো-অনুষ্ঠানস্থলে পর্যাপ্ত সংখ্যক নারী ও পুরুষ স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে। রাষ্ট্রবিরোধী কোনো ধরণের বক্তব্য বা বিবৃতি দেওয়া যাবেনা। সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করে কিংবা ধর্মীয় অনুভূতি বা মূল্যবোধের উপর আঘাত হানে এ ধরণের কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান বা কোনো ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা যাবে না। জনসাধারণের চলাচলের রাস্তায় কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
নির্ধারিত স্থানে নির্ধারিত সময়ের (২টা থেকে ৫টা) মধ্যে কর্মসূচী শেষ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে জনগনের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করার আশঙ্কা সৃষ্টি করে এমন বক্তব্য প্রদান করা যাবে না বা এরূপ কথা সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা যাবে না।
মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহারের ফলে আশপাশের জনগনের যাতে কোনো অসুবিধা না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ব্যাগ, সিগারেট, দিয়াশলাই, লাইটার ইত্যাদি নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করা যাবে না। কোনো ধরণের লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র বা লাঠিযুক্ত ব্যানার ফেস্টুন ইত্যাদি বহন করা যাবে না। কোনো ধরণের বৈধ অস্ত্র সঙ্গে আনা/বহন করা যাবে না। সুরমা পয়েন্ট হতে তালতলা পয়েন্ট পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশে কোনো গাড়ি পার্কিং করা যাবে না। অনুষ্ঠানস্থলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন।
উল্লেখিত শর্তাবলির যেকোনো একটি বা একাধিক লঙ্ঘন/অমান্য করা হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে উক্ত অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।
আরো পড়ুন :
সিলেটে সমাবেশ হলেও ঐক্যফ্রন্টের চূড়ান্ত কর্মসূচি ঢাকা থেকে
সিলেটে বড় সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। রোববার বিকেলে সিলেটের রেজিষ্ট্রি মাঠে ২৪ অক্টোবর সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। এ সমাবেশে ফ্রন্টের সিনিয়র নেতারা এক মঞ্চ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্দোলন ও নির্বাচন নিয়ে নীতি নির্ধারণী বক্তব্য রাখবেন।
জানা গেছে, সিলেট বিএনপিই মূলত সব দলকে সাথে নিয়ে সমাবেশে বড় ধরনের শোডাউনের কাজটি চালিয়ে যাচ্ছে। সিলেটের চারটি জেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা সমাবেশে যোগ দেবেন। ঢাকা থেকে সিলেটে গিয়ে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা প্রথমে হযরত শাহজালাল (রহ:) ও হযরত শাহপরানের (রহ:) মাজার জিয়ারত করবেন। পরে তারা সমাবেশে যোগ দেবেন।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ঐক্যফন্টের শীর্ষ নেতারা বিমানযোগে সিলেটে যাবেন। অন্য নেতারা যাবেন সড়কপথে।
সিলেট বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বলেছেন, রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সমাবেশের অনুমতি প্রদানের লিখিত চিঠি তারা পেয়েছেন। ১৪ শর্তে অনুমতি দেয়া হয়েছে। বিকেল ২ টা থেকে ৫টার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে বলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সমাবেশের প্রস্তুতি তারা নিচ্ছেন। নেতা-কর্মীরা ছাড়াও সাধারণ মানুষ সরকারের দু:শাসনে পিষ্ট। তারা মুক্তি চায়। এ কারনেই তারা সমাবেশে দলে দলে যোগ দেবেন।
গত ১৩ অক্টোবর গণফোরাম, জেএসডি, নাগরিক ঐক্য ও বিএনপি মিলে আত্মপ্রকাশ করে জাতীয় যুক্তফ্রন্ট। এরপর একাধিক বৈঠক করে ফ্রন্টের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে ২৩ অক্টোবর সিলেটে সমাবেশের ঘোষণা করা হয়। কিন্তু নির্ধারিত দিনে পুলিশ সমাবেশের অনুমতি নাকচ করে দেয়ায় একদিন পিছিয়ে সমাবেশের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। গত দুই-তিন ধরে সমাবেশের অনুমতি পাওয়া নিয়ে নানা শঙ্কা ছিল। অনুমতি না পেলেও সিলেটে যাওয়ার কর্মসূচি বহাল রাখেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। কিন্তু গতকাল বিকেলেই ঐক্যফ্রন্টকে সমাবেশের অনুমতির কথা জানিয়ে দেয়া হয়।
জানা গেছে, সমাবেশের অনুমতি পেয়ে বৈঠক করেছে ফ্রন্টের নেতারা। সিলেটে বড় ধরনের শোডউনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে মুখ্য ভুমিকা পালন করছে বিএনপি।
সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্ব শর্ত হিসেবে ৭ দফা দাবিতে মাঠে নেমেছে ঐক্যফ্রন্ট। দাবিগুলোর অন্যতম হচ্ছে- নির্বাচনকালীন নিরেপক্ষ সরকার গঠন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, সংসদ ভেঙ্গে দেয়া ও মেজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনকালীন সেনাবাহিনী মোতায়েন।
এসব দাবিতে সিরিজ কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে। সিলেটের পর আগামী ২৭ অক্টোবর চট্টগ্রামে ও ৩০ অক্টোবর রাজশাহীতে জনসভা করবে ঐক্যফ্রন্ট। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত কূটনীতিকদের সাথে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন কূটনীতিকদের ৮টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। ড. কামাল যে রাজনৈতিক দূরদর্শীতা দেখিয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছেন, তাতে ফ্রন্টভূক্ত দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের আস্থা তৈরি হয়েছে।
আগামী ২৬ অক্টোবর রাজধানীতে শীর্ষ স্থানীয় বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে তারা। জানা গেছে, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় সমাবেশ করবে ঐক্যফ্রন্ট। এরপর দাবি আদায়ে চূড়ান্ত কর্মসুচি দেয়া হবে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে ইতোমধ্যে সাংগঠনিক রূপ দেয়া হয়েছে। নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত ও তা বাস্তবায়নে স্টিয়ারিং এবং সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৩ সদস্যের সমন্বয়ক কমিটিতে আছেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব ও মনিরুল হক চৌধুরী, গণফোরামের শফিকুল্লাহ, মোস্তাফা আহমেদ ও জগলুল হায়দার আফ্রিক, জেএসডির আবদুল মালেক রতন, তানিয়া রব ও শহীদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন এবং নাগরিক ঐক্যের মমিনুল ইসলাম, শহীদুল্লাহ কায়সার ও ডা. জাহেদুর রহমান।
জানা গেছে, ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা রয়েছেন ‘স্টিয়ারিং’ কমিটিতে। এর বাইরে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদকে স্টিয়ারিং কমিটিতে রাখা হয়েছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো: শাহজাহান বলেন, সিলেটে বড় সমাবেশ হবে। চট্টগ্রামেও সমাবেশের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ৭ দফা দাবি অদায় করা হবে।
এদিকে সোমবার গণফোরামের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করবেন দলের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। জানা গেছে, ড. কামাল হোসেন দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বললেন।
সিলেট ব্যুরো জানিয়েছে, সিলেট মহানগর পুলিশের নগর বিশেষ শাখার উপ কমিশনার কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত অনুমতিপত্রে সমাবেশ ঘিরে ১৪টি শর্তের কথা জানানো হয়েছে।
শর্তগুলো হলো-অনুষ্ঠানস্থলে পর্যাপ্ত সংখ্যক নারী ও পুরুষ স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে। রাষ্ট্রবিরোধী কোনো ধরণের বক্তব্য বা বিবৃতি দেওয়া যাবেনা। সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করে কিংবা ধর্মীয় অনুভূতি বা মূল্যবোধের উপর আঘাত হানে এ ধরণের কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান বা কোনো ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা যাবে না। জনসাধারণের চলাচলের রাস্তায় কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। নির্ধারিত স্থানে নির্ধারিত সময়ের (২টা থেকে ৫টা) মধ্যে কর্মসূচী শেষ করতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে জনগনের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করার আশঙ্কা সৃষ্টি করে এমন বক্তব্য প্রদান করা যাবে না বা এরূপ কথা সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা যাবে না। মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহারের ফলে আশপাশের জনগনের যাতে কোনো অসুবিধা না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ব্যাগ, সিগারেট, দিয়াশলাই, লাইটার ইত্যাদি নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করা যাবে না। কোনো ধরণের লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র বা লাঠিযুক্ত ব্যানার ফেস্টুন ইত্যাদি বহন করা যাবে না।
কোনো ধরণের বৈধ অস্ত্র সঙ্গে আনা/বহন করা যাবে না। সুরমা পয়েন্ট হতে তালতলা পয়েন্ট পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশে কোনো গাড়ি পার্কিং করা যাবে না। অনুষ্ঠানস্থলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন। উল্লেখিত শর্তাবলির যেকোনো একটি আ একাধিক লঙ্ঘন/অমান্য করা হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে উক্ত অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।