ক্রাইমর্বাতা রিপোর্ট:চট্টগ্রামে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ শুরু হয়েছে। বেলা ২টায় কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের চট্টগ্রামের সমন্বয়কারী ডা. শাহাদাত হোসেন। সমাবেশে বিএনপি ও জোটের শীর্ষ নেতারা বক্তৃতা করবেন।
ইতোমধ্যে মঞ্চে আসন গ্রহণ করেছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। মঞ্চে আছেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু, কল্যাণপার্টির চেয়ারম্যান লে. জেনারেল (অব.) মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চীফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুক, গোলাম আকবর খন্দকার, এস এম ফজলুল হক , প্রচার সম্পাদক ও সাবেক এমপি শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মৎস্যজীবীবিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান কাজল প্রমুখ।
শনিবার সকাল থেকে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন। সমাবেশে আসতে নেতা-কর্মীদের বাধা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে সমাবেশস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। সমাবেশের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে কাজির দেউড়ি-নিউমার্কেট সড়কে সব ধরনের যান চলাচল।
আরো পড়ুন : ‘সরকার পতনের সাইরেন বাজানো হবে’
চট্টগ্রাম ব্যুরো, ২৭ অক্টোবর ২০১৮, ১০:১৫
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান। – ছবি: সংগৃহীত
মামলা, হামলা ও পুলিশি হয়রানি উপেক্ষা করে চট্টগ্রামবাসী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশকে জনসমুদ্রে পরিণত করে চট্টগ্রাম থেকে সরকার পতনের সাইরেন বাজাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান।চট্টগ্রামে শনিবারের সমাবেশ ঘিরে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি সভায় এ হুঁশিয়ারি দেন। তিনি আরো বলেন, দমনপীড়ন চালিয়ে এবং গায়েবি মামলা দিয়ে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না।
শুক্রবার বিকেলে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে চট্টগ্রামের বিভাগের আওতাধীন মহানগর ও জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের যৌথ প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি চট্টগ্রামের সব নেতকর্মীকে ভয়ভীতি উপেক্ষা করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এ সমাবেশকে সফল করার আহ্বান জানান।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা: শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মীর মো: নাছির উদ্দিন, মো: শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, গোলাম আকবর খন্দকার, এস এম ফজলুল হক ফজু, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মৎস্যজীবীবিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান কাজল, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি ওয়াদুদ ভূঁইয়া, সাবেক এমপি গাজী শাহজাহান জুয়েল।
এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার, হারুনুর রশিদ, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ান, ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন, বিএনপি নেতা এম এ হালিম, চাকসু ভিপি নাজিম উদ্দিন, অধ্যাপক ইউনস চৌধুরী, মনিরুল ইসলাম ইউসুফ, নগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এস এম সাইফুল আলম, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আবদুল মান্নান, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, আনোয়ার হোসেন লিপু, বিএনপি নেতা মীর্জা মো: আকবর, ডা: খুরশিদ জামিল চৌধুরী, নূর মোহাম্মদ, অধ্যাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, কামরুল ইসলাম প্রমুখ।
বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি
চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে এক সপ্তাহ আগে আবেদন করলেও শেষ মুহূর্তে শুক্রবার কাজীরদেউরীস্থ মহানগর বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। সমাবেশের জন্য লালদীঘি ময়দান না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি নেতারা।
এ দিকে মহানগর বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। পরে বিএনপি কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভায় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা অভিযোগ করে বলেন, সমাবেশের অনুমতি চেয়ে এক সপ্তাহ আগে আবেদন করার পরও লালদীঘির মাঠে অনুমতি দেয়নি পুলিশ। অবশেষে সমাবেশের এক দিন আগে জানানো হয়েছে, বিএনপি কার্যালয়ের সামনে কর্মসূচি পালন করা যাবে।
ঐক্যফ্রন্ট চট্টগ্রামের সমন্বয়ক ও মহানগর বিএনপি সভাপতি ডা: শাহাদাত হোসেন জানান, আগামীকালের সমাবেশে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতারা অংশ নেবেন। সমাবেশের স্থানের অনুমতি পেতে বিলম্ব হওয়ায় প্রচারের সুযোগ না পেলেও জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মসূচিতে যোগ দেবেন বলে আশা করেন চট্টগ্রাম বিএনপির এই নেতা।
আরো পড়ুন : ২৮ অক্টোবর নিয়ে জামায়াতের বর্তমান বক্তব্য
২৭ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজনের মাধ্যমে আগামীকাল ২৮ অক্টোবর পালন করার জন্য জামায়াতে ইসলামীর সব শাখা সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির মকবুল আহমাদ এবং সেক্রেটারি জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান। গতকাল এক যুক্ত-বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক কলঙ্কিত দিন। সেই দিন জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের যে সব নেতাকর্মী আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে শাহাদতবরণ করেছেন, আমরা তাদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।
তারা আরো বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর চার দলীয় জোট সরকারের মেয়াদের শেষ দিনে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে জামায়াতে ইসলামী একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের আয়োজন করে। এ সমাবেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা লগি-বৈঠা, লাঠি, রড, আগ্নেয়াস্ত্র ও হাত বোমা নিয়ে হিং¯্র সন্ত্রাসীর মতো হামলা করে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। শুধু তাই নয়; ওই সব সন্ত্রাসীরা লাশের ওপর পৈশাচিকভাবে নৃত্য করে। এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবিতে জামায়াতের পক্ষ থেকে মামলা করা হলেও এই পর্যন্ত সেই হত্যাকারীদের বিচার করা হয়নি। বরং বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকার ক্ষমতায় বসে সেই মামলা প্রত্যাহার করে খুনিদের রক্ষা করে এবং ক্রসফায়ার, হত্যা, খুন, গুম ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের লাইসেন্স দেয়। তার-ই ধারাবাহিকতায় দেশে ক্রসফায়ার, হত্যা, খুন, গুম ও সন্ত্রাস মানবতাবিরোধী অপরাধ অব্যাহতভাবে বেড়েই চলেছে।
জামায়াত নেতারা বলেন, ২৮ অক্টোবরের শহীদদের রক্তের ওপর দিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে দেশ থেকে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস, জনগণের ভোটাধিকার হরণ, মতামত প্রকাশে বাধা এবং সংবাদপত্র ও মিডিয়ার স্বাধীনতা এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করে দেশে একদলীয় ফ্যাসিবাদী স্বৈরশাসন চালু করেছে। সরকার গণতান্ত্রিকব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার পরিবর্তে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংস করে একে একে সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। সরকারের সব ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য আমরা দলমত নির্বিশেষে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।