ক্রাইমবার্তা রিপোট: :সাতক্ষীরা: জেলায় গায়েবী মামলার সংখ্যা বাড়ছে। বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে কর্মী সমর্থক পর্যন্ত এসব মামলায় আসামী করা হচ্ছে। এছাড়া যারা আগামী নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে পারে এমন জনশক্তিদেরকে গায়েবী মামলায় আসামী করা হচ্ছে। উচ্ছ আদালত থেকে জামিন নেয়ার সাথে সাথে আরও একটি গায়েবী মামলায় আসামী করা হচ্ছে। পুলিশ বলছে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে মামলা করা হচ্ছে। এক এক নেতার নামে ৫ থেকে শুরু কওে অর্ধশতাধীক মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতে এসব মামলায় একাধী পার্ট হয়ে কোন নেতার বিরুদ্ধে শতাধীক মামলা দাড়িয়েছে। ফলে মাসের বেশির ভাগ সময়ে আদালতের বারন্দায় হাজিরা দিতে হচ্ছে তাদের। দূর থেকে যারা জেলা শহরে আসতে সময় সাপেক্ষ তারা জেলা শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে কোটে হাজিরা দিচ্ছে। একই সময়ে কয়েকটা কোটেও হাজিরা দিতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। এর উপর নতুন মামলায় উচ্ছ আদালতে জামিন নিতে যাওয়া কত দুরুহ ব্যাপার তা ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ ভাবতে পারবে না। এমন অবস্থায় মাঠে সক্রিয় হয়ে কাজ করা বিএনপি জামায়াতের জন্য মটেই সহজ হবে না। ভুক্ত ভোগীদের দাবী হামলা মামলা,ও পুলিশি হয়রানি বন্ধ করলে সাধারণ জনগণ আবার মাঠে ফিরে আসবে তাদের ন্যার্য দাবীর জন্য।
জেলাতে যাতে কোন রাজনৈতিক কর্মসুচি বিরোধীরা করতে না পাওে তার জন্য একের পর এক গায়েবী মামলা দিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। সাতক্ষীরায় বিএনপি নেতা ইফতেখার, শহীদুল ইসলাম সহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে ১১০ জনের নামে মামলা
সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ব্রহ্মরাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলামসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১১০ জনের নামে নাশকতা প্রস্তুতির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ৩১ অক্টোবর সাতক্ষীরা সদর থানার এ এস আই শিল্লুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলার বিবরণে জানা যায়, ৩০ অক্টোবর বিএনপির চেয়ার পার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রায়ের বিরুদ্ধে এবং ২০১৯ সালের নিবাচন বানচালের উদ্দেশ্যে শতাধিক জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীরা ধুলিহরের ফয়জুল্লাপুর এলাকার একটি আম বাগানে নাশকতার লক্ষ্যে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছে। এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ এস আই শিল্লুর রহমানসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে শ্যাল্যে এলাকার মৃত শমসের আলীর ছেলে জামায়াত নেতা আব্দুল ওয়ারেশ, জেয়ালা এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে ইয়াছিন আলিয়া মাদ্রাসা পূর্ব পাড়া এলাকার মৃত মোহর আলীর ছেলে আবুল হোসেন, পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার বজলুর গাজীর ছেলে আক্তারুজ্জামান, রঘুনাথপুর এলাকার মৃত আরশাদ আলীর ছেলে বাবলু, কোমরপুর এলাকার আবুল কাশেম সরদারের ছেলে রবিউল ইসলাম ও ধুলিহর তালতলা এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে রুবেল হাসানকে আটক করে পুলিশ। এসময় ঘটনাস্থল থেকে ১৭পিচ জালের কাঠি, টিনের জর্দ্দার কৌটা ভাঙ্গা কাচের টুকরা ১৫টি, ১৮টি বাইসাইকেল, পেরেক ৯টি, লাল কসটেপের অংশ বিশেষ ১১টি ও ৩টি অবিস্ফোরিত ককটেল বোমা উদ্ধার করেন। এঘটনায় এ এস আই শিল্লুর রহমান ওইদিনই বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং বাকীদের অজ্ঞাতনামা করে ১১০ জনের নামে ১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ারস এ্যাক্ট এর ১৫(৩)/২৫-ঘ তৎসহ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানবালী আইনের ৩/৫/৬ নাশকতা মূলক কর্মকান্ড সম্পাদনের লক্ষ্যে সংঘবদ্ধ হয়ে অপরাধের ষড়যন্ত্র, ষড়যন্ত্রের প্রস্তুতি, ককটেল বোমা হেফাজতে রাখা ও বিস্ফোরন ঘটানোর অপরাধে মামলা দায়ের করেন। অন্যান্য আসামীরা হলেন, পলাশপোল এলাকার মৃত নুর আহম্মদ খানের ছেলে ডঃ রবিউল ইসলাম খান, মাগুরা তালতলা এলাকার হাজী মোশলেম উদ্দীনের ছেলে সোহেল আহম্মেদ মানিক, নেবাখালী এলাকার মৃত আলী আকবরের ছেলে আব্দুল মজিদ, খেজুরডাঙ্গা মৃত আবুল কাশেমের ছেলে আব্দুল আলীম, দক্ষিণ পলাশপোল এলাকার মৃত শেখ অহেদার রহমানের ছেলে শেখ তারিকুল হাসান, দক্ষিণ কামালনগর এলাকার মৃত রহিল উদ্দীন মুহুরীর ছেলে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ইফতেখার আলী, পলাশপোল সবুজবাগ এলাকার মৃত ইব্রাহিম মোড়লের ছেলে আবুল হোসেন, ব্রহ্মরাজপুর এলাকার মৃত মোহাম্মদ সরদারের ছেলে ও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম, কালেরডাঙ্গা এলাকার মৃত জয়নুদ্দীন গাজীর ছেলে আকবর হোসেন, দক্ষিণ কাটিয়া এলাকার মৃত মোশাররফ হোসেনের ছেলে শফিউল্লাহ মনি, পলাশপোল এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে শহিদ হাসান, আলীপুর এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে আব্দুর রউফ, কাশেমপুর এলাকার মৃত রহমান সানার ছেলে জিয়ারুল ইসলাম, কাটিয়া এলাকার মৃত মোশারফ হোসেনের ছেলে মাসুম বিল্লাহ শাহীন, চুপড়িয়া এলাকার মৃত শমসের আলীর ছেলে লুৎফর রহমান, বাগডাঙ্গা এলাকার মৃত মোবারক আলীর ছেলে মাওঃ সবুর, জাহানাবাজ এলাকার মৃত জেহের আলীর ছেলে মনিরুল ইসলাম বেলালী, দক্ষিণ পলাশপোল এলাকার শাহ মোঃ কামরুজ্জামান কামু, খুলনার কয়রা এলাকার মৃত মোহর আলীর ছেলে আকবর আলী, বকচরা পশ্চিমপাড়া এলাকার মৃত নেছার উদ্দীনের ছেলে মোসলেম আলী, আছাল উদ্দিনের ছেলে শামসুজ্জামান মামুন, সুলতানপুর এলাকার মৃত কামাল উদ্দিন সরদারের ছেলে শফিউর রহমান মনা, পুরাতন সাতক্ষীরা কুলিনপাড়া এলাকার আবুল মাস্টারের ছেলে ইব্রাহিম, ঘোনা এলাকার মৃত আবর সরদারের ছেলে সাইফুজ্জামান মিঠু,নুর উদ্দীনের ছেলে আব্দুল আলিম,বৈকারী এলাকার মৃত গোলাম হোসেনের ছেলে সহিদ হাসান, ভাড়–খালী এলাকার কামাল উদ্দীনের ছেলে আলমগীর হোসেন মারুফ, পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার প্রফেসর হাসান আলীর ছেলে হাফিজুর রহমান, ঘোনা এলাকার খোদা বক্সের ছেলে কামরুল, মৃত আফসার আলীর বেমের ছেলে বাবলু, কুশখালী এলাকার মৃত ওয়াজেদ আলী দালালের ছেলে নজরুল ইসলাম, মধ্যকুশখালী এলাকার রজব আলী সরদারের ছেলে বদিউজ্জামান, হেরমত আলী ঢালীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক, নওশের আলীর ছেলে আব্দুর রশিদ ডাক্তার, মুনছুর আলীর ছেলে মহিউদ্দীন গাজী, আনারুল দফাদারের ছেলে পলাশ, আড়–য়াখালী এলাকার মৃত জাহাবক্সের ছেলে মোঃ জিয়ারুল ইসলাম, মৃত মোক্তার ছেলে সিদ্দিক হোসেন, মৃত জালাল গাজীর ছেলে রেজওয়ান হোসেন মিলন, মৃগীডাঙ্গা এলাকার মৃত লুৎফর সরদারের ছেলে মোঃ হাসান, শ্যামনগর থানার পাখিমারা গ্রামের নাসির উদ্দীন আহমেদের ছেলে ফজলুল হক, আশাশুনি থানার বুধহাটা গ্রামের মৃত খোরশেদ সরদারের ছেলে শহীদুল ইসলাম।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় জেলা ব্যাপী পুলিশের বিশেষ অভিযানে জামায়াত-শিবিরের ২৮ নেতা-কর্মীসহ ৮১ জনকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পযর্ন্ত জেলার আটটি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
উদ্ধার করা হয়েছে একটি ওয়ান শুটার গান, ৪ টি হাতবেমা বলে পুলিশের দাবী। তাদের বিরুদ্ধে ৩ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আটককৃতদের মধ্যে, সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ২০ জন, কলারোয়া থানা থেকে ১৭ জন, তালা থানা থেকে ৮ জন, কালিগঞ্জ থানা থেকে ৫ জন, শ্যামনগর থানা থেকে ১১ জন, আশাশুনি থানা থেকে ১৩ জন, দেবহাটা থানা থেকে ২ জন ও পাটকেলঘাটা থানা থেকে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান তাদের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত জানান, আটকদের বিরুদ্ধে নাশকতা ও মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।-
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …