ক্রাইমবাতা রিপোটঃ টিভি টকশোতে নারী সাংবাদিককে কটূক্তি করার রংপুরে করা মানহানির মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে জামিন না দিয়ে কারাগারে প্রেরণ এর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রংপুর থানায় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মিলিমায়া দায়ের করা মানহানির মামলায় ওয়ারেন্ট বলে গ্রেফতারকৃত ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেন কে মঙ্গলবার ডিবি পুলিশ তাকে ঢাকার অতিরিক্ত সি.এম.এম কায়সারুল ইসলাম এর আদালতে হাজির করেন বেলা: ১.০০ টা।
অতঃপর ব্যরিস্টার মইনুল হোসেন এর আইনজীবীগন জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আদালত শুনানী শেষে জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। যখন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন কে আদালতে হাজির করা হয় তখন আইনজীবী তাকে সালাম দেয়। এবং আপনার কোন ভয় নাই। আপনার সাথে আমরা আছি। এ অবস্থায় পুলিশ তাকে কাটগড়ায় তুলে, তখন তাকে দৃঢ়চেতা দেখা যায়। তার মধ্যে কোন ভয় লেস কোন ছাপ দেখা যায় না। তিনি অত্যান্ত সাহসী কতায় বিচারকের দিকে তাকিয়ে থাকেন। এমতাবস্থায় তার পক্ষে আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, মোঃ সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, গোলাম মোস্তফা খান, মোঃ মহসিন মিয়া, মোঃ ইকবাল হোসেন, জিয়া উদ্দিন জিয়া, তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ, নূরুজ্জামান তপন, হাতেমূল আলমসহ বেশ কিছু আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
আইনজীবীগন আদালতে বলেন-মামলার ধারা জামিন যোগ্য। জামিন যোগ্য ধারায় উচ্চ আদালতে সিদ্ধান্ত আছে। জামিন দেওয়া বাধ্যতামূলক। তিনি এমন কোন অপরাধ করেননি যে কারনে তাকে আটক রাখা যায়। মানহানির মামলায় সকল ধারাই জামিন যোগ্য। সে কারনে তার জামিন পাওয়া হক। আপনি জামিন দেন। জামিন দিলে আসামী পক্ষ রংপুরে আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিবে।
রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর পি.পি আব্দুল্লাহ আবু, কাজী নজিবউল্ল্যাহ হিরু, অতিরিক্ত পি.পি তাপস কুমার পাল সহ বেশ কিছু সরকার দলীয় আইনজীবী জামিনের তীব্র বিরোধিতা করেন। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়-এ আসামী টিভি টকশোতে মাসুদা ভাট্টিকে নিয়ে কুরুচীপূর্ন বক্তব্য দেয়। যার কারনে সমগ্র নারী জাতিকে অপমান করা হয়েছে। যা সারা পৃথিবীতে এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। সে কারনে পারিপাশ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে জামিন ধারা জামিনযোগ্য হলেও আসামী কে জামিন দেওয়া যায় না। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেন।
যে মামলায় ওয়ারেন্ট বলে গ্রেফতার করা হয়েছে সে মামলায় ওয়ারেন্ট এর কপিতে বাদীর নাম ও মামলার ধারা উল্লেখ্য নাই। মর্মে আসামী পক্ষ থেকে বলা হয়। তখন আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ওয়ারেন্ট এর একটি হাত কপি আদালতে তুলে ধরেন এবং মামলার ধারা উল্লেখ্য করা হয়েছে। এমতাবস্থায় রাষ্টপক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করে এবং জামিন না দেওয়ার জন্য আদালতে নিবেদন করেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, সোমবার রাত ৯টা ২৫ মিনিটে ডিবি পুলিশের একটি দল ঢাকার উত্তরায় জেএসডি নেতা আ স ম আবদুর রবের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পরপরই মইনুল হোসেনকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, রংপুরে সোমবার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন মানবাধিকারকর্মী মিলি মায়া। তিনি রংপুর নগরীর মুলাটোল মহল্লার বাসিন্দা।
কেন্দ্রীয় কারাগারের সাধারণ ওয়ার্ডে সাধারণ বন্দিদের মতো রাখা হবে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুব আলম এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তাকে (ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন) সাধারণ ওয়ার্ডে, সাধারণ বন্দিদের মতো রাখা হবে। মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর তিনটা ১০ মিনিটে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে সোমবার (২২ অক্টোবর) রাত সাড়ে নয়টার দিকে রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসা থেকে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। রংপুরে দায়ের করা মানহানির একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।