পার্সটুডে : সিরিয়ার ভবিষ্যত নিয়ে তুরস্ক, জার্মানি, রাশিয়া ও ফ্রান্সের শীর্ষ নেতারা তুরস্কের ইস্তাম্বুলে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। বৈঠকের উল্লেখযোগ্য দিক ছিল, তুরস্ক, জার্মানি ও ফ্রান্সের শীর্ষ নেতাদের পক্ষ থেকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার দাবি থেকে পশ্চাদপসরণ।
চতুর্পক্ষীয় শীর্ষ বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান বলেন, সিরিয়ার জনগণই প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে। অথচ গত সাত বছর ধরে এরদোগান সরকার সিরিয়ায় উগ্র সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে আসাদ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করেছে। সারাবিশ্ব থেকে আসা সন্ত্রাসীরা তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় অনুপ্রবেশ করেছে। জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেন, সিরিয়া সরকারের ভবিষ্যত নির্ধারণের জন্য দেশটির জনগণকে সুযোগ দেয়া উচিত। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন।
তিনি বলেন, সিরিয়ার ভবিষ্যত রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেমন হবে তা আমরা নির্ধারণ করে দিতে পারি না; এটা নির্ধারণ করবে সিরিয়ার জনগণ। সিরিয়ায় একটি স্বাধীন সরকার ক্ষমতায় রয়েছে উল্লেখ করে ম্যাকরন বলেন, এই সরকারের প্রতি সম্মান জানানো উচিত। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, সিরিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের একমাত্র অধিকার রয়েছে সেদেশের জনগণের।
তুরস্কসহ পশ্চিমা দেশগুলো এর আগে গত সাত বছরে বহুবার সরাসরি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার দাবি জানিয়েছে। ইস্তাম্বুল বৈঠক শেষে শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে চার শীর্ষ নেতা সিরিয়ার নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য কমিটি গঠন, দেশটির সার্বভৌমত্ব ও রাজনৈতিক অখণ্ডতা রক্ষা করার তাগিদ দেন।
পুতিনের শান্তি দাবি : সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু সর্বাগ্রে দেশটি থেকে সন্ত্রাসীদের পুরোপুরি নির্মূল করতে হবে বলে জানান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শনিবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত জার্মান, ফ্রান্স, রাশিয়া ও তুরস্কের সিরিয়া বিষয়ক আলোচনা বৈঠকের পরই তিনি এমন মন্তব্য করেন। শনিবার ইস্তাম্বুল বৈঠকে পুতিন বলেন, ‘আমাদের দেশে কোনভাবেই সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি তৈরি করতে দিতে পারি না। তাদের মতাদর্শও আমরা প্রচার করতে দেব না। তাই সিরিয়া থেকে সকল সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ না করা পর্যন্ত কোনভাবেই শান্তি আসবে না। আমরা তাদের আর শক্ত অবস্থান নিতে দেব না। এমনকি নতুন করে আর বিদ্রোহী সৈন্য নিয়োগও করতে দেয়া হবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের সর্বশেষ নিয়ন্ত্রিত প্রদেশ ইদলিবের ঘোষিত যুদ্ধবিরতির ওপর তুরস্ক গুরুত্বারোপ করছে। সন্ত্রাসী নির্মূল হলে ভবিষ্যতে তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হবে। যদি সন্ত্রাসীরা ইদলিব থেকে এখনো হামলা চালায় তাহলে আমরাও সিরিয়াকে অস্ত্রসরবরাহ অব্যাহত রাখব।’