কামাল : ঘটনাটি শুক্রবার সকালের। রাজধানী ঢাকার পোস্তগোলায় একটি সেতুর টোল বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে শ্রমিক ও পুলিশের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় শ্রমিক পুলিশের মাঝে ব্যাপক ধাওয়া এবং পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলীও চালিয়েছে। এ ঘটনায় সোহেল (২৯ ) নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। সংঘর্ষে পুলিশসহ ৩০ জন কমবেশি আহত হয়। সংঘর্ষের সময়কার একটি ছবি বেশ আলোড়ন তুলেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ওই ছবি ঘটনার পর থেকেই গত কয়েকদিন ধরে বেশ ভাইরাল হয়েছে। পুলিশের মাঝখানে অস্ত্র হাতে বর্ণিল জাঙ্গিয়া পরিধান করা এক ব্যক্তি দৌড়চ্ছেন কিংবা দাঁড়িয়ে আছেন। এ ছবিটি বাংলাদেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মাঝে বেশ কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। ওই দিনের ঘটনায় পুলিশ গুলী চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মোকাবেলা করার জন্য অস্ত্রধারীরাও এসেছিল। কিন্তু কোনো অস্ত্রধারীকেই এ পর্যন্ত আটক বা গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। কোনও অস্ত্রও উদ্ধার করা যায় নি এ ক‘দিনেও। অস্ত্রধারীকে গ্রেফতার,আটক কিংবা অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের কোনো প্রকার অভিযানের খবরও পাওয়া যায়নি। এখন প্রশ্ন উঠেছে, গায়ে স্যান্ডো গেঞ্জি, হাতে অস্ত্র এবং জাঙ্গিয়া পরা ব্যক্তিটি আসলে কে? তিনি কি পুলিশের সদস্য? নাকি অন্য কেউ? পুলিশের সদস্য হলে তার ইউনিফর্ম নেই কেন? অস্ত্রধারীরা কি পুলিশের পাশে অবস্থান করতে পারে? কারণ বাংলাদেশে অতীতে বিভিন্ন সংঘর্ষের সময় দেখা গেছে, ইউনিফর্ম পরিধান করা পুলিশের পাশে অস্ত্রধারীদের অবস্থান করতে। পত্র-পত্রিকায় ফলাও করে সেসব ছবি ছাপাও হয়েছে। শুক্রবার পোস্তগোলা এলাকায় সংঘর্ষের সময় সে সময় আলোড়িত ওই ছবিটি তোলেন দৈনিক বাংলাদেশ জার্নাল নামে একটি পত্রিকা এবং অনলাইনের ফটোগ্রাফার শাহনেওয়াজ সুমন। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে সুমন একাধিক গণমাধ্যমকে বলেন, “হঠাৎ দেখা গেল যে লুঙ্গি কাঁধে এক ব্যক্তি বেরিয়ে আসলো। তাকে আমরা ১৫-২০ মিনিটের মতো সেখানে দেখেছি।… প্রাচীরের পাশ দিয়ে সে হঠাৎ করে অস্ত্র হাতে বেরিয়ে আসে।”ইউনিফর্ম পরা কয়েকজন পুলিশ সদস্য জাঙ্গিয়া পরা সে ব্যক্তিকে বারবার পুলিশ ব্যারাকের দিকে নিয়ে যেতে চেয়েছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি। ফেসবুকে ছবিটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর পুলিশের দিক থেকে জানানো হয়, জাঙ্গিয়া পরা ব্যক্তিটি পুলিশের সদস্য। ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাহ মিজান শফিউর রহমান জানিয়েছেন, সে ব্যক্তির নাম এবাদত। তিনি কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ কনস্টেবল। ওই দিন শ্রমিকদের হামলায় আহত হয়ে বর্তমানে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানান ঢাকার পুলিশ সুপার। পুলিশ বলছে, শ্রমিকরা যখন পুলিশ সদস্য এবাদতের উপর আক্রমণ করে তখন তিনি নিজেকে রক্ষা করতে অন্য পুলিশ সদস্যদের কাছে ছুটে আসেন। শ্রমিকদের সাথে সংঘর্ষ শুরু হবার আগে কনস্টেবল এবাদত ঘটনাস্থলের পাশে একটি ক্যাম্পে বিশ্রামরত অবস্থায় ছিলেন। শ্রমিকরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে যখন পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তখন কনস্টেবল এবাদত ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে আসলে শ্রমিকরা তার উপর আক্রমণ করে। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে তিনি ইউনিফর্ম ছাড়াই চলে আসেন – এমন কথা বলছে পুলিশ।
Check Also
সাতক্ষীরায় পুত্রবধূর হাতে নির্যাতিত সেই স্কুলশিক্ষক মারা গেছেন
ক্রাইমবাতা রিপোট, সাতক্ষীরা: ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা …