ক্রাইমবাতা রিপোটঃ ২৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগরীর সাগরিকায় অবস্থিত জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচ। আর এই ম্যাচে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা সিএমপির। ফলে ২৭ অক্টোবর চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদীঘি মাঠে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশের অনুমতি কোনভাবেই মিলছে না বলে জানিয়েছেন সিএমপি উপ-কমিশনার (বিশেষ শাখা) আবদুল ওয়ারিশ।
এদিকে লালদীঘি মাঠে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের অনুমতি না মেলার খবর সিএমপির পক্ষ থেকে এখনো জানানো না হলেও গণমাধ্যম কর্মীদের কাছ থেকে বিষয়টি জেনেছেন বলে জানান চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাৎ হোসেন। তিনিই ঐক্যফ্রন্টের এ কর্মসূচির সার্বিক তত্ত্বাবধান করছেন।
ডা. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ২৭ অক্টোবর লালদীঘি মাঠে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে সিএমপি বরাবরে আবেদন করা হয়েছে গত ২০ অক্টোবর। কিন্তু আজ পর্যন্ত সমাবেশের অনুমতির ব্যাপারে সিএমপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই বলা হয়নি। তবে গণমাধ্যমের খবরে অনুমতি না মিলার খবর পেয়েছি আমরা। এতে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে দলের ওয়ানডে সিরিজের খেলা বিঘ্ন ঘটনার শঙ্কার কথা বলা হয়েছে।
যা অজুহাত মাত্র।
ডা. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, লালদীঘির মাঠ থেকে সাগরিকা জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের দুরত্ব প্রায় ১৫ থেকে ১৭ কিলোমিটার। তাছাড়া খেলোয়াড়রা যেখানে থাকেন সেই হোটেল রেডিসন ব্লু‘র দুরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। যেখানে সমাবেশের কারনে বিঘ্ন ঘটার কোন সম্ভাবনাই নেই। এছাড়া ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশের সাথে জিম্বাবুয়ের কোন খেলাও নেই।
তিনি বলেন, দেশের ক্রিকেটাররা আমাদের জাতীয় সম্পদ। বিদেশী ক্রিকেটাররা হচ্ছেন অতিথি। এই বোধটুকু আমাদের আছে। তাদের নিরাপত্তার প্রশ্ন একটি অজুহাত মাত্র।
ডা. শাহাদাৎ হোসেন আরও বলেন, সিলেটে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ায় চট্টগ্রামেও অনুরূপ আশা করছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। এরমধ্যে নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে সিএমপি কমিশনারের সাথে সাক্ষাতও করেছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। কিন্তু তাদের কোনো আশ্বাস দেননি সিএমপি কমিশনার।
সিএমপি কমিশনার মাহবুবর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, সিলেটের নিরাপত্তা চিত্রের সাথে চট্টগ্রামের তুলনা সমীচিন নয়। লালদীঘি মাঠে ঐক্যফ্রন্টকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে চট্টগ্রামে অবস্থানরত জিম্বাবুয়ে টিমের নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত। বিষয়টি আমরা চিন্তা করছি। তবে এ বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানতে শুক্রবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
সিএমপির বিশেষ শাখার উপ-কমিশনার আবদুল ওয়ারিশ বলেন, সিলেটে তাদেরকে অনুমতি দিলে চট্টগ্রামে যে দিতে হবে এমন কোনো কথা নেই। এখানকার নিরাপত্তার বিষয় দেখেই তো আমরা তাদের অনুমতি দিবো।
তিনি বলেন, ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশের সাথে জিম্বাবুয়ের খেলা নেই বটে, কিন্তু জিম্বাবুয়ে নগরীতে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবস্থান করবে। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়টি আমাদের মাথায় রাখতে হবে।
লালদীঘি মাঠে সমাবেশের আয়োজন নিয়ে গত সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনে প্রস্তুতি সভাও করেছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ঐক্যফ্রন্টকে সিলেটের মতো চট্টগ্রামেও সমাবেশের অনুমতি দিতে সরকার বাধ্য হবে বলে জানান।
বিএনপির এ নেতা বলেন, সিলেটের সমাবেশ আমরা সফলভাবে করেছি। এখন চট্টগ্রামে সমাবেশ করার সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। প্রশাসনের কোনো অজুহাত আমরা মানবো না। সিলেটের মতো চট্টগ্রামেও যে কোনো প্রকারে সমাবেশ আমরা করবোই।