ক্রাইমবার্তা রিপোট : সাতক্ষীরা: পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতিসহ চারজনকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সস্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমা-ার আমির হোসেন জোয়ার্দ্দার বলেন, গত শুক্রবার রাত সাতটার দিকে খাজরা ইউনিয়ন থেকে কিছু নেতা কর্মী শ্রীউলায় তার ছেলের কাছে আসেন। তাদেরকে ডাঃ আ.ফ.ম রুহুল হক এর নির্বাচনী অফিসে বসিয়ে দীপঙ্কর ম-ল ও নজরুল ইসলামকে একটি ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেলে নাকতাড়া কালিবাড়ি বাজারে পাঠায় তার ছেলে শামীমুজ্জামান পলাশ। সেখানে যাওয়ার পর উপাজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিলের ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ রায়হান সাদ কথা বলার একপর্যায়ে দীপঙ্করের মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেয়। বিষয়টি জানতে পেরে কালিবাড়ি বাজারে যায় পলাশ ও শ্রীউলা ইউনিয়ন কৃষক লীগের সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় আবু হেনা শাকিলের নেতৃত্বে তার ছেলে সৌরভ রায়হার সাদ, বুড়োখারাটির এলাহী বক্স, একই গ্রামের খোকা, রকিবুল, নাকতাড়ার শরিফুল, শহীদুল¬াহ, বকচরার আব্দুল¬াহ, দ্বীন ইসলাম, কাকড়াবুনিয়ার রেজাউল ইসলাম, গ্রাম পুলিশ নুরুজ্জামান, ইউপি সদস্য তাহমিনা, ইউপি চেয়ারম্যানের গাড়ির চালক আব্দুল¬াহ, চেয়ারম্যানের স্ত্রী শাজাহান নাজনিন ঝর্ণাসহ ২৫/৩০জন লোহার রড়, হাতুড়ি ও কুড়াল নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তারা শ্যামল বিশ্বাসের দোকানে ঢুকে আত্মরক্ষার চেষ্টা চালালে সেখোনে তাদেরকে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আটক রাখা হয়। খবরে পেয়ে পলাশের মা সাঈদা খানম ঘটস্থলে গেলে তাকেও মারপিট করা হয়। আবু হেনা শাকিকের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ এসে পলাশ, জাহাঙ্গীর ও দীপঙ্করকে আটক করে গাড়িতে তোলার সময় ঘটনার সত্যতা জানতে পেরে তাদেরকে একটি এম্বুলেন্সে করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিগত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী দীপঙ্কর বাছাড়ের পক্ষে কাজ করে তার ছেলে পলাশ। তার দোকন ঘরটি দীপঙ্কর বাছাড়ের নির্বাচনী অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু হেনা শাকিল কালিবাড়ি এলাকায় একটি পথসভায় পকিল্পিত বোমা হ্মালা করে দীপঙ্কর বাছাড়ের পক্ষের কর্মী পলাশসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। একইভাবে আগামি একাদশতম সংসদীয় নির্বাচনকে ঘিরে তার ছেলে পলাশও তান সহযোগিরা সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রি ডাঃ আ.ফ.ম রুহুল হকের পক্ষে কাজ করার জন্য তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি নির্বাচনী অফিস হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এ নিয়ে হুমকি দেওয়ায় রেজাউলের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরী করে পলাশ। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আবু হেনা শাকিলও তার লোকজন পরিকল্পিতভাবে শুক্রবার তার ছেলে জেলা মুক্তিজোদ্ধা সন্তান কমা- এর সদস্য পলাশসহ চারজনের উপর সশস্ত্র হামলা চালায়। বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য আবু হেনা শাকিল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ সস্মেলনের মাধ্যমে হামলায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য পুলিশ সুপারসহ উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমা-ার আবু বক্কর ছিদ্দিক, মুক্তিযোদ্ধা বিএম আব্দুর রাজ্জাক, মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, নেছার আলী, আলতাফ হোসেন, দীপঙ্কর ম-ল ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রশীদ।
জানতে চাইলে আবু হেনা শাকিল বলেন, পলাশ স্কুল শিক্ষক হলেও তার বিরুদ্ধে চাদাবাজি ও মারপিটের মামলা রয়েছে। সরকারি খাস জমি দখলে রাখার জন্য চাদা দাবি করায় আব্দুল হাকিম নামের একজন জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করে। এক মাস আগে ঘটনাস্থলে তদন্তে তিনি সাক্ষ্য দেওয়ায় শুক্রবার রাত সাতটার দিকে পলাশ ও তার লোকজন কয়েকটি মোটর সাইকেলে এসে ইউনিয়ন পরিষদে অবস্থানকরাকালিন তার উপর হামলা চালায়। এতে তার পাশে থাকা এলাহী বক্স আহত হয়।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ¬ব কুমার নাথ জানান, আহত পলাশ, জাহাঙ্গীর ও দীপঙ্করকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় শনিবার বিকেল সোয়া চারটা পর্যন্ত থানায় কোন লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।
Check Also
আশাশুনি উপজেলা জামায়াতের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আশাশুনি উপজেলা শাখার ২০২৫-২০২৬ সেশনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন ও …