কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা : ঢাকার কেরানীগঞ্জে বুড়িগঙ্গা সেতুর টোলমুক্ত করার দাবিতে পুলিশের সাথে সিএনজি অটোরিকশা ও ট্রাক চালকদের সংঘর্ষে ১জন নিহত এবং গুলীবিদ্ধ হয়েছে কমপক্ষে ১০জন । তবে পুলিশের দাবি এই ঘটনায় তাদের ৩০জন সদস্য আহত হয়েছে। নিহত যুবকরে নাম মোঃ সোহেল (২৯) । গুলীবিদ্ধরা হচ্ছে আলামিন (২৫), মোঃ মানিক (৩০), তাসলিমা বেগম (৩৫), মোঃ সিদ্দিক (৩৫), মোঃ আকাশ (৩৬) , মোঃ মাসুদ (৩২), মোঃ লাইজুল ইসলাম (৪৩), মোঃ সাজু (৫৫), মোঃ বাক্কু মিয়া (৪৫) ,অজ্ঞাতনামা এক ভিক্ষুক (৬০) ও এক প্রতিবন্ধী যুবক। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার এসআই শ্রীবাস জানান, নিহত সোহেলের লাশ ময়না তদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ওসি শাহজামানকে রাজারবাগ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় , প্রথম বুড়িগঙ্গা সেতু টোলমুক্তির দাবিতে গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে হাসনাবাদ এলাকায় সিএনজি অটোরিকশা ও ট্রাক চালকরা মিছিল বের করে এবং সেতু দিয়ে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এসময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ বাধে। আন্দোলনকারীরা এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁরতে থাকে। এতে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে প্রায় ২ঘন্টা ধাওয়া-পাল্টা চলতে থাকে। পুলিশ এক পর্যায়ে পিছু হটে ইকুরিয়া বিআরটিএ অফিসের ভিতর ঢুকে পড়ে। এতে আন্দোলনকারীদের সাথে উত্তেজিত জনতা একত্রিত হয়ে পুলিশের উপর বৃষ্টিরমতো ইট-পাটখেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এসময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য রাবার বুলেট ও শর্টগানের গুলী বর্ষণ করলে সোহেল নামে এক যুবক পেটে গুলীবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এই ঘটনায় আরো ১০জন গুলীবিদ্ধ হয়। গুলীবিদ্ধ অবস্থায় আহত আকাশ ও মাসুদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং আল-আমিন, তাসলিমা, মানিকসহ ৫জনকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইকুরিয়া জেনারেল হাসাপাতালে বাকী ৩জনকে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে ব্যাপকসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সুমন নামে এক সিএনজি অটোরিকশা চালক জানান, কে আলম শিপিং লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান ইজারা নিয়ে সেতুতে চলাচলকারী সকল যানবাহনের অতিরিক্ত টোল আদায় করছে। আমরা এখন সেতুতে টোল মুক্ত করার দাবিতে শুক্রবার সকালে মিছিল বের করি। এতে পুলিশ আমাদের বাধা দিলে তাদের সাথে সংঘর্ষ বাধে। এসময় পুলিশ মিছিলকারীদের লক্ষ্য করে গুলীবর্ষণ করলে সোহেল গুলীবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় এবং আরো ১০জন গুলীবিদ্ধ হয়।
ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভ’ইয়া জানান, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি শাহজামান ও ওসি তদন্ত মোঃ কামাল হোসেনসহ অন্য পুলিশ সদস্যদেরকে হত্যার উদ্দেশে বিআরটিএ অফিসের ভিতর আক্রমণ করা হলে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য রাবার বুলেট ও শর্টগান দিয়ে ফাঁকা গুলীবর্ষণ করে। বিক্ষোভকারীদের হামলায় ওসি প্রশাসন ও তদন্তসহ ৩০জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এসময় তিনি আন্দোলনকারীদের সেতুতে টোল মুক্ত করার ঘোষণা দিলে আন্দোলনকারীরা শান্ত হয়। পরে সেতু দিয়ে টোল মুক্ত অবস্থায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। নিহত সোহেলের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ থানায়। সে হাসনাবাদ এলাকায় একটি মোটর গ্যারেজে কাজ করতো। আহতদের মধ্যে পথচারী মহিলা, এক বৃদ্ধ ভিক্ষক ও এক প্রতিবন্ধী যুবক ছিল।
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …