যেভাবে সংলাপের সিদ্ধান্ত নিল আওয়ামী লীগ

বাংলাদেশে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নবগঠিত ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সংলাপে বসবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

ঢাকায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, আজ মন্ত্রীসভার বৈঠকের পর এই বিষয়ে আলাপ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে সংলাপে বসতে চায়, তাতে আওয়ামী লীগ সম্মতি দিয়েছে।

তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনার দরজা কারো জন্য বন্ধ থাকে না। এর মাধ্যমে আপনারা বুঝতে পেরেছেন, আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছেন। এবং এ ব্যাপারে আমরা আমাদের নেত্রীর সঙ্গে একমত।

রবিবার সংলাপের আহবান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এবং সাধারণ সম্পাদক বরাবর দুটি চিঠি পাঠায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। যার সঙ্গে তাদের সাত দফা প্রস্তাব এবং এগারোটি লক্ষ্য সংযুক্ত করা হয়।

এই সাত দফার দাবির মধ্যে রয়েছে বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজন করা।

তবে কবে বৈঠক হবে সেটা পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।

আরো পড়ুন: শুক্রবার ঢাকায় ঐক্যফ্রন্টের জনসভা

সিলেট ও চট্টগ্রামে সফল জনসভার পর এবার ঢাকায় জনসভা করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের উদ্যোগে নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন কর্মসূচী মোতাবেক আগামী শুক্রবার (০২ নভেম্বর) বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের উদ্যোগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় (ভিআইপি রোড) জনসভা অনুষ্ঠিত হবে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আজ সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। সেইসাথে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জনমতকে এক পয়সাও দাম দেননা। বরং এখন চলছে প্রতিবাদী বিশিষ্টজনদের ওপর স্টীম রোলার। নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

এদিকে আজকে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ও আশেপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, নির্বাচন গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ। আর গণতন্ত্রের অন্তর্নিহিত সারবস্তু হচ্ছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা। কিন্তু আওয়ামী লীগের সময় কাটে বিরোধীদের প্রতি বিদ্বেষ প্রদর্শন করে, অবিরাম কুৎসিত অসংযমী বাক্য বিলাসে। সন্ত্রাসের পরিচর্যা ও বিস্তার আওয়ামী লীগের চারিত্র্যধর্ম। মূলত: আওয়ামী লীগের ইতিহাস একটা ‘ক্রাইম স্টোরী’ ছাড়া আর কিছুই নয়। শুধু বিরোধী দলই নয়, সরকারবিরোধী সমালোচনায় দলনিরপেক্ষ দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বিপাকে ফেলার জন্য ওঁৎ পেতে থাকে। দেশের জননন্দিত নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে বন্দী করে রাখা এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েই তারা ক্ষান্ত হয়নি-এখন চলছে প্রতিবাদী বিশিষ্টজনদের ওপর স্টীম রোলার। সরকারের পক্ষে কোন জনমত নেই বলেই ভোটারবিহীন সরকারের মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে বন্দুকের জোরে আদালতকে কব্জায় নিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দণ্ড দেয়া হয়েছে।

বিএনপির এই মুখপাত্র আরো বলেন, ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনকে গ্রেফতারের পরও হয়রানি ও নির্যাতনের তীব্রতা হ্রাস পায়নি। এখন চলছে প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ওপর হানাদারি আক্রমণ। ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের লোকজনদের জানমালের ওপর চলছে সরকারি ক্যাডারদের বেপরোয়া আগ্রাসন। তার গড়া প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি জনগণের, তারপরও এই প্রতিষ্ঠানের জায়গা-জমি দখল করতে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে দলীয় মাস্তানদের। বিনা অপরাধে র‌্যাবের গুলিতে পা হারানো গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র লিমনের ওপর আওয়ামী ক্যাডারদের কাপুরুষোচিত শারীরিক আক্রমণের দ্বারা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে তার হাত-পা।

এদিকে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে ঢাকায় ব্যাপক নেতা-কর্মীর উপস্থিতি ঘটাতে চায় ঐক্যফ্রন্ট।

Check Also

ডিসেম্বরের ২১ দিনে রেমিট্যান্স এল ২ বিলিয়ন ডলার

চলতি ডিসেম্বর মাসের প্রথম ২১ দিনে দেশে বৈধ পথে ২০০ কোটি  মার্কিন (২ বিলিয়ন) ডলারের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।