আনন্দবাজার, এনডিটিভি : অসমে পাঁচ বাঙালিকে হত্যার ঘটনার পর ব্যাপক তল্লাশি অভিযান শুরু করল সেনাবাহিনী।
অসম-অরুণাচল সীমানা বরাবর ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জঙ্গি বিরোধী অভিযান। মায়ানমার সীমান্তে কড়া নজরদারি চালাচ্ছেন অসম রাইফেলসের সেনারা। তদন্তে নেমে আলফার দুই আলোচনাপন্থী নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।
অন্য দিকে অসমের বাঙালি সংগঠনগুলির ডাকে তিনসুকিয়ায় চলছে ১২ ঘণ্টার বন্ধ। পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
আসামের তিনসুকিয়া জেলায় গত বৃহস্পতিবার পাঁচ বাঙালিকে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফা) গুলি করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
হামলাকারী দলটি পরেশ বড়ুয়ার নেতৃত্বাধীন উলফার স্বাধীনতাকামী অংশের সদস্য বলে খবরে বলা হয়েছে। তবে তারা হামলার সাথে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে। সন্ত্রাসীরা খেরবাড়ি বিসোনিবাড়ি এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে পাঁচজনকে তুলে নিয়ে যায় এবং তাদের সবাইকে লোহিত নদীর তীরে হত্যা করে।
নিহতরা হলেন- শ্যামলাল বিশ্বাস, অনন্ত বিশ্বাস, অবিনাশ বিশ্বাস, সুবল বিশ্বাস এবং ধনঞ্জয় নমসুদ্র। পুলিশ বলছে, তারা সবাই বাঙালি।
সন্ত্রাসীরা খেরবাড়ি বিসোনিবাড়ি এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে পাঁচজনকে তুলে নিয়ে যায় এবং তাদের সবাইকে লোহিত নদীর তীরে হত্যা করে।
খবর শুনে আসামের পুলিশ প্রধান কুলাধার সাইকিয়া এবং শীর্ষ কর্মকর্তারা রাজধানী গৌহাটি থেকে ৫০০ কিমি দূরে ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
এদিকে আসাম-অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে সেনাবাহিনী। আসাম রাইফেলস ইন্দো-মিয়ানমার সীমান্তে নজর রাখছে।
হত্যার প্রতিবাদে কয়েকটি বাঙালি সংগঠন জেলায় ১২ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে। পশ্চিমবঙ্গ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে মিছিল করবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং টুইট বার্তায় হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। আসামের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালকে এই জঘন্য অপরাধের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।
ঘটনার পরপরই আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল রাজ্য মন্ত্রী কেশভ মহান্তা ও তপন কুমার গোগোয়কে ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে বলেন। আসাম পুলিশের ডিজি কুলা সাইকিয়া এবং অতিরিক্ত ডিজি মুকেশ আগারওয়ালকেও ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফা প্রায়ই অন্যদেশ থেকে আসা অভিবাসীদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। গত ১৩ অক্টোবর গৌহাটি সুক্লেশ্বর ঘাট এলাকায় এক বিস্ফোরণে চারজন আহত হন। ঘটনার দায় স্বীকার করে উলফা-আই।