বিভেদ ভুলে ঘরে ফিরলেন বিএনপির সংস্কারপন্থীরা:আওয়ামী লীগ দুটি ব্যবসা ভালো পারে: ফখরুল

ক্রাইমবার্তা ডেস্ক রিপোট:   ওয়ান-ইলেভেনের সময়ে কথিত ‘সংস্কারপন্থি’ হিসেবে পরিচিত ১১ নেতা সব বিভেদ ভুলে অবশেষে বিএনপিতে ফিরলেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে গুলশানে দলটির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বৈঠকের মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে একসময়ে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা এসব নেতা সক্রিয় হলেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তারা দলের হাইকমান্ডের নির্দেশমতো কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে তারা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সাত দফা দাবিতে রাজপথে সক্রিয় হওয়ার ঘোষণা দেন।

দলে ফেরা সবাই সাবেক সংসদ সদস্য। ঘরে ফেরা নেতারা হলেন- নরসিংদীর সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল, বগুড়ার গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ (জিএম সিরাজ), ডা. জিয়াউল হক মোল্লা, বরিশালের জহিরউদ্দিন স্বপন, জয়পুরহাটের আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমান, নওগাঁর আলমগীর কবীর, সুনামগঞ্জের নজির হোসেন, নারায়ণগঞ্জের আতাউর রহমান আঙুর, রাজশাহীর আবু হেনা, পটুয়াখালীর শহীদুল আলম তালুকদার ও ঝালকাঠির ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো।

বৈঠক শেষে সাবেক সংসদ সদস্য সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আরও সক্রিয়ভাবে দলে কাজ করার নির্দেশ পেয়েছি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, সে ব্যাপারে আমরা অবহিত হয়েছি। দলের নির্দেশ মোতাবেক আমরা কাজ করব। আমরা দলে আছি, ছিলাম, থাকব।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংস্কারপন্থী হিসেবে কোনো মিটিং হয়নি। দলের লোক হিসেবে আমাদের সভা হয়েছে। আমাদের নির্দেশ দিয়েছে, নির্দেশনা দিয়েছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মনোনয়ন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। বিএনপি একটি রড় রাজনৈতিক দল। অনেক প্রার্থী আছে। যাকে মনোনয়ন দেয় সাত দফা দাবি মেনে নিলেই আমরা নির্বাচনে যাব। বিএনপি নির্বাচনমুখী দল।

শহীদুল আলম তালুকদার বলেন, আজ গণতন্ত্রের জন্য খালেদা জিয়া জেলে; দুই কোটি টাকার জন্য নয়। এটা সবাইকে বুঝতে হবে। আমি এমপি না হই তাতে আমার কিছু আসে-যায় না। কিন্তু দলকে ও দেশকে বাঁচাতে হবে। আমার মাকে যেমন ভালোবাসি আমি দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে তেমন ভালোবাসি। তাকে মুক্তি দিতে হবে।

তিনি বলেন, কথা বললেই মামলা-হামলা করা হচ্ছে। এটা তো গণতান্ত্রিক দেশ হতে পারে না। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এসবের কোনো ভয়ও পায় না। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জীবন দিতেও রাজি আছি।

আওয়ামী লীগ দুটি ব্যবসা ভালো পারে: ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ৭ দফা দাবি পূরণ না হলে দেশের জনগণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দাবি আদায় করবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। আগামী নির্বাচনে প্রমাণ করে দিতে হবে এই দেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়।

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে শুভ বিজয়া উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ দুটি ব্যবসা ভালো পারে। একটি হলো ধর্মনিরপেক্ষতা, আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের। তারা মুক্তিযুদ্ধের যে মূল চেতনা গণতন্ত্র এটাকেই গিলে বসে আছে। এই দানব সরকারকে সরাতে হলে জনগণের শক্তিকে একত্র করে ঐক্যবদ্ধভাবে আঘাত করতে হবে।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। সংসদ বাতিল করতে হবে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। ইভিএম বাতিল করতে হবে এবং মেজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। নইলে দাবি মানতে সরকারকে বাধ্য করা হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের সমস্যা বিএনপি, হিন্দু কিংবা মুসলমানদের একার না। সমস্যা সমগ্র জাতির। কথায় কথায় মিথ্যা, ভৌতিক মামলায় গ্রেফতার করা হচ্ছে। এগুলো আমাদের মনে রাখতে হবে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা গৌতম চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জে (অব.) মাহবুবুর রহমান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান প্রমুখ।

এছাড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।