ক্রাইমবার্তা রিপোর্টঃ
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আগামী ৬ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবে দলটি।
শুক্রবার (০২ নভেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সরকারি জোটের সংলাপে সরকারের একগুয়েমি মনোভাব গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বড় ধরনের অশনিসংকেত। সংলাপে মানুষের মনে যে আশাবাদ জেগে উঠেছিল, সংলাপ শেষে সেই আশার মুকুল ঝরে যেতে শুরু করেছে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, সংলাপ শেষে ৭ দফা দাবির প্রতি সাড়া না দেয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচনের অগ্রগতি তিমিরাচ্ছন্ন হলো। আওয়ামী লীগ সহিষ্ণুতার শিক্ষা কখনোই গ্রহণ করেনি। ক্ষমতা-স্বার্থের লীলাধিপত্য বজায় রাখতে তারা জনগণকেই ভয় পাচ্ছে। জনগণের মুণ্ডুপাতই হচ্ছে তাদের গ্রহণযোগ্য নীতি।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।
আরো দেখুন : সংলাপে যা বলেছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা
০২ নভেম্বর ২০১৮
গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সংলাপে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আলোচনা হলেও এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলেননি বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফখরুল বলেন, সংলাপে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্টভাবে কোন কিছুই বলেননি। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, এ বিষয় নিয়ে ভবিষ্যতে আলাপ-আলোচনা হতে পারে।
সংলাপ শেষে ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সংলাপ পরবর্তী প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি আগেই বলেছি সংলাপে সন্তুষ্টি হইনি।
তিনি আরো বলেন, আমরা নির্বাচনের তফসিল পেছানোর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি। তিনি বলেছেন, এটা নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হওয়া এ সংলাপ রাত পৌনে ১১টা পর্যন্ত চলে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের ২৩ নেতার সঙ্গে সংলাপে অংশ নেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ২১ নেতা। সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব দেন ড. কামাল হোসেন।
সংলাপ শেষে রাত ১০টা ৫০ মিনিটে গণভবন থেকে সংলাপ বের হয়ে আসেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। এরপর ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তারা।
এসময় ড. কামাল বলেন, সংলাপে আমরা আমাদের দাবি তুলে ধরেছি, অভিযোগের কথা, সেগুলো তুলে ধরেছি। সবার কথা শোনার পর প্রধানমন্ত্রী লম্বা বক্তৃতা দিলেন। সংলাপে বিশেষ কোনো সমাধান আমরা পাইনি।
সংবাদ সম্মেলনে আলোচনার বিষয়ে একটি লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন গণফোরামের এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। তিনি বলেন, সাংবাদিক বন্ধুগণ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আজকের যে আলোচনা, আমরা মনে করি এটা দীর্ঘ সময় ধরে হয়েছে। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা। শুরুতে ড. কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা তিনি সূচনা বক্তব্য রেখেছেন। এরপরেই আমাদের জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যান্য নেতারাও বক্তব্য রেখেছেন।
সুব্রত চৌধুরী আরো জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঢাকা শহরসহ সারাদেশে সভা সমাবেশ ও রাজনৈতিক কর্মসূচির উপর কোন বাঁধা থাকবে না। রাজনৈতিক দলগুলো যেখানে সভা-সমাবেশ করতে চাইবে, তাদের কোন বাঁধা দেবেন না। এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য ইতোমধ্যে নির্দেশ দিয়েছেন।
উত্থাপিত দাবি নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
ঐক্যফ্রন্টের আরেক শীর্ষ নেতা আ স ম আব্দুর রব বলেন, আমরা সাত দফা দিয়েছি, মানা না মানা দায়িত্ব হলো সরকারের। আমাদের কর্মসূচি আমরা দিয়েছি, সেটা অব্যাহত থাকবে।