সাতক্ষীরায় নারীদের মাঝে গ্রেফতার আতঙ্ক : আটক করা হয়েছে জামায়াতের ২৫ নারী কর্মী

সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃ সাতক্ষীরায় নারীদের মাঝে গ্রেফতার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আগামী নির্বাচনে বিএনপি জামায়াতের নারী কর্মীরা যাতে ভোট কেন্দ্রে যেতে না পারে সেই লক্ষ্যে সরকার নারীদের মাঝে ভয় ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতি দিন রাতে জেলার বিভিন্ন বসত বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। সরকারের চাপে পুলিশ প্রশাসন নারী কর্র্মদের মাঝে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছে। জেলার তিনটি উপজেলাতে এখন পর্যন্ত শুধু নারীদের বিরুদ্ধে তিনটি গায়েবী মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় ২৫ জন জামায়াতের নারী কর্মী আটক সহ দুইশতাধীক নারীকে মামলায় অজ্ঞাগত আসামী করা হয়েছে। দেশ স্বাধীনের পর নারীদের উপর এমন হামলা ও মামলায় আটকের ঘটনা জেলাতে নজীর স্থাপন করেছে। অনেক আ’লীগ নেতা নারীদের গ্রেফতারে বিষ্মিত। তারা বলছে এসব পুলিশের বাড়া বাড়ি। সুষ্ঠু ভোট হলে এসব ঘটনা আওয়ামী লীগের ভাবমুর্তি ক্ষুণœ করবে।
সূত্র জানায় আগামী নির্বাচনে জেলাতে জামায়াতের নারী ভোটার বড় একটা ফ্যাক্টর হবে। জামায়াতের নারী কর্মীরা যে প্রাথীকে ভোট দিবে সেই প্রার্থীর জয় অনেটা সুনিশ্চিত। তাই জেলাতে জামায়াতের ভোট ব্যাংকে আঘাত হানতে জামায়াতের নারী ভোটারদের উপর হয়রানি ও হামলা মামলা শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসন।
গত তিন দিনের জেলাতে জামায়াতের ২৫ নারী নের্তৃকে আটক করা হয়েছে। এসব ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি গায়েবী মামরা দায়ের করেছে। এসব মামলায় অজ্ঞাগত কয়েকশ জামায়াত কর্মীকে আসামী করা হয়েছে।
এসব গায়েবী মামলায় যাদেরকে আটক করা হয়েছে তারা হলেন, সাতক্ষীরা শহরের রইচপুর গ্রামের জামায়াতের ওয়ার্ড সেক্রেটারী মাওলানা আবু জাহের,তার স্ত্রীসাজেদা খাতুন,ছোট বোন নুরুন নাহার একই এলাকার আলমগীরের স্ত্রী সফুরা বেগম,আরিফ বিল্লাহ।
কালিগঞ্জের তারালি ইউনিয়নের কাকশিয়ালী গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী তহমিনা খাতুন,চম্পাফুল ইউনিয়নের উজিরপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের স্ত্রী মুশফিকা,কুশুলিয়া ইউনিয়নের ভদ্রখালি গ্রামের শামসুদ্দিনের স্ত্রী সোনামনি,উজিরপুর গ্রামের জিয়াদ আলীর স্ত্রী জিন্নাতুন নেছা, চম্পাফুল গ্রামের আব্দুল্লাহর স্ত্রী হোসনিয়ারা,একই ইউনিয়নের ঘুষুড়ি গ্রামের আবু হাসানের স্ত্রী ছালেহা বেগম। ভাড়া শিমলা ইউনিয়নের সুলতান পুর গ্রামের ছামসুর রহমানের স্ত্রী রোমেছা খাতুন,নলতা এলাকার নজরুল ইসলামের স্ত্রী ছামসুর নাহার, ডা. শওকাত হোসেনর স্ত্রী আলেয়া,বাগানবাড়ি এলাকার জামিলা, ভাড়াশিমলার বাগবাটি গ্রামের তাসলিমা খাতুন ও একই এলাকার আকবর আলীর স্ত্রী মাছুরা খাতুন।
কলারোয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচ নারীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, উপজেলার তুলশিডাঙ্গা গ্রামের হামিদুর রহমানের স্ত্রী আম্বিয়া বেগম, একই এলাকার অধ্যাপক ময়নুল ইসলামের স্ত্রী তাজকিয়া হক(৭২), সোনবাড়িয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মমতাজ আলীর স্ত্রী মাহফুজা খাতুন, চন্দনপুর ইউনিয়নের রামভদ্রপুর গ্রামের শাহিদা বেগম ও সোনাবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল আজিজের স্ত্রী ফিরোজা বেগম। বুধবার দিনের বেলায় শাহিদা বেগম ও ফিরোজা খাতুনকে ও রাতে অন্যদের আটক করা হয়।
আটককৃতদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি নাশকতার মামলায় দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত ওসি মারুফ বিল্লাহ জানান, নাশকতার চেষ্টা কালে জামায়াতের ৫ মহিলাকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সুনিদিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।
আটককৃত পরিবারের কয়েকজন সদস্য জানান,সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে তাদেরকে আটক করেছে পুলিশ। আগামি নির্বাচনে নারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে এসব নারীদের গ্রেফতার ও গায়েবী মামলা। আটক হওয়া মহিলাদের মধ্যে মাহফুজা খাতুন কলারোয়া এলাকায় নারীদের মাঝে বিনামুল্যে কুরআন শেখাতেন। তার স্বামী মমতাজ আলীর অভীযোগ সাধারণ মানুষের মাঝে ধর্মীয় শিক্ষা হিসাবে তার স্ত্রী বিনামুলে কুরআন শেখাতেন। শত শত মহিলা তার কাছ থেকে কোরআন শিক্ষেছেন। এটাই তার অপরাধ। এসব আটকের ঘটনায় সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের পক্ষ থেকে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এক প্রতিবাদ বার্তায় আটককৃতদের মুক্তির দাবী জানানো হয়েছে।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।