ক্রাইমর্বাতা রিপোর্ট:মানুষের উন্নয়নে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আগামী নির্বাচনে সবার কাছে ভোট চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘পায়রা বন্দর ডিপ সি-পোর্ট হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এখান থেকে উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত যাতে নদীপথে সরাসরি সহজে যোগাযোগ করা হয় সে ব্যবস্থা করা হবে। সকলের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই।’
শনিবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুনর্বাসন প্রকল্প ‘স্বপ্নের ঠিকানা’সহ বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন এবং পুনর্বাসিত পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বাড়ির চাবি ও দলিল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেছেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষিণ অঞ্চলটা সবসময় অবহেলিত ছিল। ১৯৯৬ সালের পর থেকেই উন্নয়নের কাজ শুরু করেছি। স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাসহ সবক্ষেত্রে কাজ শুরু করেছি। এরপর ২০০৯ থেকে ২০১৮ প্রায় দশ বছর জনগণের ভোট নিয়ে সরকারে আছি আমরা। এই দশ বছরে নিরলসভাবে উন্নয়ন করে যাচ্ছি। এই অঞ্চলের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ২০ হাজার মেগাওয়াট বৃদ্ধি করেছি। এখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ফলে শুধু মানুষের ঘরে ঘরেই বিদ্যুৎ যাবে না, কারখানাও গড়ে উঠবে, কৃষির যান্ত্রিকীকরণ করবো। এ এলাকার মানুষ আর কষ্ট পাবে না। জীবনমান উন্নত হবে। এখানে যাতে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়, সে ব্যবস্থাই করছি। এই এলাকায় এনএলজি টার্মিনাল করবো। এসব উন্নয়ন করতে যেয়ে মানুষ যাতে গৃহহীন হয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখছি। যেসব জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, সেসব জমি প্রায় তিনগুণ বেশি দামে নিয়েছি। এই জমি নেওয়ার কারণে ১৩০ পরিবারকে ঘর তৈরি করে দিয়েছি, যাতে তারা পরিবার নিয়ে ভালোভাবে থাকতে পারে। তাদের সন্তানদের লেখাপড়া করাতে পারে। তাদের জন্য মসজিদ-স্কুলসহ সব ধরণের ব্যবস্থা করেছি। আশা করছি তারা সেখানে সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই এলাকার মানুষদের নিরাপত্তার জন্য পায়রা বন্দরে সাইক্লোন সেন্টার তৈরি করে দিতে বলেছি। আমরা এখানে একটি নৌবাহিনীর ঘাঁটি নির্মাণ করছি। এছাড়াও একটি সেনানিবাসও তৈরি করছি।’
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এখানে একটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রও করে ফেলবো।’
প্রসঙ্গত- পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প, একটি পুনর্বাসন কেন্দ্র এবং প্রকল্প এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য নবনির্মিত আবাসন পরিদর্শনসহ পুনর্বাসিত পরিবারগুলোর কাছে এসব বাড়ির চাবি ও রেজিস্ট্রেশন পেপার হস্তান্তরসহ পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন এলাকায় ১৬টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রকল্পগুলো হচ্ছে- পটুয়াখালী সরকারি কলেজের পাঁচতলা গার্লস হোস্টেল ও শিক্ষা কাম-পরীক্ষা হল নির্মাণকাজ, হাজি আক্কেল আলী হাওলাদার কলেজে চারতলা শিক্ষা ভবনের নির্মাণ কাজ, ইসহাক মডেল ডিগ্রি কলেজ, কুয়াকাটা খানাবাদ কলেজ, মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি কলেজ, আলহাজ জালাল উদ্দিন কলেজ, সুবিদ খালী ডিগ্রি কলেজ ও দুমকি জনতা ডিগ্রি কলেজ, চারতলা শিক্ষা ভবন নির্মাণকাজ, দুমকি উপজেলার শতভাগ বিদ্যুতায়ন, মির্জাগঞ্জ ৩৩/১১ কেভি বিদ্যুৎ স্টেশন, পায়রাবন্দর শেখ হাসিনা সড়ক এবং পায়রাবন্দর সার্ভিস জেটি, মসজিদ, অফিসার গেস্ট হাউস ও স্টাফ ডমেটরি।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালী সরকারি কলেজের পাঁচতলা বিজ্ঞান ভবন, শ্রীমান্ত নদীতে ৯৬ মিটার সেতু, পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া ও মির্জাগঞ্জ উপজেলায় কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (তৃতীয় পর্ব) প্রকল্পের আওতায় দুটি কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং পায়রাবন্দর প্রকল্পের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের পুনর্বাসন এলাকার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এরপর বিকালে বরগুনায় ২১টি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।