তফসিল পেছানোর কোনো উপায় নেই : সিইসি নুরুল হুদা

ক্রাইমবার্তা রিপোট:

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবি মেনে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল পেছানোর কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে. এম. নুরুল হুদা।

‘গতকাল ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে তফসিল পেছানোর যে দাবি করা হয়েছে, সেটি নিয়ে ইসি কী ভাবছে আর তফসিল পেছানো হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে ইসিকে বিরম্বনায় পড়তে হবে কি-না’—আজ মঙ্গলবার সকালে এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘না, তফসিল পেছানোর কোনো উপায় নেই। আমরা পেছাব না।’

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ইটিআই ভবনে এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এ কথা বলেন।

কে এম নূরুল হুদা বলেন, সব রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে এবং সংবিধানের আলোকে নির্বাচন করতে হবে। সেক্ষেত্রে জানুয়ারি মাসে বিভিন্ন প্রোগ্রাম রয়েছে।
‘বিশ্ব ইজতেমা রয়েছে জানুয়ারি মাসে– ১৫ থেকে ২৬ তারিখ দুই দফায় ইজতেমা হবে। তখন সেখানে সারা দেশ থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজনকে নিয়োগ করতে হয়। তাই এর মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব হবে না।’

সংসদ নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক্স ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, এবার স্বল্প পরিসরে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবি অনুযায়ি তফসিল ঘোষণার তারিখ পেছানো না হলে ঐক্যফ্রন্ট কী প্রতিক্রিয়া দেখায় তা দেখার বিষয়। ইসির সবচেয়ে বড় স্টোকহোল্ডার রাজনৈতিক দল হলেও বর্তমান ইসি তাদেরকে আস্থায় নিতে পারছেন না।

 

আরো পড়ুন : নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সিদ্ধান্ত ৪ নভেম্বর

নির্বাচনে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পর্কে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতিকে অবহিতকরণ শেষে বেরিয়ে আসার পথে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি জানান, আগামী ৪ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।  তফসিল ঘোষণা নিয়ে কোনো কিছু জানতে চাননি রাষ্ট্রপতি। এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে রাষ্ট্রপতি সন্তুষ্ট হয়েছেন। নির্বাচন কবে হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আগামী ৪ তারিখের আগে কিছুই বলতে পারব না। সংবিধানে যেভাবে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে সেভাবেই নির্বাচন হবে।

নির্বাচনের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ডিসেম্বরেই নির্বাচন হবে কিনা তা এখন বলা যাচ্ছে না। আমরা ৪ তারিখে বসব তারপর জানাতে পারব।

সিইসি বলেন, আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচনের বিভিন্ন প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করেছি। এর বাইরে কোনও আলোচনা হয়নি।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওপর দেশের সব রাজনৈতিক দল আস্থা রাখতে পারবে কিনা সে বিষয়টি জানা নেই বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।

এর আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের সাথে দেখা করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে বঙ্গভবনে পৌঁছেন নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা ৩৫ মিনিটে সিইসির কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বে অপর চার নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এবং ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন।

এর আগে ইসি সচিব বলেন, ‘এই সাক্ষাতে রাষ্ট্রপতিকে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করা হবে।’ জানতে চাইলে একজন নির্বাচন কমিশনার  বলেন, ‘এটা একটা ফরমালিটিজ। তফসিল ঘোষণার আগে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ।’

এই সাক্ষাতের জন্য বিকাল ৪টায় সময় নির্ধারিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হওয়ার পর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি চলছে নির্বাচন কমিশনে। এর আগে রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাতের এ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।

ডিসেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা ধরে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে বৃহস্পতিবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয় ইসি সচিবালয়। রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাতের পর শনিবার বসবে কমিশন সভা। ওই সভায় তফসিল চূড়ান্ত করা হবে। পরে তা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ঘোষণা করবেন সিইসি নূরুল হুদা।

 

আরো পড়ুন : এক সপ্তাহের মধ্যে সংসদ নির্বাচনের তফসিল : ইসি সচিব

 

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।

আজ বুধবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি তুলে ধরে বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার শুরুতে তিনি এ তথ্য জানান।

ইসি সচিবের সভাপতিত্বে আজ বেলা ১১টায় শুরু হওয়া এই বৈঠকে ২৩টি মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের প্রতিনিধিসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন।

নির্বাচনের প্রস্তুতির ৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করে সচিব বলেন, এই নির্বাচনের গুরুত্ব অনেক বেশি। নির্বাচনী মালামাল জেলায় জেলায় পৌঁছানো ও ব্যালট পেপার ছাপানো ছাড়া প্রায় সব কাজ শেষ হয়েছে। তাছাড়া ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনাও আমাদের আছে। তফসিল ঘোষণার পর সকল নির্বাহী বিভাগ নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করতে বাধ্য।

চলতি বছরের ৩০ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
২৫ অক্টোবর কমিশনের ৩৭তম সভা শেষে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর আমাদের আরেকটি কমিশন সভা হবে। ওই সভাতেই তফসিলের বিষয়ে আলোচনা হবে।

আজকের সভার আলোচ্য সূচির মধ্যে রয়েছে- ভোট কেন্দ্রের স্থাপনা মেরামত ও ভৌত অবকাঠামো সংস্কার, পার্বত্য দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টারে নির্বাচনী মালামাল পরিবহন এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের আনা-নেয়ার পদক্ষেপ, নির্বাচনী প্রচার, পর্যবেক্ষক নিয়োগ, পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানে সহায়তা, নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে পরিকল্পনা, ঋণখেলাপি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ, নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালনে নির্বাহী হাকিম নিয়োগ, বার্ষিক ও পাবলিক পরীক্ষার সময়সূচি পর্যালোচনা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, আগাম প্রচারণা সামগ্রী অপসারণ ও বিবিধ।

ভোট কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার, পার্বত্য-দুর্গম এলাকায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের আনা-নেয়া ও মালামাল পরিবহন, নির্বাচনী প্রচার পরীক্ষার সময়সূচি পর্যালোচনা, ঋণখেলাপির তথ্য, আগাম প্রচার সামগ্রী অপসারণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সার্বিক বিষয় তুলে ধরা হবে বলেও জানা গেছে।

 

Check Also

সাতক্ষীরায় পুত্রবধূর হাতে নির্যাতিত সেই স্কুলশিক্ষক মারা গেছেন

ক্রাইমবাতা রিপোট, সাতক্ষীরা:   ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।